Press "Enter" to skip to content

করোনা র কাছে হেরে চির বিদায় নিল কলাকার এওয়ার্ড এর চেয়ারম্যান অশোক কলানৌরিয়া…..।

Spread the love

গোপাল দেবনাথ : কলকাতা, ২৫ এপ্রিল ২০২১। করোনা অতিমারীর কাছে হার মানতে বাধ্য হলো আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু অশোক কলানৌরিয়া। আমরি হাসপাতালের ঢাকুরিয়া তে আজ সকালেই প্রয়াণ হলো। এই সংবাদ জানার পর সাংস্কৃতিক জগতের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। আমি আর অশোক ১৯৮৫ সাল থেকে লায়ন্স ক্লাবের সাথে যুক্ত। সেই থেকেই বন্ধুত্বের শুরু। এক সময় পারিবারিক বন্ধু হয়ে যাই। ওদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে আমাদের স্বপরিবারে ডাক আসতো। আমার তোলা ফোটো ও ভিডিওর ভক্ত ছিল অশোক। সদা হাসি খুশি অশোক সরু গোঁফ নিয়ে মিষ্টি মিষ্টি করে হাসতো। চেহারাটা মোটা সোটা হলেও মন ছিল খুবই নরম প্রকৃতির। আমরা একসাথে প্রথম দিন থেকে শুরু করে ছিলাম কলাকার এওয়ার্ড। এরপর ভারত নির্মাণ এওয়ার্ড। অশোকের পরিচালনায় কলাকার এওয়ার্ড আজ সর্বভারতীয় স্তরের পুরস্কার বলে বিবেচিত হয়। এই কলাকার এওয়ার্ড এমন একটি সম্মানের জায়গা যেখানে টলিউড, বলিউড, হলিউড ও ঢালিউড এর শিল্পী কলাকুশালীরা সম্মানিত হয়েছেন। অশোক সারা বছর ধরেই ব্যবসার সাথে সাথে এই দুই পুরস্কারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো সারাক্ষন। ওর ক্যানিং স্ট্রিটের অফিসে গেলে প্রায় সকলের জন্য চা, কফি, সিঙ্গারা বা স্যান্ডউইচ এর ব্যবস্থা থাকতো। বহু নতুন শিল্পী ওর সংস্থার কাছ থেকে পুরস্কৃত হয়ে পরবর্তী কালে ভারতবর্ষ সহ বিশ্বের নানা প্রান্তে সুনাম অর্জন করেছে।

অশোক কলাকার এওয়ার্ড এর চেয়ারম্যান হলেও সকল সদস্যদের পরামর্শ নিয়েই কাজ করতো। অতি সাধারণ জীবন যাপন করতো। লোক দেখানো ব্যাপার কখনো চোখে পড়েনি। ওর নিজের পরিবার পরিজনের প্রতি ছিল দায়িত্ববান। এই বাংলায় ভারত নির্মাণ এওয়ার্ড কে যথেষ্ট জনপ্রিয় করেছে । অশোক নিজেও ছিল সংস্কৃতি মনস্ক মানুষ। অফিসে একবার গল্পের ছলে বলেছিল ও ছোটবেলা থেকেই নাটক সিনেমা গান বাজনা পছন্দ করতো কিন্তু বাড়ির গুরুজনদের এই ধরণের কাজ একদম পছন্দ ছিল না। অশোকের মনে চাপা দুঃখ ছিল যেই সুযোগ এলো সেই মুহূর্তে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন সহ গুণীজনদের সন্মান জানানোর ব্যবস্থা শুরু করলো। আমি ওর বহু কাজের সাক্ষী ছিলাম। লায়ন্স ক্লাবে অশোকের ভূমিকা ছিল নজরকাড়া। সব ধরণের সেবা মূলক কাজে ওকে আমি ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেছি। ওর সব বাসস্থানেই আমি গিয়েছি সেই একই রকম আপ্যায়ন। অশোকের ছেলের বিয়েতে স্বপরিবারে খুবই আনন্দ করেছিলাম। স্মৃতি আজও টাটকা। ভাবতে পারছিনা অশোক আমাদের মধ্যে নেই। ওর হাসি মুখটা আর দেখতে পাবো না ভাবলেই কষ্ট হচ্ছে। ও যেখানেই থাকুক মিষ্টি মিষ্টি হাসি মুখেই থাকুক। অশোকের পরিবারের প্রতি রইলো আন্তরিক সমবেদনা। ওর অকাল প্রয়াণে সাংস্কৃতিক জগতের যথেষ্ট ক্ষতি হলো। অশোক কে সন্মান জানাতে ওর পরিচালিত দুটো পুরস্কার ই চালু থাকা উচিত এবং ওর নামেও একটি পুরস্কার চালু হওয়া প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.