Press "Enter" to skip to content

বাম মনষ্ক শিল্পী সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের আলোচনাসভা…..।

Spread the love

শ্রীজিৎ চট্টরাজ : কলকাতা, ২৬, ফেব্রুয়ারি, ২০২১। নির্বাচন আসন্ন। আগামী পাঁচ বছর পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখলের বাম কংগ্রেসের জোট, তৃনমূল ও বিজেপির ত্রিমাত্রিক লড়াই হতে চলেছে। এই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেসক্লাবে বামপন্থী মনোভাবাপন্ন শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের কয়েকটি সংগঠন একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। উদ্যোক্তা ভারতীয় গণসংস্কৃতি সংঘ (কলকাতা জেলা), প্রগতি লেখক সংঘ (কলকাতা জেলা) ও ইনকাফ (পশ্চিম বঙ্গ)।

বক্তাদের মধ্যে ছিলেন _ নাট্যকার চন্দন সেন, সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য, নাট্য নির্দেশক অভিনেতা মেঘনাদ ভট্টাচার্য, চিন্তাবিদ ভানুদেব দত্ত, চলচ্চিত্র পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়, বর্ষীয়ান গণগায়ক রঞ্জনপ্রসাদ, সাহিত্যিক সৈয়দ কয়সর জামাল, পার্থ চক্রবর্তী, সমরেশ রায় এবং সাংবাদিক চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্য। সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ শীর্ষক তালিকায় ছিলেন অন্তরা চন্দ, সুনীতা মন্ডল ও রুমকি ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠান সহযোগী ছিল রাইটার্স ওয়ার্ল্ড, আহ্নিক পত্রিকা ও জনপদ সমাচার। সঞ্চালক ছিলেন সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য।

আলোচনাসভায় বক্তাদের মূল বক্তব্য ছিল, বাংলায় এখন ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে প্রবলভাবে। আগামীদিনে সেই অশুভ শক্তি বিজেপি ক্ষমতা দখল করলে গণতন্ত্রের মৃত্যু হবে। পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দলের কার্যকলাপও ফ্যাসিস্ট রূপ নিয়েছে। তাই নির্বাচনে এই দুই অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে বিজয়ী করতে হবে।

আদতে বামপন্থার আস্থা রাখলেও চলচ্চিত্র পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের গলায় বেসুরো সুর শোনা গেল। তিনি বলেন, আজকের এই যে অশনিসংকেত ফ্যাসিবাদী শক্তি দিচ্ছে তা কমিউনিস্টদের ভুল পদক্ষেপের ফসল। সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে চলতে গিয়ে সাধারণ মানুষদের ওপর গুলি চালিয়ে ও বিনা বিচারে আটক করে একই ফ্যাসিবাদী পরিচয় দিয়েছিল বিগত বাম সরকার। ভাঙরের সংগ্রামী জনতা গণতন্ত্র রক্ষার সংকল্পে গত লোকসভার নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যকে সমর্থন করেন। অথচ এবার বিধানসভার নির্বাচনে বামফ্রন্ট তাদের নয়া নির্বাচনী সাম্প্রদায়িক দোসর আব্বাস এর দলকে প্রার্থী দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এরফলে বাম শক্তির ভোট বিভাজন হবে। সুবিধা হবে অপশক্তির। বাম সাংসদ বিকাশবাবুকে বসিয়ে অনিকেতবাবু সম্ভবত আলিমুদ্দিন স্ট্রিটকে বার্তা দিতে চাইলেন।

তবে নাট্যকার চন্দন সেন ও নাট্য পরিচালক , অভিনেতা মেঘনাদ ভট্টাচার্য বলেন, বামেদের দোষ ত্রুটি আছে। কিন্তু এখন সমালোচনার সময় নয়।দুয়ারে দুর্বৃত্ত। সুতরাং বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে সমর্থন করে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। সবশেষে বক্তা ছিলেন, বামনেতা বিকাশ ভট্টাচার্য। তিনি আত্ম সমালোচনার সুরে স্বীকার করেন, বাম আমলে ভুলভ্রান্তি হয়েছে। সেগুলি শুধরে নেওয়ার একটি সুযোগ জনগণের দেওয়া উচিত। এই মুহূর্তে বিজেপি ও তার চালিকা শক্তি আর এস এস এর ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক নীতিকে পরাস্ত করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না দুর্নীতিতে মগ্ন তৃণমূল সরকার একদিকে যেমন বাংলাকে ধ্বংস করছে , তেমন আর এস এস এর মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। এই অশুভ শক্তিকে রুখতে হবে।

আলোচনা সভায় যেহেতু সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার পরিবেশ ছিল না, তাই বিকাশবাবুকে প্রশ্ন করা গেল না, আশির দশকে সি পি আই নেতা ও মন্ত্রী প্রয়াত নন্দগোপাল ভট্টাচার্য বাম আমলে আর এস এস এর বাড়বাড়ন্ত নিয়ে একটি তথ্যমূলক বই লেখেন অশনি সংকেত। তিনি বইটি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী বাম সরকার নন্দগোপাল বাবুর তথ্যকে গুরুত্ব না দিয়ে কি অদূরদর্শিতার পরিচয় দেননি?

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *