নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩।কলকাতার টাউন হলে, বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়ের ২৫১তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়। এই মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পাবলিক রিলেশনস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, কলকাতা চ্যাপ্টার। তাদের উদ্যোগে সম্প্রতি কলকাতার টাউন হলে রামমোহন প্রেমীদের ভিড় জমে। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সূচনা হয় এই অনুষ্ঠানের। এরপর আপন গতিতে এগিয়ে চলে অনুষ্ঠান। তারপর অতিথি বরণ করা হয়েছে । সমাজ সংস্কারক রাজা রামমোহন রায়ের ২৫১তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয় । রাধানগর পল্লী সমিতির সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশিয়ানিক হিস্ট্রি অ্যান্ড আফেয়ার্সের গার্ডিনার অধ্যাপক সুগত বসু। সতীদাহ প্রথা রদ করার পাশাপাশি সমাজ হিতকর নানা দিক তুলে ধরেন তিনি তাঁর বক্তব্যে। আলোকপাত করেন রামমোহনের জীবন দর্শন সম্পর্কিত বিষয়েও।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার নিক লো; কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার; ইনফিনিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্র চামারিয়া, এবং ওমদয়াল এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ সোসাইটির সেক্রেটারি অলোক টিবরেওয়াল।
সমাজের উন্নতির জন্য অবদান রয়েছে এমন কিছু ব্যক্তিত্বের হাতে এই অনুষ্ঠানে ‘রাজা রামমোহন রায় অ্যাওয়ার্ড অফ এক্সেলেন্স’- এর স্বীকৃতি তুলে দিয়েছে ; পাবলিক রিলেশনস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার কলকাতা চ্যাপ্টার। সেই সম্মাননা প্রাপকদের তালিকায় ছিলেন – প্রখ্যাত সন্তুর বাদক পণ্ডিত তরুণ ভট্টাচার্য্য, সমাজ বদলের স্বপ্নে অঙ্গীকার বদ্ধ প্রখ্যাত শিল্পী অলকানন্দা রায়, বিখ্যাত ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র, থিয়েটার ও চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সক্রিয় আর্কাইভিস্ট ড. দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও থিয়েটারের বহু পরিচিত ব্যক্তিত্ব চৈতী ঘোষাল এবং বিখ্যাত ব্যাকরণবিদ-লেখক ড. পরেশ চন্দ্র দাস। এছাড়াও সমাজসেবী শেখ মালেক নওয়াজ এবং দুই সাংবাদিক শুভদ্যুতি দত্ত এবং দূর্গাদাস বন্দোপাধ্যায়কে সংস্থার পক্ষে বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়।ঐ উল্লেখ্য, রাধানগর পল্লী সমিতির সম্পাদক বাসুদেব বসু’কে “ভারত পথিক” – বিশেষ সম্মান জানানো হয়। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা রাজা রামমোহন রায় ও পল্লী সমিতির মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়ন। যা সামগ্রিক ভাবে প্রশংসার দাবি রাখে।
ঐ সন্ধ্যায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন ছিল। সঙ্গীত পরিবেশন করে বৈকালি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা, (উপদেষ্টা প্রমিতা মল্লিক) নৃত্য পরিবেশন করে সায়নী চাওড়া কত্থক নৃত্যাঙ্গন, এবং আবৃত্তি পরিবেশনায় ছিলেন মুনমুন মুখার্জি। এছাড়াও রাধানগর পল্লী সমিতির সদস্যরা ও আরও অনেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। পাশাপাশি রাজা রামমোহন রায় মেমোরিয়াল মিউজিয়াম ও রাধানগর পল্লী সমিতির পক্ষ থেকে রামমোহন সম্পর্কিত বেশ কিছু বিরল ছবি ও বই-এর প্রদর্শনীর আয়োজনও নজর কাড়ে।
এ প্রসঙ্গে, পাবলিক রিলেশনস সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া, কলকাতা চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান সৌম্যজিৎ মহাপাত্র বলেন, ‘রাজা রামমোহন রায়ের জীবন-চর্যা নিয়ে বাংলার মানুষের যে সচেতনতা ও সেই ঐতিহ্য বজায় রাখতে যে তারা কতখানি অঙ্গীকারবদ্ধ, এই অনুষ্ঠানে তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ” – সহমত অন্যান্যরা।
Be First to Comment