Press "Enter" to skip to content

পাঁচিল নির্মাণে স্থগিতাদেশ নয়,  হাইকোর্টের কমিটি থেকে সরলেন এজি…….

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন : ১, অক্টোবর, ২০২০। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বিশ্বভারতী মামলার ভার্চুয়াল শুনানি চলে। সেখানে রাজ্যের পক্ষে বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠের পাঁচিল ঘেরা নিয়ে স্থগিতাদেশ চাইলে তা ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দেয়৷ পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দ্বারা গঠিত চার  সদস্যর কমিটি থেকে এডভোকেট জেনারেলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট জানিয়েছে – বিশ্বভারতী মামলায় গড়া তিন সদস্যের কমিটির কাছে স্থগিতাদেশ চাওয়ার আবেদন করতে পারে রাজ্য। এই আবেদন পেলে তা খতিয়ে দেখে নির্দেশ দেবে কমিটি। উল্লেখ্য, এই কমিটিতে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতি রয়েছেন যাঁরা একদা বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করেছেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আছেন। গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের পক্ষে জানানো হয় – ‘ বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠের পাঁচিল ঘেরা নিয়ে স্থানীয় জনতাদের  বড় অংশ ক্ষুব্ধ৷ তাতে অশান্তির আশংকা আছে। তাই স্থগিতাদেশ জারী করা হোক৷ এই আবেদনটি খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি হুশিয়ারি দেওয়া হয় বিশ্বভারতীতে পাঁচিল গড়া নিয়ে কোন অশান্তি হলে তা বরদাস্ত করবেনা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এহেন কড়া অবস্থান দেখে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল আদালতের গড়া চার সদস্যর কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন। তাতে হাইকোর্ট লিখিত আবেদন জানাতে বলেছিল এজি কে। বুধবার দুপুরে হাইকোর্টে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল কমিটি থেকে   লিখিত পদত্যাগ পত্র জমা দেন। হাইকোর্ট তা সাথেসাথেই মঞ্জুরও করে থাকে। সেইসাথে রাজ্যের স্থগিতাদেশ জারীর আবেদন টি খারিজ করে তিন সদস্যের কমিটির কাছে তা জানাবার উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, চলতি মাসে  কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বিশ্বভারতী মামলার শুনানি চলে। সেখানে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার যাবতীয় দায়িত্ব সরাসরি নিজেদের হাতে তুলে নেয়। চার সদস্যর কমিটি গঠন করা দেয়। আদালত নিযুক্ত এই কমিটি বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠের পাঁচিল দেওয়া কে কেন্দ্র করে পুলিশি ভুমিকা দেখার পাশাপাশি কোন জমিতে বিশ্বভারতী রয়েছে?  কোথায় পাঁচিল দেওয়া প্রয়োজন, কোথায় কোন বিষয়গুলি থাকবে। তা সমস্ত কিছুই পর্যালোচনা করে রিপোর্ট তুলে দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। এই কমিটির পদাধিকারীরা বোলপুরে ডিএম এসপি সহ বিশ্বভারতীর কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। আদালতের নির্দেশ, পুলিশ কোন কাজ করবেনা, যাবতীয় মামলা খতিয়ে দেখবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের আদেশনামায় গড়া এই কমিটি। এই কমিটিতে আছেন কলকাতা হাইকোর্টের দুজন বিচারপতি,এবং অপরজন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল । আগে এই কমিটিতে ছিলেন রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল। পাশাপাশি এই কমিটির যোগসূত্র হিসাবে একজন বর্ষীয়ান আইনজীবী আদালত বান্ধব হিসাবে আছেন । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়, আরেক বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর ওয়াই জে দস্তর রয়েছেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে কমিটির মধ্যে৷ পাশাপাশি আইনজীবী জয়দীপ কর আছেন আদালত বান্ধব হিসাবে। উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি বোলপুরের বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠের পাঁচিল দেওয়া কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল গোটা এলাকা। এই ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা চেয়ে সিবিআই তদন্তর দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন এক আইনজীবী। মামলার প্রথম শুনানিতে বিশ্বভারতী কান্ডে প্রাথমিক রিপোর্ট চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। গত শুনানিতে এই মামলার ভার্চুয়াল শুনানিতে বিশ্বভারতী কান্ডে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। যা গত ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বিস্তারিত রিপোর্ট টি জমা পড়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে।রাজ্যের পাশাপাশি শ্রীনিকেতন – শান্তিনিকেতন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে আলাদাভাবে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপ টি সেদিন কেমন নেওয়া হয়েছিল সেটাই বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও এই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মামলা রুজু করে থাকে। শাসক দলের এক বিধায়ক সহ ৯ জন অভিযুক্ত রয়েছেন মামলায়। গত মাসে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণনের ডিভিশন বেঞ্চে নথিভুক্ত হয় বিশ্বভারতী কান্ডের সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা৷ মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার সেদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সম্প্রতি বীরভূমের বোলপুরে বিশ্বভারতীর পাঁচিল দেওয়া কে কেন্দ্র করে হিংস্বাত্মক ঘটনাগুলি তুলে ধরেন তথ্য ছবি সহকারে।  এই মামলায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি বীরভূম জেলা তৃনমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল, ঘটনায় অভিযুক্ত বিধায়ক নরেশ বাউড়ি কে পক্ষভুক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় সিবিআই তদন্তর পাশাপাশি বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা প্রদানে সিআইএসএফ কে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন রয়েছে এই মামলায়। উচ্চ আদালতের তদারকিতে নজরদারি কমিটি গড়ে একমাসের মধ্যে রিপোর্ট তুলে ধরার আবেদন ছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ আদালতের তদারকিতে নজরদারি কমিটির উদাহরণ রয়েছ৷ স্থানীয় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যদিও বীরভূম জেলা পুলিশ এই ঘটনার কয়েকদিনেই চারজন পুলিশ কর্মী কে ক্লোজ করে থাকে । এমনকি বিশ্বভারতীর আশ্রমের আবাসিকদের মনোবল বাড়াতে এবং ঘটনার তদন্তে পুলিশ সুপার রবিবারসীয় সাইকেল ভ্রমণে বিশ্বভারতী ঘুরেওছেন  । গত ১৭ আগস্ট বোলপুরের বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ নিয়ে রণক্ষেত্র হয়ে উঠে গোটা শান্তিনিকেতন সহ বোলপুর শহর। অভিযোগ, সুপরিকল্পিতভাবে বোলপুর সংলগ্ন গ্রাম গুলি থেকে লোক জোগার করে জেসিবি মেশিন দিয়ে ভাঙচুর করা হয় ঘটনাস্থল। এমনকি সিমেন্ট – রড – ইটের মত ইমারতি দ্রব লুট করা হয় বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, এই বিশ্বভারতীর আচার্য হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাই বিষয়টি সর্বভারতীয়স্তরে পৌঁছে যায়। রাস্ট্রপ্রতি মনোনিত ব্যক্তি তথা জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত  ‘এক টাকার ডাক্তারবাবু’ সুশোভন বাবুর আবক্ষ মূর্তিতে কালিমালিপ্ত করার ঘটনাও ঘটে বিশ্বভারতীর পাঁচিল দেওয়ার হিংসাত্মক ঘটনার পরেও।   এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে বোলপুর শহর জুড়ে। রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যপালের দরবারের পাশাপাশি রাজ্যব্যাপি  বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি চালিয়েছে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা নথিভুক্ত হয় সিবিআই তদন্ত দাবিতে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের ইডি সংস্থা আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করেছে। বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠের পাঁচিল দেওয়ার প্রকল্পে টেন্ডার সহ সেদিনের হামলাকারীদের তরফে পে লোডার কারা এনেছিল তা জানতে খোদ শান্তিনিকেতনেও হাজির হয়েছিল ইডির কর্মকর্তারা। গত শুনানিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে এই মামলায় ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশি ভুমিকা নিয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল। পাশাপাশি শ্রীনিকেতন – শান্তিনিকেতন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে আলাদাভাবে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। গত শুনানিতে এই মামলার শুনানি চলে থাকে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে চার সদস্যর উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গড়ে দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই কমিটির দুজন কলকাতা হাইকোর্টের বর্তমান বিচারপতি, এবং অপরজন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর। রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল ছিলেন এই কমিটির মধ্যে। তবে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন বুধবার। পাশাপাশি এই কমিটির যোগসূত্র হিসাবে একজন বর্ষীয়ান আইনজীবীকে আদালত বান্ধব হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। বিশ্বভারতী কান্ডে কলকাতা হাইকোর্টের এহেন গুরত্বপূর্ণ অবস্থান দেখে খুশি মামলাকারী থেকে বিশ্বভারতীর অধিকাংশ আশ্রমিক। আদালত নিযুক্ত এই কমিটি বিশ্বভারতী কোন জমিতে রয়েছে, কোথাও পাঁচিল দেওয়া প্রয়োজন, কোথাও কোন বিষয়গুলি থাকবে তা সবই খতিয়ে দেখবে। বিশ্বভারতী নিয়ে স্থানীয় জেলা পুলিশ কোন কাজ করবেনা, বিশ্বভারতী পাঁচিল দেওয়া কে কেন্দ্র করে যাবতীয় মামলা খতিয়ে দেখবে এই কমিটি।   রাজ্যের পক্ষে বিশ্বভারতীর পৌষমেলার মাঠের পাঁচিল ঘেরা নিয়ে স্থানীয় জনতার অশান্তি আশংকা করে স্থগিতাদেশ চাওয়া হলে তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই স্থগিতাদেশ জারীর আবেদনটি সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে জানাবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে। পাশাপাশি এই কমিটি থেকে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল অব্যাহতি চাইলে তা লিখিতভাবে জানানোর মাধ্যমে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে হাইকোর্ট।                                                                                                                                                         

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.