Press "Enter" to skip to content

নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যাবহারে রাজ্যে সমীক্ষায় উদ্বেগজনক ফল প্রকাশ পেল….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ৫ জুন ২০২৩। গত ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে সারা দেশে একক ব্যাবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১২০ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগের ব্যাবহার সম্পুর্নভাবে নিষিদ্ধ হয়। তার পরেও এ রাজ্যে সেই নিয়ম মানা হয়নি। উল্টে ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে এ রাজ্য একক ব্যাবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও ক্যারিব্যাগের ব্যাবহার নিয়ে নিয়ে এক সার্ভে রিপোর্টে যে পরিসংখান উঠে এসেছে তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদ থেকে বিশেষজ্ঞরা।
ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, এয়ার অ্যান্ড ওয়াটার (আইএসডব্লিউএমএডব্লিউ) সংস্থার উদ্যোগে ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তর ও দক্ষিন কলকাতা ছাড়াও এ রাজ্যের সল্টলেক, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, শিলিগুড়ি এবং দুর্গাপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে একক ব্যাবহারযোগ্য প্লাস্টিক ও ১২০ মাইক্রনের উপরে বহনকারী ক্যারিব্যাগ ও প্লাস্টিকের ব্যাবহার, উৎপাদন ও তার ম্যানেজমেন্ট বা পুনর্ববহার নিয়ে এক সমীক্ষা চালানো হয়।


সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবসে কলকাতা প্রেস ক্লবে এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশ করেন বিশিষ্ট অধ্যাপক, গবেষক ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রাক্তন প্রধান এবং ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, এয়ার অ্যান্ড ওয়াটার-এর সভাপতি অধ্যাপক সাধন কুমার ঘোষ।
তিনি বলেন, এই গবেষণায় একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং উদ্বেগজনক পর্যবেক্ষণ হল যে এসইউপি বা সিঙ্গল ইউস প্লাস্টিকের উপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার ১১ মাস পরেও এবং ১২০ মাইক্রনের কম প্লাস্টিকের ক্যারি ব্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞার ৫ মাস পরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
আগের মতো একই ভাবে তার ব্যাবহার চলছে। কিছু কর্পোরেট সংস্থা বা শপিং মলে এই নির্দেশিকা মানা হলেও খুচরো বাজারে তা একদমই মানা হচ্ছেনা।
গবেষণায় দেখা গেছে যে কলকাতা ও শহরতলি প্লাস্টিক বর্জ্য বিশেষ করে প্লাস্টিকের ব্যাগের বর্জ্য দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে । কলকাতা পুরসভার ১৪১ টি ওয়ার্ড দুটি অঞ্চলে বিভক্ত – দক্ষিণ কলকাতা এবং উত্তর কলকাতা।
দক্ষিন কলকাতার প্রায় ৪৭% এবং উত্তর কলকাতায় ৫৩% রেস্টুরেন্ট ঠান্ডা পানীয়, কোল্ড কফি, বিভিন্ন শেক ইত্যাদি পরিবেশনের জন্য নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের স্ট্র ব্যবহার করছে। একইভাবে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে ৫১%, হাওড়ায় ৬৮%, দুর্গাপুরে ৫৯%, এবং পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলায় ৫৮% নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যাবহার হচ্ছে ।
কাঁটাচামচ, চামচ, ছুরি, ট্রে ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অনুরূপ গবেষণা করা হয়েছে। সেখানেও দেখা গেছে খাবার সর্বরাহকারী সংস্থাগুলি, কিছু রেস্তোরাঁ, রাস্তার পাশের খাবারের দোকানে এগুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলি যে নিষিদ্ধ এ ব্যাপারেও তাদের মধ্যে কোনো সচেতনতা নেই।
এসবের ব্যাবহারের ক্ষেত্রেও সমীক্ষায় দেখা গেছে দক্ষিণ কলকাতায় ৫১%, উত্তর কলকাতায় ৪৫%, সল্টলেক এলাকায় ৫৫%, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ অঞ্চলে ৬৭%, হাওড়ায় ৭৩%, দুর্গাপুরে ৫৮%, এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্যান্য অংশে ৫১% ব্যাবহার হচ্ছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে ১২০ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক ব্যাগ যে নিষিদ্ধ তাও অনেকে জানেন না।মাত্র
৩৯% মানুষ এ ব্যাপারে সচেতন বলে সমিক্ষায় উঠে এসেছে।
১২০ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিকের ব্যাবহার দক্ষিণ কলকাতায় যেখানে ৪১%, উত্তর কলকাতায় তা একটু বেড়ে ৫৯%। সল্টলেকে ৬৮%, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ অঞ্চলে ৭৫%, হাওড়ায় ৮৯%, দুর্গাপুরে ৭৪%, শিলিগুড়ি এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্যান্য অংশে ৬০%
বেশিরভাগ জায়গায় যে সব প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যাবহার হচ্ছে তা ১০,২০,২৫ মাইক্রন।
ক্যারিব্যাগের গায়ে কতো মাইক্রন সেটা লিখে রাখার কথা। তাও লেখা হচ্ছেনা।
সাধন বাবু বলেন সংস্থার পক্ষ থেকে তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন।
কলকাতা পুরসভার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে যেভাবে সলিড ওয়েস্ট সংগ্রহ করে সেগুলি পৃথকিকরন করে বিক্রি করা হচ্ছে পুনর্ব্যবহারের জন্যে প্রতিটি ওয়ার্ডেই সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার কর্মীদের সঠিক সরকারী সুযোগ সুবিধা দিয়ে।


এর পাশাপাশি সর্বত্র সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কোথাও এই নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যাবহার বন্ধ করতে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গঠন করা। বাড়ি থেকে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ আলাদা আলাদা ভাবে সংগ্রহ করা হলেও মজুত করার সময় এক করে ফেলা হচ্ছে। সেটা যাতে না হয় তার জন্যে সঠীক ওয়েস্ট সেগ্রিগেশান ব্যাবস্থা গড়ে তোলা, সঠিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট গড়ে তুলতে ওয়ার্ড লেবেলে ভলেন্টারি কমিটি গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি রাজ্যের নিজস্ব ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট পলিসি তৈরি করা।

More from InternationalMore posts in International »
More from ScienceMore posts in Science »
More from SocialMore posts in Social »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.