গোপাল দেবনাথ : কলকাতা, ১৯জুন, ২০২৫। টালিগঞ্জের বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এই সময়ে খুব অল্প সংখ্যক পরিচালক আছেন যাঁরা প্রতিনিয়ত নতুন প্রতিভার সন্ধানে ব্যাপৃত থাকেন। বিশিষ্ট অভিনেতা, প্রযোজক এবং পরিচালক প্রবীর রায় এমন একজন সতত উৎসাহী মানুষ যিনি তাঁর পরিচালিত ছায়াছবি এবং ধারাবাহিকে এমন অনেক নতুন শিল্পীকে সুযোগ করে দিয়েছেন সঙ্গীতে এবং অভিনয়ে।

“অগ্নিমন্থন” সিনেমায় বুদ্ধদেব গাঙ্গুলীর সংগীত পরিচালনায় কন্ঠদান করেছেন তনুশ্রী দেব। একটি ফেইসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে তনুশ্রীর গান শুনে পরিচালক প্রবীর রায় তাঁকে এই ছবিতে কন্ঠদানের সুযোগ দিয়েছেন। সুদূর শিলচরের বাসিন্দা তনুশ্রী গান রেকর্ডিংয়ের জন্য কলকাতা এসেছিলেন। ওর অসাধারণ কণ্ঠ ও গায়কী, রেকর্ডিংএ উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল ! এরকম আরও উদাহরণ আছে। প্রবীরবাবু পরিচালিত প্রথম ছবি “কাল মধুমাস” এর চিত্রনাট্য ও অভিনয় অশোক রায়ের প্রথম আবির্ভাব। এই ছবিতে প্রথম গান গেয়েছেন প্রবাল মল্লিক এবং রেশমী চক্রবর্তী ভৌমিক।

“যেতে নাহি দিব” ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন সাগ্নিক সেন এবং প্রীতি বসু।
শুধু গান নয়, ধারাবাহিক এবং ছায়াছবিতে অনেক নবীন শিল্পী অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। কালক্রমে অনেকে স্বনামধন্য হয়েছেন। প্রখ্যাত অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলীর প্রথম আত্মপ্রকাশ প্রবীর রায়ের ধারাবাহিক “বিচিত্র তদন্ত”এ। ছোট ও বড়ো পর্দার পরিচিত মুখ সায়নী মিত্র, অঙ্গনা বসু প্রথম সুযোগ পান প্রবীর রায়ের ধারাবাহিকে।

“কাল মধুমাস” ছবিতে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেছিলেন নীল রায়, সিরিয়াল অভিনেতা সুদীপ সরকার এবং রঞ্জিনী চট্টোপাধ্যায়। “যেতে নাহি দিব” ছবিতে প্রথমবার কাজ করেছেন পিউ ভট্টাচার্য , পিউ পল, পায়েল রায় এবং ছোট পর্দার পরিচিত মুখ মল্লিকা সিনহা রায়। সমসাময়িক সমাজ জীবনের জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি “অগ্নিমন্থন” সিনেমায় অনেক পরিচিত মুখের পাশাপাশি ওশনী দাস, ঋক দে ও বৈশালী মজুমদার নামে তিনটি নতুন মুখ দেখা গেছে। “অগ্নিমন্থন ” এ প্রায় ২০ বছর পর অভিনয়ে ফেরার কথা ছিল ৮০র দশকের ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রী “আলপনা গোস্বামী (বসু) ” ! কিন্তু করোনার জন্য সুদূর আমেরিকা থেকে আসতে পারেননি। সেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিরিয়ালের পরিচিত মুখ মৌমিতা গুপ্ত।
এ প্রসঙ্গে পরিচালক শ্রী রায় জানালেন, আমাদের চারপাশে কতো প্রতিভা সুযোগের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে। আমি সাধ্যমতো তাদের একটা প্ল্যাটফর্ম দেবার চেষ্টা করি যাতে তারা নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারে। নতুন শিল্পীদের দর্শকদের সামনে উপস্থিত করার মধ্যে এক অদ্ভূত আনন্দ আছে। আমার ছেলে নীল রায়ের “FFACE” নামে একটি সংস্থাও অভিনয় ও মডেলিংয়ের জগতে অনেক নতুন ছেলেমেয়েকে সুযোগ করে দিয়েছে। স্বস্তিকা দত্ত, শন ব্যানার্জী এদের মধ্যে কয়েকটি নাম। এই প্রতিবেদক শ্রী রায়ের সাথে প্রায় চার দশক ধরে পরিচিত। আশির দশকে হারানো সুর নামে দূরদর্শনের জন্য একটি গানের ধারাবাহিক তৈরি করে ছিলেন। সেই ধারাবাহিকে পাপিয়া অধিকারী এবং সোমা চৌধুরী সহ বহু নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীদের সুযোগ দিয়ে ছিলেন। সেখানে আমার ভূমিকা ছিল স্থির চিত্রগ্রাহকের। এ ছাড়াও অগ্নিমন্থন সিনেমায় আমাকে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দিয়ে ছিলেন।
এ রকম দরদী মানসিকতার জন্য পরিচালক প্রবীর রায়ের জন্য রইলো অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
Be First to Comment