মোল্লা জসিমউদ্দিন : ১৯ জুলাই, ২০২১। অবশেষে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের ভ্যাক্সিন শিবির নিয়ে সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হলো মামলা। এই স্পেশাল লিভ পিটিশন টি দাখিল করেছেন আইনজীবী অজিত মিশ্র।ইতিপূর্বে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন, তবে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের সিটের উপর আস্থা রেখে এখনই সিবিআই তদন্তর দরকার নেই বলে নির্দেশ দিয়েছিল।তাই মামলাকারী সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছেন। মামলাকারীর দাবি সুপ্রিম কোর্টের দাখিল হওয়া পিটিশনে – ‘ কোনরকম রিপোর্ট ছাড়াই ওই ভ্যাক্সিন ভুয়ো ছিল,তা কিভাবে জানা গেল? বহু রাঘববোয়াল এই কান্ডে জড়িত’। ফরেন্সিক তদন্তের রিপোর্ট ছাড়া জানা সম্ভব নয় ওই ভ্যাক্সিন টি ভুয়ো বলে জানিয়েছেন মামলাকারী। অপরদিকে কসবার ভুয়ো ভ্যাক্সিন কান্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি মামলা দাখিলের প্রাথমিক কাজ সেরে ফেলেছে।’ টি ওয়ান ‘ রুজু হয়েছে।
কলকাতার সিটি সেশন কোর্টে এফআইআর এর জন্য পিটিশন দাখিলের জন্য তারা প্রস্তুত। গত ২২ জুন কলকাতার কসবায় ভুয়ো ভ্যাক্সিন শিবিরের পর্দাফাস করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। তখন উঠে আসে ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের জালিয়াতির নানান অতীত। এইবিধ ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দাখিল হয়েছিল ৪ টি মামলা। যারমধ্যে আগেই ১ টি মামলা খারিজ হয়েছিল। গত মাসে বাকি ৩ টি মামলাও খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখার্জি ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল দেবাঞ্জন দেব নিয়ে মামলা গুলি।রাজ্যের তরফে আদালতে তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা পড়েছিল।তা আদালত সন্তুষ্ট। তবে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে হলে সিবিআই তদন্তর নির্দেশ দেওয়া হতে পারে বলেও আদালত তা জানিয়েছে।রাজ্যের তরফে এডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানিয়েছিলেন – ‘ এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব সহ ৪ জন কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৭ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। ৫০ জনের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ২ জন গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন।খুব তাড়াতাড়ি চার্জশিট দাখিল করা হবে’। মামলাকারীরা ধৃত দেবাঞ্জন দেব এর সাথে শাসক দলের নেতাদের বিভিন্ন ছবি উপস্থাপন করলে তখন রাজ্যের আইনজীবী রাজ্যপাল এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টানেন। ধৃত দেবাঞ্জন দেবের দেহরক্ষীর সাথে রাজ্যপালের ছবি ছিল।তাহলে কি রাজ্যপাল দোষী? আবার ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে অভিনেত্রীর ছবি ব্যবহার বিষয়টি তুলেন রাজ্যের আইনজীবী। তবে আদালত মামলায় পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল – ‘ এটি বিরল অপরাধ। দেবাঞ্জন দেব কিভাবে এই ঘটনা ঘটালো তা আশ্চর্যের ‘। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে আদালতের এহেন পর্যবেক্ষণ এই মামলায় আগামী দিনে রাজ্যের তদন্তে গাফিলতি দেখা দিলে তা সিবিআই তদন্তর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।তদন্তকারীরা জানিয়েছেন – ‘ওই শিবিরে ভুয়ো ভ্যাক্সিনে কোভিশিল্ড এর লেভেল ছিল।অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব ইমেলে থেকে সিরাম কর্তৃপক্ষ কে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।আইপি আডড্রেস খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা দাখিল হলো।
Be First to Comment