নিজস্ব প্রতিনিধি : কল্যাণী, ২ মে, ২০২৫। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সত্যজিৎকে জিনিয়াসের তালিকায় বসানো হয়েছে আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সত্যজিতের দ্বারা যে কতটা প্রভাবিত তা বলে বোঝানো যাবে না। ফ্রান্স তো তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। আমেরিকা-য়ুরোপের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও পর্তুগাল, তুরস্ক, তাজিকিস্তানেও তাঁকে নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। এইসব অকথিত ঘটনা নিয়ে শুক্রবার সত্যজিৎ রায়ের ১০৫তম জন্মদিনে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম সার্টিফিকেট কোর্স থেকে প্রকাশিত হল সত্যজিৎ গ্রন্থমালার পঞ্চম খণ্ড ‘অপরাজিত সত্যজিৎ’। পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হল একটি বিশ্বমানের আলোচনাসভা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কল্লোল পাল বলেন, “সত্যজিৎ সিরিজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সম্পদ। আমরা যদি সঠিকভাবে এগোতে পারি তাহলে যাদবপুর, কলকাতার আগে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটা উচ্চারিত হবে।” বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, যিনি সত্যজিতের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার স্মৃতিচারণ করেন। ফ্রান্সের প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনম্বর আদিত্য চৌধুরী সত্যজিতের ফরাসি সংযোগের কথা তুলে ধরেন। অভিনেত্রী চৈতী ঘোষাল বলেন, নিজেদের জীবন ও সমাজকে সঠিকভাবে বোঝার জন্য সত্যজিতের ছবি বারবার দেখা জরুরি।
অনেকেই বলেছেন, সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে খণ্ডে খণ্ডে গ্রন্থ সম্পাদনা নাকি বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে নজিরবিহিন ঘটনা। অনেকেই আবার প্রশ্ন করেছেন, সত্যজিৎ তো আর রবীন্দ্রনাথ নন, তবে তাঁকে নিয়ে কেন এত মাতামাতি? উত্তরে গ্রন্থ সম্পাদক সুখেন বিশ্বাস বলেন, “প্রাচ্যের উপনিষদীয় শৃঙ্খলা, পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদী নিষ্ঠা ও পরিশ্রম-মনস্কতায় সত্যজিৎ যেন স্বর্গীয় অনুভূতির জলসাঘর। তিনি তো বাঙালিয়ানার চিরন্তন প্রতিচ্ছবি।” এদিনের আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন প্রায় পাঁচ শতাধিক গবেষক, ছাত্রছাত্রী ও অধ্যাপক। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক নন্দিনী বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক প্রবীর প্রামাণিক, ড. তুষার পটুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন ড. শ্যামশ্রী বিশ্বাস সেনগুপ্ত।
Be First to Comment