বাবলু ভট্টাচার্য : বিখ্যাত চিত্রগ্রাহক সৌম্যেন্দু রায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯০। ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত সমস্যায়।
আজ (২৭ সেপ্টেম্বর, বুধবার) বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাড়িতেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
‘তিন কন্যা’ থেকে ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘সোনার কেল্লা’ থেকে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’- সত্যজিৎ রায়ের ভাবনাকে যিনি ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে সেলুলয়েডে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সেই সিনেমাটোগ্রাফার সৌম্যেন্দু রায়।
১৯৫৪ সালে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে সৌম্যেন্দু রায়ের। সত্যজিতের প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’তে সুব্রত মিত্রের সহকারী হিসবে কাজ করেছিলেন সৌম্যেন্দু রায়। স্বাধীনভাবে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ শুরু করেন ১৯৬১ সালে।
সৌমেন্দ্যু রায় ১৯৩৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু বাবার চাকরির কারণে ছেলেবেলা কেটেছে মধ্যপ্রদেশের অন্তর্গত ছোট্ট রাজ্য ধরমজয়গড়-এ।
কলকাতার তীর্থপতি ইন্সটিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে কলেজে ভর্তি হলেও প্রথাগত শিক্ষা অসমাপ্ত রেখেই ১৯৫৪ সালে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে সহকারি হিসেবে যোগ দেন সৌম্যেন্দু রায়।
রামানন্দ সেনগুপ্ত, দেওজি ভাই, বিদ্যাপতি ঘোষ, সুব্রত মিত্র, জি কে মেহতা, দীনেন গুপ্ত প্রমুখ চিত্রগ্রাহকের সহকারি হিসেবে প্রায় পঞ্চাশটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি।
স্বাধীন চিত্রগ্রাহক হিসেবে প্রথম কাজ সত্যজিৎ রায় নির্মিত ‘তিন কন্যা’।
বাংলা হিন্দি, তামিল মিলিয়ে প্রায় বাহান্নটি কাহিনীচিত্র, আঠারোটি তথ্যচিত্র, সাতটি দূরদর্শনচিত্র এবং সাতটি ধারাবাহিকে কাজ করেছেন তিনি।
সত্যজিৎ রায় ছাড়াও তপন সিনহা, তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, রাজা সেন, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, অপর্ণা সেন প্রমুখ চলচ্চিত্র পরিচালকদের সাথে কাজ করেছেন।
সৌম্যেন্দু রায় শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হিসেবে ‘রজতকমল’ পেয়েছেন সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘আশনি সংকেত’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘শতরঞ্জ কা খিলাড়ী’ এবং রাজা সেন পরিচালিত ‘সুচিত্রা মিত্র’ তথ্যচিত্রের জন্য।
এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া ক্যামেরাম্যানস অ্যাসোসিয়েশন এবং তামিলনাড়ু সরকার কতৃক পুরস্কৃত হয়েছেন।
বাংলা, হিন্দি ছাড়াও চারটি তামিল ছবির চিত্রগ্রহণ করেছেন। চিত্রগ্রহণে পারদর্শিতার কারণে সরকারি পুরস্কার ছাড়াও বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, আর্ট ফোরাম ও আনন্দলোক পুরস্কার পেয়েছেন।
Be First to Comment