Press "Enter" to skip to content

এশিয়া বুক অব রেকর্ডস-এর স্বীকৃতি পেল ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : ত্রিপুরা, ১১ এপ্রিল, ২০২৫। আবার ইতিহাসের মাইল ফলক ছুঁল ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ। দেশের পর এবার মহাদেশ। ‘ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস’ এর পর এবার “এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস” – এর স্বীকৃতি পেল এই মেডিকেল কলেজের। শুক্রবার ১১ এপ্রিল  ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজে এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এই স্বীকৃতি সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। এশিয়া বুক অব রেকর্ডস-এর প্রতিনিধি ও প্রখ্যাত মুখোশ শিল্পী, সঞ্জয় ভোলাধীর, ত্রিপুরা বিধানসভার সম্মানীয় ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় বিষয়ক রামপ্রসাদ পাল ও কলেজের প্রিন্সিপালের হাতে এই সম্মান তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা বিধানসভার সম্মানীয় ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় বিষয়ক রামপ্রসাদ পাল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সত্যরঞ্জন দেববর্মা, রাজ্যের প্রবীন সাংবাদিক তথা সন্দন পত্রিকার সম্পাদক সুবল দে, সম্পাদক নব্যেন্দু ভট্টাচার্য, মেডিকেল কলেজের সহ-সভাপতি সৌগত পীট সহ আর বহু বিশিষ্টজন। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ, ছাত্র-ছাত্রী ও রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষার জগতে এটি এক অনেক বড় মাইল ফলক বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই স্বীকৃতির কারণ হিসাবে এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস জানিয়েছেন যে, “ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ, একটি নতুন রেকর্ড গড়েছে, যেখানে একটি মেডিকেল কলেজের উদ্বোধনী শিক্ষাবর্ষে সর্বাধিক রাজ্যব্যাপী ভর্তি হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে এশিয়া বুক অব রেকর্ডস-এর প্রতিনিধি সঞ্জয় ভোলাধীর জানিয়েছেন যে, এশিয়ার ৪৮টি দেশের মধ্যে এমন ঘটনার কোন নজির তাদের কাছে নেই। ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে কলেজটি ভারতের ২১টি রাজ্য থেকে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করেছে, যা এশিয়ার নবনির্মিত মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
রেকর্ডের পথচলা ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ২০২৪ সালে তাদের প্রথম শিক্ষাবর্ষ শুরু করে। কলেজের লক্ষ্য ছিল রাজ্যের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বমানের মেডিকেল শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা। প্রথম বর্ষেই এই কলেজে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছেন, যা দেশের অন্যান্য নতুন মেডিকেল কলেজগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমী ঘটনা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে প্রথম বছরে্ ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজে, ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের তালিকা দেখলে বোঝা যায়, এখানে ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি কোণ (মোট ২১ রাজ্য থেকে) থেকে শিক্ষার্থীরা এসেছে। ত্রিপুরা থেকে সর্বাধিক ৪৭ জন ছাত্রছাত্রী এখানে ভর্তি হয়েছে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, অসম, বিহার, ছত্তিশগড়, গুজরাট, হরিয়ানা, , হিমাচলপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, কেরালা, মহারাষ্ট্র, নাগাল্যান্ড, দিল্লি, ওডিশা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, এবং উত্তরাখণ্ড থেকে ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়তে এসেছে।
এই কলেজের লক্ষ্য ছিল রাজ্যের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বমানের মেডিকেল শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা। প্রথম বর্ষেই এই কলেজে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছেন, যা দেশের অন্যান্য নতুন মেডিকেল কলেজগুলোর তুলনায় ব্যতিক্রমী ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে যে, ‘ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ’ জাতীয় স্তরের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেরা স্বাস্থ্য শিক্ষা কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। প্রথম থেকেই এই কলেজ দেশের মেধাবী ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিবাবকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। এদিনের  অনুষ্ঠানে এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এর পক্ষে শ্রী সঞ্জয় ভোলাধীর অসামান্য এই স্বীকৃতির স্মারক, মেডেল ও মানপত্র তুলে দেন ত্রিপুরা বিধানসভার সম্মানীয় ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় বিষয়ক শ্রী রামপ্রসাদ পাল, ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের সহ-সভাপতি সৌগত পীট ও কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ সঞ্জয় নাথের হাতে।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডেপুটি স্পিকার ও স্থানীয় বিষয়ক রামপ্রসাদ পাল বলেন, “দেশের ২১টা রাজ্য থেকে এখানে ছাত্র ছাত্রীরা পড়তে এসেছে। আজ এই মেডিকেল কলেজ ‘মিনি ভারতবর্ষ’ গড়ে উঠেছে। এটা অহংকারের বিষয়। এখানকার এলাকবাসী ভাগ্যবান। ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ, আজ ত্রিপুরার গর্ব। ১০ বছরে মেডিকেল কলেজ চালু করা যায় না, আর এখানে কলেজের সভাপতি মলয় পীটের নেতৃত্বে ২ বছরের মধ্যে কলেজ পুরোদমে চালু হল, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। এটা অভাবনীয়।”
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “লাফালাফি করলে হবে না। কাজ করতে হবে। যারা কাজ করতে চায় তাদের আজই করতে দিতে হবে। তবেই সঠিক উন্নয়ন হবে।” তিনি বলেন যে যে দুই বছর আগে যখন তিনি এখানে এসেছিলেন, তখন এই এলাকা জঙ্গলে ভর্তি ছিল। আজ সেখানে প্রকৃত উন্নয়ন করা হয়েছে। মেডিকেল কলেজ করার সময় সাময়িক “যে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল, কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল” তার জন্য জনপ্রতিনিধি হিসাবে মার্জনা চেয়ে নেন তিনি।
কলেজের সভাপতি ডঃ মলয় পীট বলেন, “আজ অত্যন্ত আনন্দের দিন। এশিয়া মহাদেশের ৪৮ টি দেশের মধ্যে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে – ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ। যার স্বীকৃতি দিতে আজ এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসের প্রতিনিধি এসে সম্মাননা তুলে দেন। এই সম্মান, স্বীকৃতি স্বাধীন ট্রাষ্ট নয়, এই সম্মান স্বীকৃতি সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর, গোটা দেশের। এই সম্মানে আমরা সবাই আনন্দিত, গর্বিত এবং উজ্জীবিত। এই স্বীকৃতি আমাদের সকলকে আরো এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেবে।”
তিনি আর বলেন, “এই স্বীকৃতি আমাদের দেশ শুধু নয়, গোটা এশিয়া মহাদেশের মেডিকেল শিক্ষার ইতিহাসে এক নতুন দৃষ্টান্ত তৈরী করলো। এই স্বীকৃতি সমগ্র মেডিকেল শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন স্থাপন করল। ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এর পর এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসের স্বীকৃতি পাওয়া এই প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের উন্নত প্রশিক্ষণের দিক থেকে আরও বহু ধাপ এগিয়ে দেবে।”
আজকের এই কৃতিত্ব অর্জনে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। সেই উচ্ছাস তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ফুটে ওঠে। এদিন তারা ২১টি রাজ্যের সাংস্কৃতিক ও জীবন চর্চার বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের এই সাফল্য রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্র কে  আরও সমৃদ্ধ করবে এবং আগামী দিনে আরও বেশি শিক্ষার্থীকে এই কলেজের প্রতি আকৃষ্ট করবে।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.