Press "Enter" to skip to content

প্রাইড মাসের অন্যতম উদ্যোগ ঋতমা ঘোষের তথ্যচিত্র “জিয়ার গল্প”,ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ওটি টেকশিয়ানের জীবন কাহিনী…..।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১২ জুন ২০২৩। গোটা জুন মাস জুড়ে সারা বিশ্বে ‘প্রাইড মাস’ পালিত হয়। মাসভর থাকে নানান কর্মসূচী। এই কর্মসূচীর অন্যতম উদ্যোগ পরিচালক ঋতমা ঘোষের নতুন তথ্যচিত্র ‘জিয়ার গল্প’। ভারতের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ওটি টেকনিশিয়ানের জীবন কাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছে এই তথ্যচিত্র। আগামী ১৬ জুন ‘জিয়ার গল্প’-এর বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে থাকছে একটি আলোচনা সভা। অংশগ্রহণ করবেন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। আলোচনার মূল বিষয় ‘নিজের জেন্ডার নিজে নির্বাচন করুন’।
১৯৬৯ সাল থেকে সমাজে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে লড়াই শুরু হয়েছিল। সেই লড়াই আজও চলছে। সারা বিশ্বে এবারের প্রাইড মাসের প্রধান কর্মসূচি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের সমানাধিকার। সমাজে সবার সঙ্গে একাসনে যেন বসতে পারে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।

এই সমানাধিকারের লড়াই ধীরে ধীরে সমাজে ছাপ ফেলতে শুরু করেছে। সমাজের বহু স্তরে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা আজ স্বীকৃতি পাচ্ছে। মূলস্রোতে তাদের সাদরে গ্রহণ করা হচ্ছে। পরিবারে, সমাজে, স্কুল-কলেজে, কাজের জায়গায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। পরিচালক ঋতমা ঘোষের তথ্যচিত্র ‘জিয়ার গল্প’ এই সাদরে গ্রহণ করার দিকটাই তুলে ধরেছে।

জিয়া একজন রূপান্তরকামী পুরুষ। সে শরীরে পুরুষ, মননে নারী। তার এই নারীসত্ত্বাকেই সে প্রাধান্য দিতে চায়। তাই সে লম্বা চুল রাখে, মেয়েদের পোশাক পরে, ঠোঁটে লিপষ্টিক লাগায়—সে শরীরে পুরুষ হলেও জেন্ডার হিসাবে নারীসত্ত্বাকেই সে নির্বাচন করে। তার এই নিজের ইচ্ছাকে সাদরে গ্রহণ করে আমাদের এই তথাকথিত গোঁড়া সমাজ। জিয়া ভারতের প্রথম ওটি টেকশিয়ান হয়ে কলকাতার একটি নামী হাসপাতালে চাকরি পায়। হাসপাতাল কতৃপক্ষ, তার সহকর্মীরা, রোগীরা, রোগীর পরিবার সবাই জিয়ার ইচ্ছেকে সম্মান দেয়। তাকে কাছে টেনে নেয়। জিয়া এখন সেই হাসপাতালে দাপিয়ে কাজ করছে। কোনও বিশেষ লিঙ্গের মানুষ হয়ে নয়, জিয়া একজন মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করছে।

এই প্রাইড মাসে ঋতমার ‘জিয়ার গল্প’ তথ্যচিত্রের গুরুত্ব খুব বেশি। জিয়ার লড়াই খুব কঠিন লড়াই। এই লড়াইয়ে এগিয়ে এসেছে সমাজের একটা অংশ। সমাজের অনেকটা অংশ এখনও অন্ধকারে। সেই অন্ধকারে আলো দেখাবে এই ‘জিয়ার গল্প’-এর মত তথ্যচিত্রগুলি। পরিচালক ঋতমার কথায়, “এই পৃথিবীতে একজন মানুষ যখন জন্মায়,তার নিজের মত করে বাঁচার অধিকার আছে। কিছু মানুষ তার বিরোধিতা করলে অন্যান্য মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমি সিনেমার মাধ্যমে এই সমাজ সচেতনার কাজটা যতটা সম্ভব করে যেতে চাই।” ঋতমা এর আগে তৃতীয় লিঙ্গের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ‘ইন্টরল্যুড’, এইচআইভি পজিটিভদের নিয়ে ‘কোয়েস্ট’-এর মত বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্র বানিয়েছেন। ‘জিয়ার গল্প’ মূলত সাক্ষাতকার ভিত্তিক তথ্যচিত্র। জিয়ার সহকর্মীরা এবং সমাজের বিশিষ্ট কয়েকজনের বক্তব্য এখানে রাখা হয়েছে। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ঋদ্ধি সেন এই তথ্যচিত্রে তাঁর জোরালো বক্তব্য রেখেছেন।

আর যাঁকে নিয়ে এই তথ্যচিত্র, সেই জিয়া কী বলছে? তিনি খুবই খুশি। জিয়া বলেন,”আমার লড়াই, আমার জীবনকাহিনি নিয়ে যে তথ্যচিত্র বানানো হয়েছে, আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। আমার কাহিনী আমার মত কোনও মানুষকে যদি সাহস যোগাতে পারে,সেখানেই আমার এই লড়াইয়ের সার্থকতা।”

“জিয়ার গল্প’ প্রদর্শনের জন্য নানা জায়গা থেকে অনুরোধ আসছে। আগামী ১৬ জুন এই  ক্যাফে পজিটিভ-এ এই তথ্যচিত্রের প্রথম প্রদর্শনী হতে চলেছে।

More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.