Press "Enter" to skip to content

ক্ষুদিরাম বসু ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ছিলেন……..।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ ক্ষুদিরাম বসু

বাবলু ভট্টাচার্য : ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট ভোর পাঁচটায় ব্রিটিশ সরকার ১৮ বছরের এক তরতাজা যুবককে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করাল। কারা ফটকের বাইরে তখন হাজারো জনতার কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে ‘বন্দেমাতরম’ স্লোগান।

ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে কারা কর্তৃপক্ষ যুবকটির কাছে জানতে চাইল, মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছা কী? যুবকটি এক সেকেন্ড অপেক্ষা না করেই নিঃশঙ্কচিত্তে বলে উঠলেন, ‘আমি ভালো বোমা বানাতে পারি, মৃত্যুর আগে সারা ভারতবাসীকে সেটা শিখিয়ে দিয়ে যেতে চাই।’

উপস্থিত কারা কর্তৃপক্ষ সেদিন বিস্মিত হলো যুবকটির মানসিক দৃঢ়তা আর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্রতি তীব্র ঘৃণাবোধ উপলব্ধি করে। সেদিনের সেই যুবকই হচ্ছেন অগ্নিযুগের মহান বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু।

ক্ষুদিরাম বসু ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ বিপ্লবী ছিলেন। ভগবদ্ গীতা পড়ে ক্ষুদিরাম ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি বঙ্গভঙ্গের চরম বিরোধী ছিলেন এবং বাংলা প্রদেশের এই বিভাজন তাকে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ করে।

বিলাতি দ্রব্য বর্জন, বিলাতি লবণের নৌকা ডোবানো প্রভৃতি কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে স্বদেশী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন ক্ষুদিরাম। মেদিনীপুরের এক প্রদর্শনীতে বিপ্লবী পত্রিকা ‘সোনার বাংলা’ বিলি করার সময়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে পুলিশকে মেরে পালিয়ে যান। এই অভিযোগে পরে গ্রেফতার হলেও বয়স কম বলে সরকার মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়।

বিপ্লবীদের গোপন সংস্থায় অর্থের প্রয়োজন পড়লে মেলব্যাগ লুট করেন। বিপ্লবী দল- কর্তৃক কলকাতার তদানীন্তন চীফ প্রেসিডেন্সী ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই কাজ সম্পন্ন করার দ্বায়িত্ব পড়ে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর উপর।

নিরাপত্তার কারণে সরকার কিংসফোর্ডকে মজফ্ফরপুরে বদলি করলে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী মজফ্ফর পুরে আসেন। ১৯০৮ সনে ৩০ এপ্রিল রাত ৮ টার সময় কিংসফোর্ডের গাড়ি ভেবে মজফ্ফরপুরের ইউরোপীয় ক্লাব থেকে ফেরা একটি গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা নিক্ষেপের ফলে দুজন ইউরোপীয় মহিলা (মিসেস কেনেডি, তার কন্যা এবং তাদের চাকর নিহত হয়।)

পরের দিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিচারে তার ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ১১ অগাষ্ট ১৯০৮ সনে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। ফাঁসির আদেশ শুনে ক্ষুদিরাম বসু বলেন, মৃত্যুতে তার কিছুমাত্র ভয় নাই।

ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ সালের আজকের দিনে (৩ ডিসেম্বর) পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুর জেলার হাবিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.