Press "Enter" to skip to content

পুজো আসন্ন হবার লক্ষন বুঝতাম কেশব কাকার মুর্তি গড়ার কাজ দেখে…..।

Spread the love

আফরোজা আলম : ঢাকা, ২৫, অক্টোবর, ২০২০। পুজো আসন্ন হবার লক্ষন বুঝতাম কেশব কাকার মুর্তি গড়ার কাজ দেখে। ডাকাতিয়া নদীর তীরে কাশ ফুলের সমারোহ দেখে। দীনেশ দার দোকানে সারা বছর মাইকে গান বাজে কিন্তু সেই সময়ের গানগুলো আরো অন্যরকম আরো বেশি বেশি বাজতো।

পাড়া শেষ হয়ে বড় রাস্তায় ঠিক এক কোন ঘেঁসে দীনেশ দার মাইকের দোকান। শিবানী দির বাড়ির সামনেই ছিল তার বাবার বৈঠক খানা মানে তিনি উকিল ছিলেন সেই ঘর ছিল। রাস্তার কোন ঘেঁসে বিশাল মন্ডপ হত। দেবী দুর্গা প্রতিষ্ঠিত হতেন সেখানে। তার আগে তৈরি করা হয় কি ভাবে সেটা দেখার ধুম ছিল।

সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে হতো ভাই, বোনেদের হাত ধরে। সে এক অদ্ভুত উত্তেজনা কাজ করতো। খেলার সাথীদের সাথে আনন্দ এক সাথে মিশে থাকতো। শুরু হত পুজো। আর আমরা মন্ডপে মন্ডপে ঘুরতাম। হাতে দিতো পুরোহিত মশায় প্রসাদ আর তালুতে এক রকম সুগন্ধ যুক্ত পানি। সবাই চুমুক দিয়ে খেয়ে পানির বাকি অংশ মাথায় মুছতো, দেখা দেখি আমরাও মুছতাম। চারদিকে ধুপ ধুনোর গন্ধ , ফল ফলাদি উঁচু হয়ে থাকতো। পাড়ার মন্ডপে নাটক চলত, নাচ হতো।

গান হতো। ঢাকের বাড়ি শুনতে শুনতে বাড়ি ফিরতাম। সে কটা দিন অদ্ভুত আবেশে কেটে যেতো। কেবল প্রশ্ন জাগত রাধা, বিভার মা কেন পানি খেতে গেলে দুর দুর করতো, কেন ছোচি-ছোচি (অশৌচ) বলতো। এটার জন্য আমাদের বন্ধুত্বের অবশ্য খামতি হতো না। শেষের দিন ভাসানের দিন শেষে ফিরে সবাই মাটি তে পানি দিয়ে কাদায় গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদত তা দেখে কেমন মন খারাপ হতো। সেদিন শীতল দা গান করেছিল ” সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু অনলে পুড়িয়া গেলো “।

দীনেশ দার মাইকের গানের সুর ও করুন হয়ে যেতো। আস্তে আস্তে ঢাকের শব্দ মিলিয়ে যেত। আমরা অপেক্ষা করতাম আবার কবে দুর্গাপুজো আসবে। শুভ শারদীয়া সবাইকে ,কাছের ও দুরের বন্ধুদের।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *