Press "Enter" to skip to content

দুরারোগ্য রোগ জয় করে বিস্ময় তরুণ কোরক বিশ্বাস এগিয়ে চলেছে…………

Spread the love

গোপাল দেবনাথ:কলকাতা, ১মার্চ ২০২০ জীবনের লড়াইতে আমরা সবাই লড়ি। জীবন সংগ্রামের লড়াই। কিন্তু বিশ্বে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের লড়াই অনেক কঠিন।

কেননা তাঁদের লড়তে হয় কঠিন ব্যাধির সঙ্গে। ১৭বছরের তরুণ কোরক বিশ্বাস একজন বঙ্গসন্তান। ৭মাস বয়স থেকে সে লড়ছে ডাউন সিনড্রোম রোগের সাথে।

সমীক্ষা বলছে, পৃথিবীতে প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হয়। এই শিশুদের বয়স বাড়ে, কিন্তু বয়সের বয়স বাড়ে না। বয়স আটকে থাকে ৮-৯বছরের শিশুর মত। আই কিউ লেভেল হয় ৫০। যা ওই ৮-৯বছরের মত।

এই ডাউন সিনড্রোম রোগটির আর এক নাম ট্রাইসোমি ২১। কেননা মানুষের ২১ নম্বর ক্রোমোজোম থাকে দুটি ক্রোমোজোম। এই সব রোগে আক্রান্তদের থাকে আর একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোম।এখানেই সমস্যা।

১৯৫৯ সালে বিজ্ঞানী জিরোম লিজুইন এই ক্রোমোজোম ত্রুটির বিষয়টি আবিষ্কার করেন। কোরকের বাবা কল্লোল বিশ্বাস এবং মা সরমা বিশ্বাসের সন্তান সুখের স্বপ্ন যখন চুরমার হয়ে যায়, তখন তাঁরা নতুন লড়াই শুরু করেন। এই রোগে প্রয়োজন অতিরিক্ত স্নেহ, অতিরিক্ত ভালোবাসা।

কোরকের বয়স যখন ৫ বছর তখন দক্ষিণ কলকাতার নোবেল মিশন এর কর্ণধার লীনা বর্ধন এর সঙ্গে পরিচয়। নতুন চ্যালেঞ্জ নেন লীনা বর্ধন। তিলে তিলে কোরকের জীবন গড়ার কারিগর হযে লীনা বর্ধন অসাধ্য সাধন করেছেন। কোরকের আজ আর এক নাম লোটাস বাড।

সম্প্রতি নোবেল মিশন কোরক বিশ্বাস কে সম্বর্ধনা প্রদান করল কলকাতা প্রেস ক্লাবে। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন নৃত্য শিল্পী ও সমাজসেবী অলকানন্দা রায়, বিশ্বখ্যাত দাবাড়ু দিবেন্দু বরুয়া, শিক্ষিকা রুমা মুখার্জী প্রমুখ।
কোরকের সম্বর্ধনা পাওয়া তার অধিকার। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হেলায় হারিয়ে সে নৃত্য প্রতিভার অসাধারণ স্বাক্ষর রেখেছে।

না হলে সেন্টার ফর কালচারাল এফেয়ারস্ গভর্মেন্ট অফ ইন্ডিয়া তাকে গৌড়ীয় নৃত্যের জন্য পুরস্কৃত কেন করবে? কেন দেবে ন্যাশনাল স্কলারশিপ? রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় তাকে দিয়েছে জুনিয়ার ডিপ্লোমা তার রবীন্দ্র নৃত্যের জন্য। ইতিমধ্যে ২০১৪ সালে রাজ্য সরকার পুরস্কৃত করেছে।

২০১৬ সালে পেয়েছে বালশ্রী পুরস্কার, এই বছর পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী বাল শক্তি পুরস্কার। দেশজুড়ে বিভিন্ন মঞ্চে কোরক তার শিল্পস্বত্তার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। শুধু দেশ নয়,বিদেশেও তার প্রতিভার সাক্ষী থেকে অভিভূত হয়েছেন মানুষ। মানসিক ও শারীরিক সীমাবদ্ধতা জয় করে কোরক যখন নৃত্যের ছন্দে মঞ্চ মাতায়, কোরকের মা বাবার চোখে ঝরে তৃপ্তির অশ্রু।

সে অশ্রুর স্বাদ কিন্তু লবণাক্ত নয়, সে অশ্রুর স্বাদ বড়ই মধুর। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মৌ গুহ।
তথ্য সহায়তা:- সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *