নিজস্ব প্রতিনিধি : কল্যাণী, ২ জানুয়ারি, ২০২৩। দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে ন্যাশনাল থিয়েটারের দেড়শো বছর। উল্লেখ্য ১৮৭২ সালের ৭ ডিসেম্বর চিৎপুর রোডে মধুসূদন সান্যালের বাড়িতে এই থিয়েটারের জন্ম। দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকটি এই থিয়েটারে প্রথম অভিনয় হয়। তারই স্মরণে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে সম্প্রতি শেষ হল দু’দিনের আন্তর্জাতিক আলোচনাসভা। প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মানস কুমার সান্যাল। তিনি জানান, “রুশা কম্পোনেন্ট ১০-এর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রকল্প চলছে। নাটক রচনা, অভিনয় ও পরিচালনায় দক্ষতার জন্যে ইতিমধ্যেই বাংলা বিভাগ দশ দিনের কর্মশালা করেছে। তারই অঙ্গ হিসেবে ছিল আলোচনাসভা ও প্রদর্শনী। শিক্ষিত বেকারদের স্বাবলম্বী করার জন্যে আগামীদিনে এই ধরনের উদ্যোগ আরও গ্রহণ করা হবে।” উল্লেখ্য, ১৫৩ জন গবেষকের লেখা নাটক বিষয়ক সংক্ষিপ্তসারমূলক গ্রন্থটিরও উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক তপন কুমার বিশ্বাস ন্যাশনাল থিয়েটারের উদ্ভব, বিবর্তন ও বর্তমানে তার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন। আলোচনাসভার প্রিন্সিপল ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক প্রবীর প্রামাণিক বলেন, “ইতিমধ্যেই আমরা নাটক বিষয়ে অনেককেই স্বনির্ভর করতে পেরেছি। ‘বাংলা নাটক, নাট্য আন্দোলন এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্য’ বিষয়টি আকর্ষণীয় করার জন্যে আলোচনাসভার পাশাপাশি ন্যাশনাল থিয়েটারকেন্দ্রিক একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।” উল্লেখ্য, দুষ্প্রাপ্য ছবি ও তথ্য দিয়ে সাজানো প্রদর্শনী গ্যালারিটি খুবই আকর্ষনীয় হয়েছে। অধ্যাপক নন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায় ও ড. শ্যামশ্রী বিশ্বাস সেনগুপ্তের সঞ্চলনা অনুষ্ঠানটিকে শ্রোতাদের কাছে খুবই মনোগ্রাহী করে তুলেছিল।
জানা গেল, এই আলোচনাসভায় যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছয়শোরও বেশি অধ্যাপক, গবেষক ও ছাত্রছাত্রী। পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক নাট্যচর্চাকে তুলে ধরার জন্যে কলকাতাসহ জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, মালদা, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া এইরকম পনেরোটি জেলার নাট্যব্যক্তিত্বরা বক্তব্য রাখেন। নাট্যশালাকেন্দ্রিক প্রদর্শনীর পাশাপাশি শুরু হয়েছে বাংলা বিভাগের বিভিন্ন অধ্যাপকের লেখা বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শনী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক অমলেন্দু ভূঁইয়া, উন্নয়ন আধিকারিক বি. কে. দে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক উৎপল মণ্ডল, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় রক্ষিত, দিল্লির জাকির হোসেন সরকারি কলেজের অধ্যাপক মুন্সি মহঃ ইউনুস, আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অর্জুন দেব সেনশর্মা, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জিৎ মণ্ডল, অধ্যাপক সুখেন বিশ্বাস সহ বিশিষ্টজন।
Be First to Comment