Press "Enter" to skip to content

বাবার পরিচয় ছাড়া বড় হয়ে সোফিয়া লরেন পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হয়েছেন নিজের প্রচেষ্টায়…..।

Spread the love

শুভ জন্মদিন সোফিয়া লরেন

বাবলু ভট্টাচার্য : “তোমার কথা বলা যেন মধুবালা, হাঁটাচলা সোফিয়া লরেন”- নিজের কল্পিত প্রেমিকাকে নন্দিত গায়ক অঞ্জন দত্ত এভাবেই গানে গানে খুঁজে নিয়েছিলেন। এভাবে আরও অনেক কোটি পুরুষ নিজের প্রেমিকাকে দেখতে চেয়েছেন বিশ্ব চলচ্চিত্রে ইতালিয়ান দেবী বলে খ্যাত সোফিয়া লরেনের সৌন্দর্যে, ব্যক্তিত্বে।

বাবা তাঁকে সন্তানের স্বীকৃতি দেয়নি। যাদের স্বামী নেই, তাদের জন্য বিশেষ হাসপাতালে তাঁর জন্ম। মা রোমিলদা হয়তো তাঁকে হাসপাতালে রেখেই পালাতেন, কিন্তু তার মনে ক্ষীণ আশা ছিল মেয়ের বাবা ফিরে আসবেন এবং তাকে বিয়ে করবেন।

রিকার্দো অবশ্য হাসপাতালে এসে মেয়েকে দেখেছিলেন এবং পিতৃত্ব স্বীকারের কাগজে সইও করেছিলেন। তারপর নিজের মায়ের নামে মেয়ের নাম সোফিয়া রেখে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে ফিরে গেলেন।

এই জন্ম বৃত্তান্তই বলে দেয়, সোফিয়া লরেন হওয়াটা একেবারেই সহজ ছিল না। বরং এর জন্য তাঁকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক চড়াই-উতরাই। বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইতালিতে কঠিন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু বাবার পরিচয় ছাড়া বড় হয়ে সোফিয়া লরেন পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হয়েছেন।

সোফিয়ার তখন ১৪ বছর বয়স। সে সময় ইতালির এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় নাম লেখান তিনি। আপাদমস্তক সুন্দরী সোফিয়া সহজেই পৌঁছে যান ফাইনালিস্টদের তালিকায়। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

মজার বিষয়, ওই প্রতিযোগিতায়ই সোফিয়া দৃষ্টি কাড়েন ৩৭ বছর বয়সী চলচ্চিত্র পরিচালক কার্লো পন্টির। তিনিই সোফিয়াকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। পরবর্তীতে সেই পন্টিকেই বিয়ে করেন সোফিয়া।

চলচ্চিত্রে অভিষেকের পরই সোফিয়া সাইক্লোন থেকে সোফিয়া লরেন হয়ে যান। ১৯৫২ সালে ‘লা ফ্যাভোরিটা’ এবং ১৯৫৩ সালে ‘এইডা’ নামের ছবিতে অভিনয়ের পরপরই সোফিয়ার সামনে হলিউডের দরজা খুলে যায়। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তিনি ১০০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন।

সোফিয়া লরেন অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আই অ্যাম ক্যাপাটাজ’। পরে ‘সানফ্লাওয়ার’, ‘হাউসবোট’, ‘ইয়েস্টারডে, টুডে অ্যান্ড টুমরো’, ‘ম্যারেজ ইতালিয়ান স্টাইল’, ‘এল সিআইডি’, ‘দ্য ফল অব দ্য রোমান এম্পায়ার’, ‘ম্যান অব লা মাঞ্চা’, ‘দ্য কাসান্ড্রা ক্রসিং’, ‘এ স্পেশাল ডে’সহ অসংখ্য ছবি উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

সফিয়ার লরেনের মায়ের জীবন নিয়ে একটা ছবি তৈরি হয়। ‘রোমিলডা’ নামের সেই ছবিতে সোফিয়া মা ও মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করে সাড়া জাগিয়েছিলেন।

‘ও ম্যান অব দ্য রিভার’ ছবির মাধ্যমেই সোফিয়া লরেন ইতালির সেরা অভিনেত্রীর সম্মান লাভ করেছিলেন। ‘আফ্রিকা আন্ডার দ্য সি’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি ব্যাপক খ্যাতি পেয়েছিলেন। রানী এলিজাবেথ ছবিটি দেখে এতোটাই মুগ্ধ হলেন যে, তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।

ভেট্টোরিও ডি সিকা পরিচালিত ‘টু উইমেন’ ছবিতে অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬২ সালে অস্কার পেয়েছিলেন সোফিয়া লরেন। বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী হিসেবে তিনিই প্রথম সেই অস্কার পেয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে এই অভিনেত্রীর জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছিল ‘সোফিয়া লরেন: হার ওন স্টোরি’। সোফিয়া লরেন সর্বশেষ অভিনয় করেন ২০০৯ সালে, ‘নাইন’ ছবিতে।

ষাট ও সত্তর দশকে সোফিয়া লরেন ছিলেন বিশ্বের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের অন্যতম। ইউরোপ ও আমেরিকায় তিনি সমান তালে অভিনয় করেন পল নিউম্যান, মার্লন ব্র্যান্ডো, গ্রেগরি পেক, চার্লটন হিউস্টনদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে।

অস্কার ছাড়াও জিতে নেন পাঁচটি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। আশির দশকের শুরু থেকেই চলচ্চিত্রে অভিনয় কমিয়ে দেন সোফিয়া। সময় কাটান স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে।

সোফিয়া লরেন ১৯৩৪ সালের আজকের দিনে (২০ সেপ্টে) ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.