নিজস্ব প্রতিনিধি : উলুবেরিয়া, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩।
আমাদের প্রাণের শহর কলকাতা স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চেন্নাই, মুম্বাই বা দিল্লীর সমমানের হলেও রাজ্যের জনসংখ্যার নিরিখে এখানে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ অপ্রতুল। আবার কলকাতা ছাড়া দুর্গাপুর, বা শিলিগুড়ির বাইরে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, সুপার স্পেসালিস্ট ডাক্তারবাবু সমন্বিত হাসপাতালের খুবই অভাব। তাই মানুষকে প্রয়োজনে দূর দূরান্ত থেকেও কলকাতায় নিয়ে আসতে হয়, এর ফলে অনেক সময়ে বিপদও ঘটে যায়। একই অবস্থা কলকাতার অতি কাছের শহর উলুবেড়িয়াতেও। এখানে তথাকথিত নার্সিং হোম ও হাসপাতাল অনেক থাকলেও কোন মানুষের লেটেস্ট ট্রিটমেন্টের সাহায্যে প্রাণ বাঁচাতে কলকাতা নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে উলুবেড়িয়ার মানুষকে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সুযোগ দিতে এলাকার সঙ্গে বিভিন্নভাবেযুক্ত কয়েকজন চিকিৎসক এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা করেন। সানরেস লাইফকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড পরিচালিত আজকের ‘সান মাল্টিস্পেসালিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনিস্টিক সেন্টার’ সেই স্বপ্নেরই বাস্তবায়ন। আজ শুধু উলুবেড়িয়া নয় আশপাশের সকল গ্রাম শহরের মানুষ জনের প্রয়োজনে এই হাসপাতালের যাত্রা শুরু হল।
গত সোমবার ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রাক্তন ফুটবলার ও উলুবেরিয়া পূর্ব কেন্দ্রের মাননীয় বিধায়ক শ্রী বিদেশ রঞ্জন বসু, বাগনানের মাননীয় বিধায়ক শ্রী অরুণাভ সেন, উলুবেরিয়া পৌরসভার সভাপতি শ্রী অভয়কুমার দাস, সহ-সভাপতি শেখ ইমানুর রহমান হাসপাতালের দ্বারোদ্ঘাটন করেন। বিশিষ্ট জনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের প্রাণপুরুষ প্রখ্যাত অর্থপেডিক সার্জন ডাঃ সুদীপ্ত ঘোষ, ডাঃ কৌশিক সরকার, ডাঃ দেবাশীষ রায় ও অন্যান্য চিকিৎসকেরা।
উলুবেরিয়ার উড়িষ্যা ট্রাংক রোডের যেখানে ‘সান মাল্টিস্পেসালিটি হসপিটালের অবস্থান, সেটিকে হাসপাতালপাড়া বললে অত্যুক্তি হয় না। কিন্তু শুরুতে ১২০ শয্যার এই হাসপাতাল শহরের অন্য সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের থেকে সবদিক থেকেই অনন্য। উলুবেড়িয়াতে সর্ব প্রথম এই হাসপাতালই নিয়ে এল ল্যামিনার ফ্লোর যুক্ত তিনটি অতাধুনিক মডিউলার অপারেশন থিয়েটার। পেসমেকার বসান বা হাঁটু প্রতিস্থাপনের মতো আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থার সঙ্গে থাকছে অত্যাধুনিক লেবাররুম ও সুলভ ডায়লিসিস ইউনিটও।
মঞ্চে উপস্থিত বক্তারা নতুন এই উদ্যোগকে শুভেচ্ছা জানান ও হাসপাতালের সাফল্য কামনা করেন। হাসপাতালের অন্যতম কর্ণধার ডাঃ সুদীপ্ত ঘোষ জানান প্রথমে পঁচিশটি ICU ও HDU শয্যা নিয়ে এবং সঙ্কটাপন্ন নবজাতকদের চিকিৎসার জন্য NICU নিয়ে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট চালু হলেও ভবিষ্যতে ICUর শয্যাসংখ্যা পঞ্চাশটি পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে যেমন সবসময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুরা থাকবেন তেমনই এখানকার ডায়গনিস্টিক সেন্টারেও থাকবে সবধরণের রক্ত পরীক্ষা ছাড়াও আলট্রা সনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, ইকো কার্ডিওলজি, এন্ডোস্কোপি, কোলনোস্কোপি, ইআরসিপি, ইইজির মতো অত্যাধুনিক পরীক্ষার সুযোগও।
Be First to Comment