মোল্লা জসিমউদ্দিন –
সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গেল বেঞ্চে এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে মামলার শুনানি চলে। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্রের কাছে আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছেন। নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কম নাম্বার পেয়ে পরীক্ষার্থীরা কিভাবে নিয়োগপত্র পেল, যেখানে বেশি নাম্বার পাওয়া পরীক্ষার্থীরা বঞ্চিত নিয়োগের ক্ষেত্রে। বিচারপতি তাই কোন নিয়মে কম নাম্বার পাওয়া পরীক্ষার্থীরা নিয়োগপত্র পেলেন তার রিপোর্ট তলব করেছেন এদিন। ২০১৬ সালে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও রাস্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ১৬০০০ শুন্যপদের পরীক্ষা হয়। প্রায় ৮ লক্ষ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চতুর্থ কাউন্সিলিং পর্বে দেখা যায়, যারা বেশি নাম্বার পেয়েছে তারা নিয়োগপত্র পাননি। অথচ কম নাম্বার পাওয়া পরীক্ষার্থীরা চাকরি পেলেন। এইরুপ ৪০ জন পরীক্ষার্থীদের উদাহরণ টেনে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরীর হাত ধরে ১৯ জন পরীক্ষার্থী মামলাটি করেন। মামলাকারীদের মধ্যে মামনি বসাক, স্বাগতা বিশ্বাস অন্যতম।সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্ট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন এর কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। আগামী ১৬ ই ডিসেম্বর এসএসসিরর রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি । এই এসএসসির রিপোর্ট টি তলব করেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গল বেঞ্চ। এমন কি পদ্ধতি অবলম্বন করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন, যেখানে প্রাথীরা কম নম্বর পাওয়ার সত্ত্বেও নিয়োগপত্র দিতে বাধ্য হয়েছে তাঁরা। আদালত সুত্রে প্রকাশ, ২০১৬ সালে ১৬০০০ শূন্য পদের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি। বাংলা ,ইংরেজি ,ইতিহাস ,রাষ্ট্রবিজ্ঞান এই চারটি বিষয়ে নবম দশম ,একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণী শিক্ষক নিয়োগের জন্য রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর ৮ লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। চতুর্থ কাাউন্সিলিং পর্ব নিয়োগের আগে এসএসএসটি প্রার্থীদের চূড়ান্ত যোগ্যতা প্রমাণের পর পছন্দের স্কুল নির্ণয়ের সময়ে অর্থাৎ চতুর্থ কাউন্সিলিংয়ে দেখা যায় বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞানের বিষয় গুলিতে প্রায় ৪০ জনের মতো প্রার্থী যাঁদের প্রাপ্ত নম্বর মামলাকারীদের থেকে অনেক কম। এবং নিয়োগের তালিকার নিচের দিকে তাদের নাম থাকা সত্বেও তাদের নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠে । এই বিষয়টি এসএসসি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলাকারীরা। কিন্তু এসএসসি কতৃপক্ষের উদাসীনতা কারণে চলতি বছরের মামুনি বসাক, স্বাগতা বিশ্বাস সহ ১৯ জন প্রার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।মামলা শুনানি চলাকালীন মামলাকরীদের পক্ষের আইনজীবী আশীসকুমার চৌধুরী আদালতে সওয়ালে জানান – ” যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেন তাদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হলো। যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হলো তাদের মামলা কারীদের থেকেও অনেক কম নম্বর পেয়েছেন। তাহলে এভাবে পরীক্ষা নেওয়ার শুধু প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়’। বিচারপতি ভরদ্বাজ এসএসসির পক্ষের আইনজীবী সূতনু পাত্রের কাছে জানতে চান – কি ভাবে এত কম নম্বর পাওয়া সত্বেও কি ভাবে অগ্রাধিকার পেতে পারেন? কার ভিত্তিতে এভাবে যোগ্য প্রার্থীদের টপকে পেছনে র দিকে থাকা প্রার্থীদের সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার কারণ কি?আগামী ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে চারটি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কেন কম নাম্বার পেয়ে পরীক্ষার্থীরা চাকরির নিয়োগপত্র পেল, তার রিপোর্ট পেশ করতে এসএসসি কে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের সিঙ্গেল বেঞ্চ।
Be First to Comment