Press "Enter" to skip to content

‘দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো’ ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় একটি টিভি শো। অনুষ্ঠানটি ১৯৮৬ থেকে ২০১১ অবধি পঁচিশ বছর ধরে চলেছিল…।

Spread the love

শু ভ জ ন্ম দি ন অ প রা হ উ ই ন ফ্রে

বাবলু ভট্টাচার্য : একজন নারীর জীবনে যত প্রকারের বাধা-বিপত্তি আসা সম্ভব সবই তিনি তার বাল্য ও কৈশোরে পার করে এসেছেন। শিশুবয়স থেকেই অত্যন্ত প্রতিকূল অবস্থার ভেতর দিয়ে লড়াই করে অপরাহ্‌ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করে নিজেকে এমন একটি উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যা টপকে যাওয়া আপাতদৃষ্টিতে এক প্রকার অসম্ভবই মনে হবে।

প্রচলিত ধারনা অনুযায়ী হলিউডে যদি কোনও নারীকে উচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে হয় তবে তার চোখ ধাঁধানো সুন্দরী হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু মোটাসোটা কৃষ্ণাঙ্গ অপরাহ্‌ আমেরিকান মিডিয়ার সবথেকে প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে সেই ধারণা বদলে দিয়েছেন। তিনি তা সম্ভব করেছেন নিজের অসাধারণ প্রজ্ঞা, ব্যক্তিত্ব, মানসিক শক্তি, লড়াকু মনোভাব আর মানুষকে কাছে টানার প্রতিভা দিয়ে।

তিনি ‘অপরাহ’ নামেই পৃথিবী বিখ্যাত। আসল নাম অপরাহ গেইল উইনফ্রে। মার্কিন টেলিভিশনের টক শো (Talk Show) -এর উপস্থাপিকা হিসাবে তিনি ১৯৮০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

১৯৭৬ সালে তিনি টেলিভিশন টক শো ‘পিপ্‌ল আর টকিং’ -এর উপস্থাপক হিসেবে শো টিকে দারুণ জনপ্রিয়তা এনে দেন। এরপর শিকাগো টিভি স্টেশন তাকে নিয়োগ দেয় এবং তিনি যেন নিজের মতো করে তার নিজের সকালের শো উপস্থাপনা করতে পারেন সে সুযোগ করে দেয়। পরবর্তীতে তিনি তার নিজের নামে ‘দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো’ শুরু করেন, যা ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় একটি টিভি শো। অনুষ্ঠানটি ১৯৮৬ থেকে ২০১১ অবধি পঁচিশ বছর ধরে চলেছিল। ২০১১ সালে অপরাহ তার নিজের টিভি নেটওয়ার্ক ‘অপরাহ উইনফ্রে নেটওয়ার্ক’ (OWN) চালু করেন।

বর্তমানের একজন অত্যান্ত সফল টিভি উপস্থাপক, সফল উদ্যোক্তা, অভিনেত্রী, প্রযোজক, জনহিতৈষী অপরাহ্‌ উইনফ্রের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে মিসিসিপির একটি ক্ষূদ্র ফার্মিং কমিউনিটিতে মারাত্মক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে।

অল্প বয়সেই তার বাবা-মায়ের মাঝে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায় যদিও তিনি তার মায়ের সাথে বসবাস শুরু করেন, কিন্তু মায়ের সাথে থাকা অবস্থায় কিশোরী অপরাহ তার মায়ের (ভার্নিটা) বিভিন্ন পরিচিত পুরুষ আত্মীয় এবং একাধিক বন্ধুদের দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে আর সহ্য করতে না পেরে তিনি মায়ের আশ্রয় ছেড়ে বাবার সাথে বসবাস করার জন্য ন্যাশভিলে পাড়ি জমান। অপরাহ-এর বাবা ছিলেন একজন নাপিত এবং ব্যবসায়ী। বাবার কাছে আসার পর তার অবস্থা একটু একটু করে ভাল হতে শুরু করে।

আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত টক শো ‘দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো’ তাকে একাধিক এমি অ্যাওয়ার্ড এনে দিয়েছে। এই শো টেলিভিশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রচারিত বলে গণ্য। নিজে ম্যাগাজিন প্রকাশের পাশাপাশি তিনি একজন শক্তিমান সাহিত্য সমালোচক এবং অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড মনোনীত অভিনেত্রী।

মাত্র উনিশ বছর বয়সে সেখানে অপরাহ তার রেডিও পেশা শুরু করেন স্থানীয় সান্ধ্যকালীন খবর উপস্থাপনার মাধ্যমে। পরে অবশ্য তাকে উপস্থিত বক্তব্যে পারদর্শিতা দেখে দিবাকালীন টক শো’ উপস্থাপন করতে দেয়া হয়। শিকাগোর একটি স্থানীয় রেডিওর তৃতীয় সারির একটি টক শো’ যখন অপরাহর হাত ধরে প্রথম সারিতে জায়গা করে নিল তখনই অপরাহ নিজের প্রডাকশন কোম্পানি খুললেন এবং আন্তর্জাতিক প্রচারে চুক্তিবদ্ধ হলেন।

অপরাহ গেইল উইনফ্রে ১৯৫৪ সালের আজকের দিনে (২৯ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি রাজ্যের ছোট্ট শহর কসি-আসকোয় জন্মগ্রহণ করেন।

More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »
More from LifestyleMore posts in Lifestyle »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.