Press "Enter" to skip to content

টমাস আলভা এডিসন। বিখ্যাত বিজ্ঞানী। বৈদ্যুতিক বাতি, কিন্টোগ্রাফ ও ফোনোগ্রাফ তাঁর বিখ্যাত আবিষ্কারগুলোর কয়েকটি, যা মানুষের জীবনযাপনকে আমূল পাল্টে দিয়েছিল…..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ ট মা স আ ল ভা এ ডি স ন

বাবলু ভট্টাচার্য : টমাস আলভা এডিসন। বিখ্যাত বিজ্ঞানী। বৈদ্যুতিক বাতি, কিন্টোগ্রাফ ও ফোনোগ্রাফ তাঁর বিখ্যাত আবিষ্কারগুলোর কয়েকটি, যা মানুষের জীবনযাপনকে আমূল পাল্টে দিয়েছিল।

বাবা স্যামুয়েল ও মা ন্যান্সি এডিসনের সবচেয়ে ছোট এবং সপ্তম সন্তান ছিলেন এডিসন। এডিসনের বাবা ছিলেন কানাডা থেকে নির্বাসিত একজন রাজনৈতিক কর্মী।

স্কুলশিক্ষিকা মায়ের প্রভাব অনেক বেশি ছিল এডিসনের ওপরে। অল্প বয়সেই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণে দুই কানেই কম শুনতেন এডিসন। বড় হতে হতে একরকম বধির হয়ে যান তিনি। ছোটবেলায় এটার জন্য নানা সমস্যায় পড়লেও বড় হয়ে সবার কাছে আজগুবি সব গল্প বানিয়ে বলতেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় কানে আঘাত পাওয়ার পর থেকে কানে কম শুনতেন- এমনটাই সবাইকে বলতেন এডিসন।

১৮৫৪ সালে এডিসনের পরিবার মিশিগানের পোর্ট হুরনে চলে যায়। সেখানেই স্কুলে যোগ দেন এডিসন কিন্তু তিন মাসের বেশি স্কুলে টিকতে পারেননি তিনি। পড়ালেখায় মনোযোগ নেই বলে তাঁর ওপর খুব বিরক্ত হতেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের এই বিরূপ আচরণ ছোট্ট এডিসনের মনে যেন খারাপ প্রভাব না ফেলে সেজন্য স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনে এডিসনের শিক্ষিকা-মা বাড়িতে বসেই তাঁকে পড়ানো শুরু করেন।

মাত্র ১১ বছর বয়সেই বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রচুর বই পড়ে ফেলেন এডিসন। জ্ঞানচর্চায় তাঁর আগ্রহ প্রকাশ পায়। বাকি জীবন অন্যদের উৎসাহ দিয়েছেন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার।

১২ বছর বয়সে এডিসন ভাবলেন তিনি যা শিখেছেন, সেগুলোকে কাজে লাগানো উচিত। বাবা-মায়ের কাছে অনুমতি চাইলেন বাড়ির কাছে গ্র্যান্ড ট্র্যাংক রেইল রোড লাইনে পত্রিকার হকার হিসেবে কাজ করার। হকার হিসেবে কিছুদিন কাজ করার পর এডিসন নিজেই ‘গ্র্যান্ড ট্রাংক হেরাল্ড’ নামের ছোট একটি পত্রিকা বের করা শুরু করেন। একদম নতুন তরতাজা খবর থাকায় ট্রেনযাত্রীরা এডিসনের পত্রিকা পড়া শুরু করেন।

নানা বিষয়ে আগ্রহ থাকার কারণে এডিসন নতুন কিছু পেলেই খুঁটিয়ে দেখতেন। একদিন তিন বছর বয়সী একটা বাচ্চাকে চলন্ত টেনে কাটা পড়া থেকে রক্ষা করেন এডিসন। সেই শিশুটির বাবা ছিলেন টেলিগ্রাফ অপারেটর। তাঁর কাছ থেকেই টেলিগ্রাফ চালানো শিখে নেন এডিসন।

১৫ বছর বয়সে টেলিগ্রাফ অপারেটর হিসেবে কাজ করা শুরু করেন এডিসন। পরের পাঁচ বছর আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করেন তিনি। এর মধ্যেই টেলিগ্রাফ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের প্রযুক্তি নিয়ে প্রচুর লেখাপড়া ও গবেষণা করেন তিনি।

১৮৬৬ সালে ১৯ বছর বয়সে কেন্টাকির লুইসভিলে চলে যান এডিসন। সেখানে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) হয়ে কাজ শুরু করেন। রাতের বেলায় ডিউটি থাকায় সে সময় তিনি লেখাপড়া এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করতেন।

১৮৬৮ সালে এডিসনের বাবা-মা দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের দেখতে বাড়িতে ফিরে যান এডিসন। বুঝতে পারেন এখন থেকে নিজের কাজ নিজেকেই করতে হবে। বাড়ি থেকে এডিসন চলে যান বোস্টনে। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন কোম্পানির হয়ে কাজ শুরু করেন। সে সময় বোস্টন ছিল আমেরিকার বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম কেন্দ্র।

এডিসন এই সুযোগটাকে কাজে লাগান। কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র তৈরির কাজে হাত দেন। এভাবেই তৈরি করে ফেলেন ইলেকট্রনিক ভোটিং রেকর্ডার, যার মাধ্যমে খুব অল্প সময়েই সুষ্ঠুভাবে ভোট গণনা করা যেত। ধীরে ধীরে বোস্টনে এডিসনের পরিচিতি বাড়তে থাকে। তাঁর উদ্ভাবিত পণ্য মানুষ কিনতে শুরু করে এবং এডিসন আরো নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করেন।

টমাস আলভা এডিসন ১৮৪৭ সালের আজকের দিনে (১১ ফেব্রুয়ারি) কানাডায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from InternationalMore posts in International »
More from ScienceMore posts in Science »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.