জন্মদিনে স্মরণঃ প ণ্ডি ত বু দ্ধ দে ব দা শ গু প্ত
বাবলু ভট্টাচার্য : বুদ্ধদেবের বাবা প্রফুল্লমোহন দাশগুপ্ত সেই সময়ের আইসিএস অফিসার ছিলেন। কর্মসূত্রে তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হত। এই সময়েই বাংলাদেশের রাজশাহীতে প্রফুল্লমোহনের সঙ্গে আলাপ হয় সরোদ শিল্পী রাধিকামোহন মৈত্রের। মাত্র ১১ বছর বয়সেই তাঁর কাছে সরোদে তালিম শুরু বুদ্ধদেবের।
পরবর্তীকালে কলকাতায় গিয়ে বুদ্ধদেব ভর্তি হন মিত্র ইনস্টিটিউশনে নবম শ্রেণিতে। ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সিতে। সেখান থেকে আইএসসি পাশ করে ভর্তি হন শিবপুরের বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।
পরবর্তী জীবনে বুদ্ধদেব যোগ দেন কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনের উচ্চপদে। ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত সেখানেই চাকরি করেন তিনি।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত সঙ্গীতে অতিথি শিল্পী হিসেবে প্রথম অল ইন্ডিয়া রেডিও-র অনুষ্ঠান করেন। জাতীয় কার্যক্রম ছাড়াও প্রায় ২০টি রেডিও সঙ্গীত সম্মেলনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
দেশে–বিদেশে বহু সঙ্গীত সম্মেলনে তাঁর বাজনা সমাদৃত হয়েছে। বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে তৈরি তাঁর বন্দিশগুলির কথা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি কাজ করেছেন একজন সঙ্গীত সংগঠক হিসেবেও। তাঁর বাল্যবন্ধু প্রসূনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৈরি করেছেন অরিত্র সঙ্গীত সংস্থা ও ঝঙ্কার মিউজিক সার্কেল। গুরু রাধিকামোহন মৈত্রের স্মরণে স্থাপন করেছিলেন মৈত্রয়ী মিউজিক সার্কল। শিক্ষক হিসেবেও বুদ্ধদেব ছিলেন অতুলনীয়।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত পদ্মভূষণ সম্মান লাভ করেন ২০১২ সালে। ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার তাঁকে সঙ্গীত মহাসম্মান ও বঙ্গবিভূষণে সম্মানিত করে। এছাড়াও সঙ্গীত নাটক আকাদেমি সম্মান, শিরোমণি পুরস্কার, আইটিসি সঙ্গীত সম্মান, প্রাচীন কলাকেন্দ্র সম্মান পেয়েছেন তিনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সাম্মানিক ডক্টরেট প্রদান করে।
দুই খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর আত্মজীবনী ‘বামনের চন্দ্রস্পর্শ অভিলাষ’ সমাদৃত হয়।
২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি পণ্ডিতজী ৮৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
পণ্ডিত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ১৯৩৩ সালের আজকের দিনে (১ ফেব্রুয়ারি) বিহারের ভাগলপুরে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment