জন্মদিনে স্মরণঃ কি শো রী আ মো ন ক র
“আমার ছাদে, খোলা চুলে
উদাস কিশোরী আমোনকর
চাতক গৌড় মল্লার উড়ে উড়ে ফেরে
দিগন্ত বলে
সবুর কর, সবুর কর।।”
বাবলু ভট্টাচার্য : এক বালিকা গান গেয়ে বিচারকের আসনে বসে থাকা লতা মঙ্গেশকরকে প্রণাম করে জানায়, তিনি যেন তাকে এই মর্মে আশীর্বাদ করেন যে সে যেন তাঁর মতো গায়িকা হতে পারে। লতা তাঁর স্বভাব-বিনয় বজায় রেখেই জানান, তাঁর মতো নয়, সে যেন কিশোরী আমোনকরের মতো শিল্পী হয়।
কার্যত, বিদুষী কিশোরী আমোনকর ছিলেন ‘দ্য গ্র্যান্ড লেডি অফ ইন্ডিয়ান মিউজিক’। অথচ কোনও দিনই সেভাবে মিডিয়া-র আলোকে নিজেকে আলেকিত করতে চাননি অসামান্য সুন্দরী এই শিল্পী।
শৈশবেই বাবাকে হারান। মা মোঙ্গুবাঈ কুর্দিকর ছিলেন জয়পুর-আত্রাউলি ঘরানার প্রথিতযশা শিল্পী। মা-র কাছেই তালিম শুরু। পরে জয়পুর ঘরানার অন্যতম সেরা শিল্পী হয়ে ওঠেন। শিক্ষাগুরু হিসেবে পেয়েছেন অঞ্জনীবাঈ মালপেকর, আনওয়ার হুসেন খান প্রমুখকে।
খুব অল্প বয়সেই নিজের স্বাতন্ত্র্যকে চিনিয়ে দিতে সমর্থ হন কিশোরী। খেয়াল ছাড়াও ঠুমরি ও ভজনেও অনায়াস দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। কোনও চমক নয়, তাঁর গান ছিল এক ধীর ও উদাত্ত সংক্রমণ। রসিকজন সেই সংক্রমণে একবার প্রবেশ করলে বেরতে পারেন না। এমনই ছিল তাঁর সম্পর্কে শ্রোতাদের মন্তব্য।
নিজেকে নির্জনে রেখেই সাধনা করে গিয়েছেন। তবে জনপ্রিয় সঙ্গীতের জগৎ থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়েও থাকেননি। ১৯৬৪ সালের ছবি ‘গীত গায়া পাত্থরোঁ নে’-তে প্রথম প্লেব্যাক করেন তিনি। ১৯৯০-র ছবি ‘দৃষ্টি’-তেও শোনা গিয়েছে তাঁর গান।
সারা জীবন ধরে অসংখ্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন কিশোরী আমোনকর। ১৯৮৭-তে পদ্মভূষণ এবং ২০০২-এ পদ্ম বিভূষণ পেয়েছেন ভারত সরকারের তরফে।
২০১০ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমি তাঁকে ফেলোশিপ দিয়ে সম্মানিত করে।
৩ এপ্রিল ২০১৭ সালে কিশোরী আমোনকর ৮৫ বছর বয়সে প্রয়াত হন।
কিশোরী আমোনকর ১৯৩২ সালের আজকের দিনে (১১ এপ্রিল) মুম্বাই-এ জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment