Press "Enter" to skip to content

“বিকাশ রায় বরাবরই খুব মেথোডিক্যাল। একবারের বেশি দুবার তাঁকে কোনো কথা বলতে হত না। ফিল্ম-সেন্সটা ছিল প্রখর।” – তপন সিংহ……।.

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ বি কা শ রা য়

“বিকাশ রায় বরাবরই খুব মেথোডিক্যাল। একবারের বেশি দুবার তাঁকে কোনো কথা বলতে হত না। ফিল্ম-সেন্সটা ছিল প্রখর।”

[ তপন সিংহ ]

বাবলু ভট্টাচার্য : তিনি লম্বা। ছিপছিপে। ঋজু কাঠামো। ভাঙা মুখ, শক্ত চোয়াল। চওড়া কপাল, তীক্ষ্ণ নাক। আর গভীর অন্তর্ভেদী দৃষ্টি- যা ছিল অপ্রতিরোধ্য। সেই সঙ্গে এক আশ্চর্য দুর্লভ কণ্ঠস্বরের জাদুময়তা। ম্যাটিনি আইডল ছিলেন না মোটেই বরং তাঁর মতো চরিত্রাভিনেতার পাশে বহু ম্যাটিনি আইডল ম্লান হয়ে গেছে।

তিনি অভিনেতা বিকাশ রায়।

তাঁর বাচনভঙ্গি, কন্ঠস্বর এবং অনবদ্য স্টাইলের জন্য তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে একটি বিশেষ স্থান করে নেন। তাঁর অভিনয় জীবন দীর্ঘ ৩৮ বছরের। এর মধ্যে তিনি মঞ্চেও অভিনয় করেছেন। পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছেন অনেকগুলি বিখ্যাত বাংলা সিনেমা।

কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন ১৯৩৬ সালে। সিনেমা- থিয়েটারের চাইতে ঝোঁক ছিল বেশি সাহিত্যে। প্রেসিডেন্সি কলেজ এ পড়ার সময় কলেজ ম্যাগাজিনে নিয়মিত লিখতেন। ‘বেদুইন’ নামে একটা সাহিত্য পত্রিকাও প্রকাশ করেছিলেন।

বি.এল (আইন) পাশ করেন ১৯৪১ সালে, কিন্তু স্থায়ীভাবে ওকালতি পেশা গ্রহণ করেননি। কর্মজীবন শুরু হয় এক ব্যারিস্টারী ফার্মের জুনিয়র হিসাবে। আইন ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে চাকরি নিলেন সরকারি সিভিল ডিফেন্স বিভাগে, হেড ক্লার্কের। সেখানেও থাকলেন না।

অনেক কম বেতনে, আশি টাকার মাস মাইনেতে চাকুরি নিলেন রেডিওর ঘোষকের। রেডিওর অনিশ্চিত চাকুরি ছেড়ে এক বাল্যবন্ধুর সহায়তায় যোগ দিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞাপন সংস্থায়।

তিনি ছিলেন জাত শিল্পী। অনস্বীকার্য। বহুমাত্রিক বিকাশ রায় অভিনয়ের সঙ্গে সঙ্গে ছবি প্রযোজনা, পরিচালনা, কাহিনি-রচনা ও চিত্রনাট্য রচনাও করেছেন। বিকাশ রায় প্রোডাকশন-এর ছবিগুলি বিভিন্ন আঙ্গিকের। ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ও ‘সূর্যমুখী’ পারিবারিক ছবি। ‘বসন্ত বাহার’ সংগীতবহুল।

বিকাশ রায় অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলিঃ ‘৪২’, ‘রত্নদীপ’, ‘জিঘাংসা’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘কীর্তিগড়’, ‘না’, ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’, ‘সব্যসাচী’, ‘বনহংসী’, ‘রাত্রির তপস্যা’, ‘আরোগ্য নিকেতন’, ‘গলি থেকে রাজপথ’, ‘জতুগৃহ’, ‘জীবন কাহিনী’, ‘শ্রীকান্তের উইল’, ‘অনুপমা’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’, ‘কাঁচ কাটা হীরে’, ‘আরোগ্য নিকেতন’, ‘অদ্বিতীয়া’, ‘শেষ অংক’ ও ‘কলঙ্কিত নায়ক’ অন্যতম।

অভিনয় ছাড়াও ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’সহ তিনি বেশ কয়েকটি সিনেমা পরিচালনা করেন। ‘নতুন প্রভাত’ ও উত্তমকুমার অভিনীত ‘রাজা-সাজা’ ছবির কাহিনি রচনা করেন বিকাশ রায়। এমনকি ‘কাজললতা’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘দুই পুরুষ’–এর চিত্রনাট্য তাঁর।

তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘মনে পড়ে’, ‘কিছু ছবি কিছু গল্প’, ‘প্রসঙ্গ অভিনয়’, ‘আমি’।

১৯৮৭ সালের ১৬ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বিকাশ রায় ১৯১৬ সালের আজকের দিনে (১৬ মে) কলকাতার ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

More from BooksMore posts in Books »
More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.