Press "Enter" to skip to content

পুরুষ ময়ূর পাখি দেখতে অতি সুন্দর হলেও কণ্ঠস্বর কর্কশ। ময়ূরের পালককে অনেকেই মঙ্গলের চিহ্ন হিসেবে ভেবে থাকে…..।

Spread the love

অথ ময়ূর কথা

শম্পা ভট্টাচার্য : ৩, ফেব্রুয়ারি, ২০২১।

আজ থেকে ৫৮বছর আগে ১৯৬৩ সালের ৩১শে জানুয়ারি ময়ূরকে
‘জাতীয় পাখি’ ঘোষনা করেন ভারত
সরকার। আমাদের জাতীয় পাখি
সম্পর্কে দু’চার কথা না বললে
একটু অবিচার হবে বৈকি।

অতি সুদর্শন এক প্রজাতির পাখি ‘ময়ূর’। স্ত্রী পাখি ‘ময়ূরী’ নামে পরিচিত। পুরুষ ময়ূর পাখি দেখতে অতি সুন্দর হলেও কণ্ঠস্বর কর্কশ। ময়ূরের পালককে অনেকেই মঙ্গলের চিহ্ন হিসেবে ভেবে থাকে। অনেক সময়েই লক্ষ্য করে থাকবেন যে, যে কোনো শুভ কাজে বা মঙ্গলের চিহ্ন হিসেবে ময়ূরের পালক ব্যবহার করা হয়। অনেকেই আবার বাড়িতে ময়ূরের পালক রাখেন। কেননা ময়ূরের পালককে শুভ বা মঙ্গল বলে মনে করা হয়।

ময়ূর Phasianidae গোত্রের বড়, চমৎকার ও আকর্ষণীয় রঙের কয়েক প্রজাতির পাখি। এটি বিশ্বের সবথেকে পুরনো শোভাময় পাখি। ভারতের জাতীয় পাখি এই ময়ূর।

প্রচলিত আছে যে, গরুড় পাখির পালক থেকে ময়ূরের সৃষ্টি। আর তাই ময়ূর সাপ ধ্বংস করতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।

কথিত আছে যে, প্রাচীন যুগে একসময় ময়ূরের লেজ নিষ্প্রভ ছিল। রাবন এবং দেবরাজ ইন্দ্রের যুদ্ধের সময় ময়ূর তার লেজ বিস্তৃত করে দিয়েছিল, যাতে দেবরাজ ইন্দ্র সেখানে লুকতে পারেন। নিজের লেজ দিয়ে দেবরাজ ইন্দ্রকে রক্ষা করতে সফল হয়েছিল ময়ূর। এরপর থেকে ময়ূরের পালককে মঙ্গলময় বলে স্বীকৃতি দেয় দেবতারা। এবং এরপর থেকেই দেবরাজ ইন্দ্রকে ময়ূর সিংহাসনে উপবিষ্ট হতে দেখা যায়।

ময়ূরকে ধন-সম্পদের প্রতীক হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। আর এই কারণেই বাড়িতে ধন-সম্পদের বৃদ্ধি করতে অনেকে বাড়িতে ময়ূরের পালক রাখেন। এছাড়াও এমনও মনে করা হয়, ময়ূরের পালক বাড়িতে রাখলে, বাড়িতে মশা-মাছি, পোকা-মাকড়ের উপদ্রব হয় না।

ভগবান কৃষ্ণকে তার মুকুটে ময়ূরের পালক ধারণ করতে দেখা যায়। তাই ময়ূরের পালককে হিন্দুত্বের অন্যতম চিহ্ন বলে মনে করা।

যেহেতু যুদ্ধের সময় ময়ূর নিজের লেজ দিয়ে দেবরাজ ইন্দ্রকে রক্ষা করেছিল, তাই একে নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়।

ময়ূর আমাদের মনে আনন্দ এবং একাত্মতা নিয়ে আসে। একে গর্বেরও চিহ্ন বলে ধরা হয়।

হিন্দু ধর্মে কথিত আছে, দেবরাজ ইন্দ্রকে একবার পশুর রূপ ধারণ করতে হয়েছিল। তিনি ময়ূরের বেশ ধারণ করেছিলেন।

অশুভ শক্তি দূর করার প্রতীক বলে মনে করা হয় ময়ূরের পালককে।

ময়ূর এবং বৃষ্টির মেলবন্ধন তো আমরা সকলেই জানি। ময়ূরই একমাত্র প্রাণী, যে বৃষ্টি নিয়ে আসতে পারে বলে মনে করা হয়। বৃষ্টি আসার আগে ময়ূরের নাচ আমরা অনেকেই দেখেছি।

ময়ূরের কান্না খুবই কম শোনা যায়। বলা হয়, যদি কোনও পরিবারে কারও মৃত্যু আসন্ন হয়ে থাকে, তাহলে ময়ূরকে কাঁদতে দেখা যায়।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *