সুদীপ্ত চন্দ : কলকাতা, ৪ অক্টোবর ২০২২। ঢ্যাঙ কুর্,কুর্, ড্যাং ড্যাড্যাং ড্যাং (নেপথ্যে)
বাবু: উফফ্ যত সব সাত সকালে ঢাক বাজাচ্ছে। এদের কি কোনো কান্ডজ্ঞান নেই!!!
গিন্নি: সেকি! তো ঢাক বাজবেনা! আজ তো সপ্তমী। কলাবৌ স্নান করাতে নিয়ে যাচ্ছে।
বাবু: সে যেই স্নান করতে যাক, এরকম ঘুম ভাঙিয়ে, ঢাক পিটিয়ে যাওয়ার কি দরকার! সবে আজ প্রথম ছুটির ঘুম, দিলে ভাঙিয়ে। আমরাও তো স্নান করতে যাই, কোই ঢাক বাজাই নাতো।
গিন্নি:তোমার যত বেয়াক্কেলে কথা। একি মুদিখানার দোকানের ওই বউটা নাকি, এ হলো কলাবৌ, তো ঢাক বাজবেনা!
বাবু: না, ঘুম ভাঙিয়ে এগুলো করা খুব অন্যায়। এর আগে হলো মহালয়া। সেই ছেলেবেলা থেকে ঘুম চোখে কানের কাছে রেডিও চালিয়ে দিত। মা দুগ্গা, মহিষাসুরের সাথে যুদ্ধ করলেন। সে খুব ভালো কথা। তা এত সকালে যুদ্ধ করার কি ছিল! একটু বেলার দিকে করলে কি মহিষাসুর পালিয়ে যেতেন! এই জানো, একটু বড় হলাম যখন, তখন ঘুম থেকে উঠে শুনতাম যুদ্ধ অলরেডি থেমে গেছে! মহিষাসুর মারা গেছেন।
গিন্নি: আমরা তো ছেলেবেলা থেকে অপেক্ষা করতাম এই দিনটার জন্য। কখন রেডিওয় শুনবো “জাগো তুমি জাগো”।
বাবু: আমি কি প্যাঁচা! এত জেগে থাকবো কেন! যত সব! এত খেটে অফিস করে ভোর বেলায় উঠে রেডিও শুনবো। ছুটি মানে ঘুমিয়ে একটু বেলা করে ওঠা। একটু আয়েস করে ঘুম। তা না করে অতো গুলো গান, কত কিছু বক্তব্য শুনবো! মহিষাসুরের কি হবে সে নিয়ে ভেবে আমি ঘুমাবোনা কেন!!! উঁনি কি আমার অফিসের বস?
গিন্নি: এ হলো শুভর সাথে অশুভের লড়াই। মাকে দেবতারা কত কিছু দিয়েছিলেন যুদ্ধের আগে। সব কি সুন্দর বর্ণণা আছে।জয় মা!
বাবু: আর তোমার বাপ তোমায় আমাদের বিয়েতে একটা রেডিও দিয়ে পাঠাল আমার সংসার যুদ্ধে। সাত সকাল থেকে ওটা চালিয়ে রাখো। সবাই আমার ঘুমের বিরুদ্ধে।
গিন্নি: তোমার যত বাজে কথা। বলছি কাল কিন্তু অষ্টমী, সকালে উঠে স্নান করে নেবে। অঞ্জলি দিতে যাব। আগের দুবছর করোনা হবে এই বলে গেলে না।ঘুমোলে।এবার কিন্তু যাব।
বাবু: বোঝো কান্ড! এর চেয়ে অফিস খোলা থাকলে ভালো হতো। এতো দেখছি ঘুমোতে দেবেনা। পুজোর নিয়মে কি ঘুমোনোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে? সব কেন এত সকালে!!! পারলে তো তোমারা দেখছি সন্ধিপুজোটাও সাত সকালে সেরে রাখো! এই জন্য ছোট্ট থেকে আমি কালী ভক্ত। রাতে হয়। সাত সকালে উঠতে হয়না।
*মরাল অব দ্যা গল্প-
সাত সকালেই উঠতে হবে এসব বড়ই কঠিন!
একটু আয়েসে ঘুমোতে দিন পুজোর পাঁচটা দিন।
Be First to Comment