স্মরণঃ এ পি জে আবদুল কালাম
বাবলু ভট্টাচার্য : তিনি এক অনুপ্রেরণার নাম। হঠাৎ আকাশে জেগে ওঠা এবং সহসা হারিয়ে যাওয়া কোনো ধূমকেতু তিনি নন। এ পি জে এক ইতিহাসের নাম। কিংবদন্তী। আদর্শবাদী। অসাধারণ ব্যক্তিত্বের এক চমৎকার প্রতিচ্ছবি।
একজন মানুষ কীভাবে শূন্য থেকে মহাশূন্যে উঠতে পারে, তার সবচেয়ে বড় এক দৃষ্টান্ত হলো এ পি জে। মাঝির ছেলে এ পি জে আবদুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি, ভাবাই যায় না। জীবনে বারবার হেরে গিয়ে জিতেছেন। মনোবল হারাননি। শিশুর মতো কোমল হৃদয়ের অধিকারী এই অসাম্প্রদায়িক মানুষটি। খেয়ে-না খেয়ে বেড়ে ওঠা তামিলনাড়ুর সেই এলোমেলো চুলের কালো মানুষটি কালোমানিকে পরিণত হয়েছিলেন।
এ পি জে আবদুল কালাম ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ছিলেন দারুণ প্রতিভাবান এক বাগ্মী। তাঁর বাকচাতুর্য মনকে ভরিয়ে দেয়। হৃদয়কে করে ইস্পাতসদৃশ। আকুঞ্জন দৃষ্টিকে করে প্রসারিত। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যেতেন তরুণদের জাগিয়ে তুলতে, তাদের ভেতরের জীবটি লালন-পালন করার জন্য। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় সাধারণ পোশাকের মোড়কে থাকা এই অসাধারণ মানুষটি।
আবদুল কালাম সুযোগ পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি হয়ে ভারতের দায়ভার নেওয়ার। সেবা দিয়ে গেছেন সুচারুভাবে। দুর্নীতির কালো বিড়াল টলাতে পারেনি পাহাড়সম ব্যক্তিত্বের এই মহামানবকে।
শিশুসুলভ এই মানুষটি অকপটে মিশে গেছেন সাধারণের ভেতর। কোট-টাই পরা শুরু করেছিলেন রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর। পোশাকে ছিলেন সাধারণ, কিন্তু ব্যক্তিত্বে ছিলেন অসাধারণ।
ভারতের ১১তম রাষ্ট্রপতি এ পি জে যেদিন রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়েছিলেন, সেদিন সেই জিনিসগুলোই তাঁর সঙ্গে ছিল, যেগুলো তিনি ভবনে প্রবেশের সময় সঙ্গে নিয়েছিলেন। তিনি অনুকরণীয় এবং দারুণভাবে অনুসরণীয়।
এ পি জে আবদুল কালাম ২০১৫ সালের আজকের দিনে (২৭ জুলাই) মেঘালয়ের শিলং শহরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট নামক প্রতিষ্ঠানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment