Press "Enter" to skip to content

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) অতিমারীর মোকাবিলায় কলকাতায় প্রথম পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু করল নারায়ণ মেমোরিরাল হাসপাতাল…….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১৮ মে, ২০২১, বেহালার ম্যান্টনে একেবারে নতুন মাল্টি-স্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতালে আগামী ২০শে মে শুভ সূচনা হবে “সুইং অ্যাডসরপশন (পিএসএ) মেডিক্যাল অক্সিজেন প্লান্টের”। এই প্লান্ট মিনিটে ৬০০ লিটার অক্সিজেন তৈরি করতে পারবে। হাসপাতাল চত্বরেই তৈরি হবে এই প্লান্ট। শহরজুড়ে চলতে থাকা অক্সিজেনের স্বল্পতার কথা ভেবেই এই প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে। এজন্য বিনিয়োগ করা হয়েছে ২.১ কোটি টাকা। নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতালই কলকাতা শহরে সর্বপ্রথম এই ধরনের প্লান্ট চালু করল। এই হাসপাতাল বেহালা, দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সংলগ্ন এলাকায় দক্ষতার সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেয়। এই ধরনের প্লান্ট বসিয়ে চালু করতে সাধারণত ৩ থেকে ৪ মাস সময় লাগে। হাসপাতাল চত্বরের মধ্যে ৫x৩ মিটার জায়গাতেই মাত্র ৭ দিনে এই প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে। প্লান্টে মিনিটে ৬০০ লিটার অক্সিজেন তৈরি হয়। ২৪ ঘণ্টায় এই প্লান্ট তৈরি করতে পারে ৮৪০ সিইউএম অক্সিজেন। এই পরিমাণ অক্সিজেন দিয়ে ১২৬টি ৪৭ লিটারের বাল্ক অক্সিজেন সিলিন্ডার ভর্তি করা যায়।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশে বাতাসে থাকে ২১ শতাংশ অক্সিজেন। প্রেসার সুইং অ্যাডসরপশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে পাওয়া বাতাসকে সঙ্কুচিত করে তা থেকে অক্সিজেন আলাদা করে নেয় এই প্লান্ট। আলাদা করে নেওয়া এই অক্সিজেন বেশ কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পরিশীলিত হওয়ার পর মেডিক্যাল অক্সিজেন হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতালের সিইও সুপর্ণা সেনগুপ্ত গর্ব করে বলেন, ‘শুধু এই শহরেই নয়, সারা দেশেই মেডিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ফলে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গুণমানসম্পন্ন পরিষেবা চালু রাখা একটা দরকারি কাজ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেকারণে তৎক্ষণাৎ নিজেদের প্লান্ট বসানোর বিষয়টা আমাদের মাথায় আসে। এবং লিনডে ইন্ডিয়া লিমিটেডের সহযোগিতায় ঝড়ের গতিতে আমরা কাজটা সেরে ফেলি। যখন কোভিড সংক্রমণ বাড়ছে তখনকার ‘চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় করার কাজে’ পিএসএ মেডিক্যাল অক্সিজেন জেনারেটর প্লান্ট আমাদের সাহায্য করবে। ভবিষ্যতেও রোগীদের চিকিৎসায় এই প্লান্ট কাজে লাগবে। এখানে এমনই ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে একসঙ্গে ২০০ রোগীর অক্সিজনের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। যখন এই প্লান্ট তার পূর্ণ উৎপাদনক্ষমতা কাজে লাগাবে তখন প্রতি মিনিটে প্রতি লিটার অক্সিজেনে ৩৬ স্কোয়ার কিউবিক মিটার উৎপাদন হবে।’
এদেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে দরকার হয় মোট অক্সিজেন সরবরাহের ১৫ শতাংশ। বাকিটা শিল্প কারখানায় কাজে লাগে। কিন্তু ভারতে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় দেশের মোট অক্সিজেন সরবরাহের ৯০ শতাংশ – যার পরিমাণ দৈনিক ৭৫০০ মেট্রিক টন – পাঠানো হচ্ছে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে কোভিড সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের তীব্রতা শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছেছিল (তখন ভারতে দৈনিক সংক্রমণ ছিল প্রায় ৯০ হাজার)। সেই সময় অক্সিজেনের দৈনিক যত চাহিদা ছিল, এখনকার চাহিদা তার তিন গুণ। দু সপ্তাহ আগে এবছরের এপ্রিল মাসের গোড়ায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লক্ষ ৪৪ হাজার। ক্রিসিল রিপোর্ট অনুযায়ী এখন দৈনিক সংক্রমণের বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি, ৩ লক্ষেরও বেশি।
এই মুহুর্তে ভারতে দৈনিক উৎপাদন হয় ৭ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি তরল অক্সিজেন। এখন দেশে মেডিক্যাল অক্সিজেনের যা চাহিদা, এখনকার উৎপাদন দিয়ে সেই চাহিদা মেটানো যায়। কিন্তু সরবরাহে অসমতা এবং সিলিন্ডার মজুত ও পরিবহণ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে অনেক রাজ্যে অক্সিজেনের সংকট দেখা দিয়েছে।
অতিমারীর সময় হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ পরিষেবার গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতালের চেয়ারম্যান মনোজ শাহ বলেন, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আমরাই প্রথম হাসপাতাল যারা সবচেয়ে দ্রুতগতিতে সবচেয়ে সুবিধাজনক অক্সিজেন উৎপাদন প্রক্রিয়া কার্যকর করেছি। এতে বেহালার ৮ লক্ষ বাসিন্দা উপকৃত হবেন। সব হাসপাতালেরই নিজস্ব অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা থাকা দরকার। কারণ আগে থেকে অনুমান করা যায় না এমন সব অভূতপূর্ব কারণে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।’
সুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, ‘যদি ভারতে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ খুব বেশি বাড়তে থাকে, তাহলে এদেশে রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আশঙ্কাজনক মাত্রায় সঙ্কট দেখা দিতে পারে। কোভিড ১৯ রোগী ছাড়াও সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রেও এই সঙ্কট দেখা দিতে পারে। আগে থেকে পরিকল্পনা করা ও জরুরি অপারেশন, প্রসব, ডায়ালিসিস, রক্তদান শিবির—এই সব কিছুকেই এলোমেলো করে দিয়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। কোভিড রোগীর ডায়ালিসিস, গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল অপারেশন, কোভিড পজিটিভ নবজাতকদের বিশেষ এনআইসিইউ ও পিআইসিইউ, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এই সব জরুরি পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য তৈরি নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতাল।’
নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতাল সম্পর্কে
নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতাল (এনএমএইচ) বৃহত্তর কলকাতার একটি ২০০ শয্যার মাল্টিস্পেশালিটি টারসিয়ারি কেয়ার হাসপাতাল। এখানে রয়েছে বিশ্বমানের পরিকাঠামো এবং অত্যাধুনিক পরিষেবা। রয়েছেন ৮০ জনেরও বেশি বিশিষ্ট কনসালটান্ট। এই হাসাপাতালে রয়েছে ২৪x৭ ইমারজেন্সি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার, রয়েছে ৪৮টি আলাদা করা প্রেসারাইজড আইসিইউ বেড, পজিটিভ প্রেসার ও ল্যামিনার ফ্লো সহ ৫টি অপারেশন থিয়েটার যেখানে রয়েছে জটিল অপারেশনের জন্য দরকারি সব ধরনের আধুনিক গ্যাজেট। সেন্টারস অফ এক্সেলেন্সের মধ্যে রয়েছে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, রেসপিরেটরি মেডিসিন, নিউরোলজি, অর্থোপেডিকস, গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি, সব ধরনের ওপিডির সুবিধা, ৩৬০ ডিগ্রি ডায়াগনস্টিকস পরিষেবা এবং ২৪x৭ চালু থাকা ফার্মেসি। রয়েছে ওষুধের হোম ডেলিভারির সুবিধা। তাছাড়া নতুন নতুন বিভাগ চালু করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

নীচে যেসব বিভাগগুলির কথা উল্লেখ করা হল সেগুলির মাধ্যমে নারায়ণ মেমোরিয়াল হাসপাতাল ক্রমাগত আপনার কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে:

বিভাগ :
নিউরোলজি, মেডিসিন, অর্থোপেডিকস, সার্জারি, নেফ্রোলজি, ইউরোলজি, পেডিয়াট্রিকস, রেসপিরেটরি মেডিসিন, ইএনটি, অপথ্যালমোলজি, সাইকিয়াট্রি, জেরিয়াট্রিকস মেডিসিন, অঙ্কোলজি, ফিজিক্যাল মেডিসিন, ডারমাটোলজি, হাউপারটেনশন ক্লিনিক, ডায়াবেটিক ক্লিনিক, গায়নোকোলজি, অবস্টেট্রিকস, ফার্টিলিটি ক্লিনিক, ডেন্টাল ডিপার্টমেন্ট এবং গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি।

ডায়াগনস্টিক পরিষেবা;
১.৫ টেসলা এমআরআই
৩২ স্লাইস সিটি
ইউএসজি, কালার ডপলার
টিএমটি, ২ ডি ইকোকার্ডিওগ্রাফি
পিএফটি, ব্রঙ্কোস্কোপি
ইইজি, ইএমজি, এনসিভি
ইসিজি, হল্টার মনিটরিং
স্লিপ স্টাডি
এক্স রে (পুরোপুরি ডিজিটাল)
আই, ইএনটি ও ডেনটিস্ট্রি

ইমার্জেন্সি কেয়ার:
৭ শয্যার ইমার্জেন্সি
ট্রমা কেয়ার
সব ইমার্জেন্সি বেডে মনিটর ও ভেন্টিলেটার
মাইনর প্রসিডিওর রুম

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *