Press "Enter" to skip to content

বর্ণময় গায়ত্রী দেবীর জীবন সবসময় আগ্রহের তুঙ্গে। রাজনীতি থেকে সরে আসার পরে প্রকাশিত হয় গায়ত্রী দেবীর আত্মজীবনী A Princess Remembers…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ মহারানি গায়ত্রী দেবী

বাবলু ভট্টাচার্য : ফ্যাশন থেকে রাজনীতি— স্বাধীন ভারতের সর্বত্র ছিল তাঁর অনায়াস গতি। অবাধ পদচারণা। তাঁর নামের আগে ‘মহারানি’ কথাটা চলে আসত সহজাত সম্ভ্রম আর আভিজাত্যে। পাঁচের দশকে VOGUE ম্যাগাজিনের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী ছিলেন তিনি।

গায়ত্রীর জন্ম হয়েছিল যেন রানি হওয়ার জন্যেই। ছোট থেকেই রাজ-আবহে বড় হয়ে ওঠা। কোচ রাজবংশী পরিবারে প্রিন্স জিতেন্দ্র নারায়ণের কন্যা। মা ছিলেন ইন্দিরা রাজে। বরোদার মারাঠা রাজকুমারি। মহারাজা তৃতীয় সয়াজিরাও গায়কোয়াড়ের একমাত্র কন্যা। মায়ের থেকেই রূপ আর আভিজাত্য উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন গায়ত্রী।

লন্ডনে শিশুপাঠের পরে শান্তিনিকেতনের পাঠ ভবন। তারপর সোজা সুইজারল্যান্ড পাড়ি। শেষে ফের লন্ডনে ফিরে আসা। দেশ-বিদেশের সেরা সেরা প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ হয় গায়ত্রীর পড়াশোনার পাঠ।

শুধু পড়াশোনাই নয়। একইসঙ্গে শেখা হল অশ্বারোহণ এবং পোলো খেলা। সেইসঙ্গে বন্দুকবাজিও। শিকারাভিযানে যাওয়া ছিল মহারানি গায়ত্রী দেবীর অন্যতম পছন্দের শখ। আর ছিল গাড়ির শখ— দেশি-বিদেশি। তিনি প্রথম ভারতে আনেন 500 SEL। পরে সেটি মালয়েশিয়ায় চলে যায়।

রাজ পরিবারের সহবৎ-আচার শেখার মধ্যেই নতুন জীবনে প্রবেশ। ১৯৪০ সালে, ২১ বছর বয়সে গায়ত্রীর বিয়ে হয় রাজা দ্বিতীয় সোয়াই মান সিং-এর সঙ্গে। জয়পুরের মহারানি হন গায়ত্রী দেবী। তাঁদের একমাত্র সন্তান জগৎ-এর জন্ম হয় ১৯৪৯-এর ১৫ অক্টোবর। পরবর্তীকালে থাইল্যান্ডের রাজকুমারীর সঙ্গে বিয়ে হয় জগৎ সিং-এর।

স্বাধীনতার পরে লোপ পায় রাজতন্ত্র। হাতছাড়া হয়ে যায় অনেক প্রিন্সলি স্টেট। মহারানি গায়ত্রী দেবীর এবার হাতেখড়ি হয় স্বাধীন ভারতের ‘রাজনীতি’তে। রাজা গোপালাচারীর স্বতন্ত্র পার্টির হয়ে নির্বাচনে লড়েন তিনি। কংগ্রেসের যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল এই রাজনৈতিক দল।

১৯৬২ সালে লোকসভা নির্বাচনে তিনি রেকর্ড ব্যবধানে জেতেন। বৈধ ২ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৬টি ভোটের মধ্যে গায়ত্রী দেবী পান ১ লাখ ৯২ হাজার ৯০৯টি ভোট। গিনিস বুক-এর হিসেবে এটা রেকর্ড ব্যবধান।

বর্ণময় গায়ত্রী দেবীর জীবন সবসময় আগ্রহের তুঙ্গে। রাজনীতি থেকে সরে আসার পরে প্রকাশিত হয় গায়ত্রী দেবীর আত্মজীবনী A Princess Remembers। পরে তাঁকে সামনে রেখেই তৈরি হয় Memoirs of a Hindu Princess নামের চলচ্চিত্র— যার পরিচালক ছিলেন ফ্রাসোয়াঁ লেভি।

শেষ বয়সে গ্যাস্ট্রিক ডিজ-অর্ডারে আক্রান্ত হন গায়ত্রী দেবী। চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় লন্ডনে। ভর্তি হন কিং এডওয়ার্ড হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকে জয়পুরে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেন ৯০ বছরের গায়ত্রী দেবী।

সেইমতো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে জয়পুরে উড়িয়ে আনা হয় মাহারানিকে। জয়পুরের হাসপাতালে ২০০৯-এর ২৯ জুলাই প্রয়াত হন তিনি।

‘মহারানী’ গায়ত্রী দেবী ১৯১৯ সালের আজকের দিনে (২৩ মে) জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *