পারিজাত মোল্লা : ৯ জুলাই, ২০২১। ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানার বরাকর পুলিশ ফাঁড়িতে হেফাজতে থাকা যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নজিরবিহীন পদক্ষেপ গ্রহণ করলো আসানসোল পুলিশ কমিশনারেট। একসাথে দশ পুলিশ কর্মীদের কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। যা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তো বটেই রাজ্যের এখনও পর্যন্ত কড়া ব্যবস্থা গ্রহণে এইরকম নজির নেই।এই দশ জন পুলিশ কর্মীদের মধ্যে পাঁচজন পুলিশ অফিসার এবং বাকি পাঁচ জন সিভিক।এই পাঁচজন পুলিশ অফিসারের মধ্যে চারজন এসআই পদমর্যাদা পূর্ণ এবং অপরজন এএসআই।সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চারজন সাব ইন্সপেক্টর হলেন অমরনাথ দাস, প্রশান্ত পাল, সুভাষ দাস, আলি রেজা ( আর্মস পুলিশ) । এসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর হলেন সরোজ কুমার তেওয়ারি। সেইসাথে পাঁচজন সিভিক হলেন – রবি রানা,কার্তিক রুইদাস, পুস্পল বন্দ্যোপাধ্যায়, মনু যাদব এবং রঞ্জিত সাউ।এতজন পুলিশ কর্মীদের কে সাময়িক বরখাস্ত করাতে আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের অন্দরে তুমুল চাঞ্চল রয়েছে। এই ঘটনায় খুশি নিহত যুবকের পরিবার। উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে এক যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানার বরাকর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা।পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, জেলার সদর আসানসোল থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘন্টা খানেকের চেস্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।আসানসোল পুলিশের তরফে পুলিশি হেফাজতের ঘটনায় সাথেসাথেই দুজন পুলিশ কর্মী কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পুরো ঘটনায় পুলিশের আভ্যন্তরীণে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকা সুত্রে প্রকাশ, গত সোমবার রাতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি থানার অন্তর্ভুক্ত বরাকর পুলিশ ফাঁড়ির তরফে মহম্মদ আরমান নামে এক যুবক কে ছিনতাইয়ের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে আনা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে ধৃত যুবকের পরিবার কে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল – ‘ গ্রেপ্তার করে আনার পর রাতে শারীরিক অসুস্থতার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ‘। ওই যুবকের পরিবার আসানসোল হাসপাতালে গেলে দেখে তাদের পরিবারের সন্তান মৃত অবস্থায় মর্গে পড়ে আছে। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শয়ে শয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে বরাকর পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর চালায়।ফাঁড়ির সামনে দুটি পুলিশের গাড়িতে,মোটরসাইকেল গুলিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বরাকর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীদের সাথে বিক্ষুব্ধদের হাতাহাতি শুরু হয়েছিল। এলাকায় অঘোষিত বন্ধ শুরু হয়ে যায় সেদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত । আসানসোল পুলিশ লাইন থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী এসে ঘন্টা খানেকের চেস্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেসময় । আসানসোল জেলা পুলিশ কমিশনারেটের তরফে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশের পাশাপাশি গত মঙ্গলবারই দুজন পুলিশ কর্মী কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নিহত পরিবারের দাবি -” কোন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হলো তা আমরা জানিনা ? গ্রেপ্তারের সময় এরেস্ট মেমোয় সই কার ছিল? তাও আমরা জানিনা। আমাদের দাবি রাতের দিকে পুলিশি হেফাজতে ব্যাপক মারধর চলেছে বলেই মৃত্যু ঘটেছে।ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত চাইছি,পাশাপাশি যে অফিসার তখন ফাঁড়িতে ডিউটিতে ছিলেন এবং ফাঁড়ির আইসির উপযুক্ত শাস্তি চাইছি আমরা”। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে আরও ১০ জন পুলিশ কর্মীদের সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশিকা জারি করেন আসানসোল পুলিশ কমিশনার।এই ১০ জনের মধ্যে ৫ জন পুলিশ অফিসার রয়েছেন। বাকি ৫ জন সিভিক বলে জানা গেছে।
নজিরবিহীন, বরাকরে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ১০ পুলিশ কর্মী সাময়িক বরখাস্ত……।
More from GeneralMore posts in General »
- মাত্র ২৮ বছর বয়সী মহিলা নারায়ণা হাসপাতাল আরএন টেগোর হাসপাতালে জীবন রক্ষাকারী হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছেন….।
- Diversity of India missing in advertising – says ASCI-UA report….
- TV9 বাংলা নিউজ সিরিজ ‘ভোটযুদ্ধ-দেশের লড়াই, পর্ব-৬…..।
- বেলেঘাটা অঞ্চলের প্রবীণ ডাক্তারবাবু এবং মোহনবাগান ক্লাবের অন্ধ ভক্ত সুদীপ রায় চিরতরে চলে গেলেন….।
- কামারহাটি তে INTTUC এর উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে চাঁদেরহাট….।
- Scripting India’s future by exercising voting rights….
Be First to Comment