নিজস্ব প্রতিনিধি : মুম্বাই, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩। রাজেশ চৌধুরী । কলকাতার ছেলে আগে শিল্প নির্দেশক থাকলেও বর্তমানে রাজেশ মুম্বাইয়ের স্বনামধন্য প্রডাকশন হাউজ এবং খ্যাতিমান পরিচালকদের কাজ করার সুবাদে অতি পরিচিত একটি নাম। করিনা কাপুর, বিজয় ভার্মা ও জয়দীপ আহ্লওয়াত এর সঙ্গে শুটিং চলার ফাঁকে পরিচালক সুজয় ঘোষের অনুমতি নিয়ে শুরু হল সাংবাদিকদের নিজের কিছু কথা বলা।
সুজয় বলেন আমি খুব বেশী বাংলা ছবি করিনি, কারণ আমার কর্ম জীবনের ১৪ বছরের মধ্যে প্রায় ১২ বছর মুম্বাইতে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, হিন্দি সিনেমার যেহেতু বাজেট বেশী থাকে তার ফলে বড়স্কেলে ভাবতে অসুবিধা হয় না। আর সেই কারণে মুম্বাইতে প্রযুক্তিগতভাবে একটু হলেও এগিয়ে থাকে। আবার কলকাতার সে সময়ে এবং যে বাজেটে যে ছবি হচ্ছে তা সত্যি অকল্পনীয়। তাই নান্দনিক দিক দিয়ে কলকাতার বাংলা সিনেমা থেকে হিন্দি সিনেমা একটু এগিয়ে বলে আমার মনে হয়। কিন্তু তার পরে ও মুম্বাই এর প্রটেন্সিয়াল ক্ষমতা বেশি। বাজারজাত জায়গাও বেশ বড় বিশ্বজোড়া।
ছবি তৈরি করতে প্রোডাকশন ডিজাইন ঠিক ততটাই দরকার বলে আমার মনে হয়, একটা জায়গায় ছায়া ফেলতে গেলে আলোর যতটা দরকার ঠিক ততটা থ্রিইয়েটিক কমার্শিয়ালকে ব্যালেন্স করে ডিরেক্টরিয়াল ভিশনকে সঠিক স্ক্রিপ্ট ডিজাইন এবং এক্সিকিউট করা হলো একটা প্রোডাকশন ডিজাইনারের কাজ। একটা “লুক অ্যান্ড ফিল'” ছবি নির্ভর করে প্রোডাকশন ডিজাইনারের উপর বাজেটের মধ্যে । সত্যি কথা বলতে গেলে যখন আমি কলকাতায় কাজ শুরু করেছিলাম তখন এই প্রোডাকশন ডিজাইনারের কাজটা কি জানা ছিল না। তখন অ্যাসিস্ট্যান্ট আর্ট ডিরেক্টর থেকে আর্ট ডিরেক্টর হওয়াই আমার লক্ষ্য ছিল।
কিন্তু কলকাতা থেকে মুম্বাই আসার তিন বছর পর বুঝলাম প্রোডাকশন ডিজাইন টা কি। আসলে প্রোডাকশন ডিজাইনার যে প্রোজেক্টের ডিজাইন করে যে লোকেশনে, আর্ট ডিরেক্টর সেটা এক্সিকিউট করে ।
আমি ফাইন আর্টস এর ছাত্র।
শুধু এক্সিকিউশন করে মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না। তাই সবসময় মনে হতো, কখন প্রিজুয়ালাইজ করব। প্রত্যেকের মত আমারও ইচ্ছা হল নিজের পেশাকে আরো বেশি করে নিজেকে হাইলাইট করার এবং ফিল্ম স্টাডি করা চালু করলাম। আগে ভাবতাম আমার ছবির সেট ডিজাইনটা আরো কত ভালো করা যায়। ধীরে ধীরে বুঝলাম সেট টা সুন্দর করাই আমার কাজ নয়। সেট টা স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী কতটা যথাযথ ভাবে এবং টোটাল ফিল্ম এর ডিজাইন টা করাই আমার কাজ। এইভাবে অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে আর্ট ডিরেক্টর আর সেখান থেকেই প্রোডাকশন ডিজাইনার হয়ে আজ কাজ করছি। ফিল্ম হিট করানোর জন্য আমার মনে হয় না কোন সঠিক ফর্মুলা আছে। যদি কোনো গল্পকে স্মার্ট প্রেজেন্টেশন একটা ফিল্মের প্রেজেন্টেশনের সঙ্গে দর্শকের কাছে গল্প পৌঁছে দেবে, দর্শক যদি নিজের সঙ্গে রিলেট করে এবং সমস্ত টেনশন ভুলে গিয়ে ছবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়, তাহলে ছবি হিট। আমার জীবনে যতগুলো ছবি করেছি তার বেশিরভাগটাই থ্রিলার। আমার আপকামিং ছবিও সাসপেন্স থ্রিলার। ছবির গল্পের বিষয়বস্তু এই মুহূর্তে আমার বলা বারণ। কারন আমি এখনো প্রোডাকশনের সঙ্গে চুক্তি বদ্ধ। আমি আমার কাজের সুবাদে অনেক স্বনামধন্য পরিচালকের এবং অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে ও টেকনিশিয়ানদেরর সঙ্গে দেখা হয়েছে। যেমন আমার কর্মজীবনে নিশিকান্ত কামাদ, আমি যখন দৃশম করেছিলাম , তখন নিশিকান্ত কামাদ, অভিষেক চৌবে, ডিরেক্টর অফ ” সনচেড়িয়া” , এবং”রেইড” এর পরিচালক রাজকুমার গুপ্তা “, এঁরা প্রতেকে নিজের জায়গায় স্বনামধন্য। “বব বিশ্বাস” ছবির কাজ করতে গিয়ে পরিচালক সুজয় ঘোষের সাথে আলাপ
তারপর “লাস্ট স্টোরি ২” এবং “জানে জা”র কাজ নিয়ে ব্যস্ত। এই নিয়ে সুজয় ঘোষের সাথে ৩ নম্বর প্রোজেক্ট।
হিন্দিতে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও করবো । এঁদের থেকে আমি অনেক কিছুই শিখেছি। কিন্তু পরিচালক সুজয় ঘোষ এঁদের থেকে আলাদা। হিন্দিতে কাজ করছি ভবিষ্যতেও করব তবে বাংলাতে কাজ করা খুব ইচ্ছা। বাংলার ছেলে হয়ে বাংলায় কাজ করবো ,এটা তো গর্বের ব্যাপার। যেমন সমসাময়িক পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলি, ধ্রুব ব্যানার্জি, সৃজিত মুখোপাধ্যায় এর মতো গুণী পরিচালকদের সাথে কাজ করতে চাই।
Be First to Comment