Press "Enter" to skip to content

[প্রদীপের সঙ্গে আলাপ=প্রলাপ]
(পর্ব-০৩০)
“চপ্ চপে সপ্তম সপ্তাহ”…..

Spread the love


ডঃ পি সি সরকার (জুনিয়র) বিশ্বখ্যাত জাদুশিল্পী ও বিশিষ্ট লেখক। আমি সর্বান্তঃকরণে ঈশ্বরে বিশ্বাসী। সেই ঈশ্বরকে আপনি যে নামেই বা যে ভাবেই ডাকুন না কেন, সেটা আপনার নিজস্ব ব্যাপার । কিন্তু এদিক ওদিক সবাই দেখি বলছেন, তিনি নাকি তাঁর নাম ধরে এক বিশেষ ভঙ্গিমায় কেউ যদি খুব জোরে প্রশংসা, জয়ধ্বনি দেন বা ঘণ্টার আওয়াজ শোনান, তাহলে তিনি আহ্লাদে আটখানা হয়ে, আমাদেরকে বখশিস হিসেবে সেই আব্দারটা পূরণ করেন। ‘বলি’ অথবা ‘কুরবানী’ দিলে তো কথাই নেই। ঈশ্বর কি হাড়-হাভাতে, যে নিজের সৃষ্টিকে মেরে খাবেন? অতোই যদি রক্ত-মাংস লোভী হন, তাহলে নিজে ধরে খান না কেন? আমাদের দিয়ে কেন করাচ্ছেন?

সব্বার সবকটা ঈশ্বরই নাকি খু-ব জাগ্রত । সবাই শুনছি শান্তিপ্রিয় , আর দয়ালু। কিন্তু ভীষণ কড়া। নিজে কি শান্তিরক্ষার কাজটা করতে পারেন না ? বিভিন্ন মানুষকে দিয়ে দলাদলি,খুনোখুনি, কাড়াকাড়ি, কামড়া-কামড়ি…(আর কতো বলবো!)….,হল্লাগোল্লা লুটপাট ,’অধর্মের শান্তি’কে শাস্তি হিসেবে নষ্ট, মাস-গ্যাং রেপ …ইত্যাদি করিয়ে নিজে চুপচাপ বসে আছেন! তাঁর ‘ধম্মো-কম্মো’ তাহলে তো স্বার্থপরতা!হিংসা!! বিশ্ব-জুড়ে এক বিরাট গোরস্থান বা শ্মশান বানিয়ে কি তিনি তৃপ্ত হবেন ? এই নাকি তাঁর, পবিত্র শান্তির দেশ স্থাপন করা? রক্ষার দায়িত্ব তিনি যাদের দিয়েছেন (?) তাঁদের চিল্লামিল্লি শুনে, দেখে তো তাই মনে হয়!!! কিন্তু ওরা নিজেদের মধ্যেই আবার প্রচণ্ড কমড়া-কামড়ি কাটা কাটি করে কেন? সেটার কথা বললে এড়ে তর্ক শুরু করে। যুক্তি বা প্রশ্ন, শুনতেই চায় না।

আমার বিশ্বাসের ঈশ্বরকে আমি নিজেই তৈরি করে নিয়েছি। তিনি এতো সুন্দর যে দেখতেই পারা যায় না। এতো মিশুকে, যে হাওয়াতে মিলিয়ে যান। মনটা এতো নরম যে জলে জল হিসেবে গুলে যান।ধরা যায় না। আমি সেজন্য তাঁকে আমার মন খুঁড়ে তার মধ্যে শান্তি চাপা দিয়ে, লুকিয়ে রাখি। তাঁকে পটাতে হয় না। তিনি চিন্তার থেকেও তাড়াতাড়ি স্পীডে যান। ভালোবাসা তাঁর ধর্ম। সেই ধর্মের কোনো নাম নেই। তিনি সব কিছুই করে রেখেছেন, আমরা শুধু প্যাকেট খুলে দেখে, পেয়ে বলছি “আবিষ্কার” করেছি। হাতে নিয়ে খেলছি।



‘কলি যুগ’ নাকি শুরু হয়েছে মহাভারতের যুদ্ধের পর থেকে। পাণ্ডবেরা সশরীরে স্বর্গে যাবার পথ চিনতে কুকুরকে ফলো করে এগুচ্ছিলেন। কুকুরটা নাকি ধর্মরাজ, স্বয়ং। পাণ্ডবেরা রাস্তায় টপাট্টপ্ মরতে আরম্ভ করলেন। তা বয়স হয়েছে , মরবে না !?
টিঁকে গেলেন যুধিষ্ঠির। তবে ডাইরেক্ট ফ্লাইট নয়। via নরকের free sight- seeing tour of কোলকাতা।
পার্ক সার্কাস, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর দেখে তো তিনি মুগ্ধ! বলেন, আমরা স্বর্গে এসে পৌঁছুলাম বুঝি? So fast!!
আমরা বুঝিয়ে উঠতে পারি না যে কেয়ামতের দিন আসতে দেরী আছে। সবে তো কোভিড-এর নোটিশ টা এলো। ইলেকশন হোক। বিচারপতির সিলেকশন হোক…তারপর তো খেল হবে শুরু।
অনেক দেরী হবে। সুবিচার কি অতো সহজে হয়?

সিঙ্গেল বেডের কবর। বিচারপতি যতক্ষণ না বিচারে বসেন, ততক্ষণ ওই একটা সিঙ্গল কফিন বেডে-ই আপনাকে শেয়ার করে থাকতে হবে , আপনার বেডে , আপনারা পঁচা বডির সঙ্গে।
সবে তো Evening in Paris এর Lodon রূপী নীল-সাদার, মানে কলকাতার ‘কলি’র সন্ধে !! Sir , আপাততঃ এখানকার নাইট ক্লাবে মিস্ ঊর্ব্বশীর বেলি ড্যান্স, ক্যাবারেটা দেখুন, তারপর বেহেস্তে গিয়ে বাহাত্তরখানা সুন্দরী হুর এর সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করতে ওদের কোনও ট্যুরিস্ট গাইড । কোনো দেবতাই হয়তো আলাপ করিয়ে দেবে।

অপবাদ দেবেন না…., চুপ্,..খামোশ্..Shut up… ধর্মের আসল আলোচনা চলছে। শান্তি, অশান্তি, ক্ষমা, বোমা…সমস্ত ধর্মের মূল কথা। সবাই বলো, দূর্গা দূর্গা নয় । বলো:-
“মেরেছো কলসী-কানা,তা’বলে কি প্রেম দেবোনা?” *****। *****। *****। ***** ম্যাজিক এখনোও আমাদের সমাজে 'মেজিক' হয়েই আটকে আছে। ম্যাজিক যে বাইবেলে বর্ণিত 'থ্রী ওয়াইজ মেন অফ দ্য ওরিয়েণ্ট' ,মেজাইদের পাণ্ডিত্যের প্রকাশ, বা আরো পুরোন দর্শন,'মায়া'র বেদান্ত দর্শনের মায়াবাদের মঞ্চরূপ, আমাদের মুনি ঋষীরা যেটা উপলব্ধি করে আত্মোন্নতি করেছিলেন ,তা আমরা ছেঁড়া জিন্সের আভিজাত্যে গুলিয়ে শখের ভিখিরি সেজে, নষ্ট করছি। এটা আমি হতে দেবো না। কিছুতেই না। কলকাতায় ফিরে মহাজাতি সদনে শো করার আগে আমি সব কিছু ঢেলে সাজিয়ে ছিলাম। বাবার দেখানো বিখ্যাত, রূপকথার মতো আইটেম গুলোর সঙ্গে নিজের আবিষ্কৃত অনেক কিছু জুড়ে ছিলাম। প্রথমে হাত দিলাম দৃশ্যপটের ফ্রেমের দিকে। মন জয় করতে গেলে প্রবেশ করতে হবে ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে। পাঁচটা ইন্দ্রিয়ের প্রথম হচ্ছে চোখ। আমাদের দুখানা চোখকে প্রকৃতি স্থাপন করেছেন পাশাপাশি। ওপরে নীচে নয়। সামনে পেছনে নয়। সামনে পেছনে হলে নিরাপত্তায় হয়তো সুবিধে হতো। প্রকৃতি বিবর্তনের সময় চান্স পেয়েও তা করে নি। একটা কপালে আর একটা হাতের আঙ্গুলের ডগাতেও নয়। আঙ্গুলের ডগায় হলে পকেটের ভেতর, ব্যাগের ভেতর ইত্যাদি অনেক জায়গায় হাত পৌঁছে দেখতে পারা যেতো। দেননি। দিয়েছেন মুখের সামনের দিকে, নাকের দুপাশে। সেই কারনে আমাদের দৃশ্যপটের সীমানাটা হচ্ছে বর্গক্ষেত্রিক নয়, আয়তক্ষেত্রের মতো। সেজন্য আমরা চওড়া জিনিষ দেখতে ভালোবাসি। ব্যাস্ মানুষের মন জয় করবার প্রথম ধাপটা পেয়ে গেলাম, স্টেজ চওড়া হতে হবে। মানুষ দুচোখ ভরে দেখবে। সেই ব্যবস্থা করা। তারপর আসলো কতোটা? জবাবে পেলাম যতোটা পেলে পেট ভরবে, তার চেয়ে বেশি রাখা। কিন্তু সময়সীমা তো মানুষের বাঁধা। সুতরাং প্রোগ্রাম করবো ঠেসে। অর্থাৎ দ্রুত। তাতে লাভ হবে অনেক। চিন্তাকে ঠাসলাম, কিছু দৃশ্য দেখবেন কিন্তু রেজিস্ট্রার করবে না। বাড়িতে গিয়ে মনে পড়বে। মিস্ করেছেন বলে অন্যের মুখে শুনবেন, পারলে আবার দেখতে আসবেন। ভীড় হবে। মানুষ ভীড়কে ভালোবাসে। প্রচার হবে ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক মনোবৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ। তারপর আসছে, কি দেখালামের কথা।

আমি যে ভুল করিনি, তা আমি বিশ্ব জুড়ে পঞ্চাশ বছর ধরে প্রমাণ পেয়েছি, পাচ্ছি। ইচ্ছে আছে এ নিয়ে বিস্তারিত একটা বই লিখবো। কিন্তু কে পড়বে, সেটাই চিন্তার। বিজ্ঞাপনেও আমি বৈচিত্র্য এনেছিলাম। সবাই প্রশংসা করতেন। একটা হাতের কাছে পেলাম। প্রকাশ করলাম। কল্পনা, ডিজাইন আমার। এঁকেছেন প্রখ্যাত চিত্রকর নির্মল রায়। ভালো লাগলে বলবেন। আরোও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবো। "চপ্ চপে সপ্তম সপ্তাহ".......।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *