**হাঁটু প্রতিস্থাপনের খুঁটিনাটি তথ্য জানানোর জন্য প্রায় দশ হাজারের অধিক হাঁটু প্রতিস্থাপনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসক ডাঃ বুদ্ধদেব চ্যাটার্জী’র মূল্যবান মতামত প্রদান করা হল…।**
সঙ্গীতা চৌধুরী : কলকাতা, ১৪ মার্চ ২০২২। হাঁটু প্রতিস্থাপন বা আর্থ্রোপ্লাস্টি প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে আমেরিকায়। যদিও ১৯৬৮ সালে প্রথম হিপ প্রতিস্থাপনের পর থেকেই হাঁটু প্রতিস্থাপনের চিন্তা- ভাবনা শুরু হয়ে যায়। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে হাতির দাঁতের তৈরি হাঁটু মানব শরীরে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে পঞ্চাশ বছর আগের প্রচেষ্টা কিন্তু বিফল হয় নি। বর্তমানে নতুন প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে অত্যন্ত উন্নত মানের হাঁটুর প্রতিস্থাপন হচ্ছে। তাই হাঁটু প্রতিস্থাপনের মত জটিল অপারেশন এই মুহূর্তে শুধু সারা বিশ্বেই নয়, কলকাতাতেও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাঁটু হল আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অস্থিসন্ধি। এটি দাঁড়ানো থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। ঊরুর হাড় বা থাইবোন বা ফিমারের নিচের প্রান্তের সঙ্গে টিবিয়ার ওপরের প্রান্ত ও প্যাটেলা সম্মিলিত ভাবে এই সন্ধিটি তৈরি করে। কিন্তু অস্টিওআর্থারাইটিস, রিউম্যাটয়েড আর্থারাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থারাইটিস বা অন্য কোন আঘাতজনিত কারনে আমাদের হাঁটু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে সাধারণ কাজকর্মসহ হাঁটাচলার ক্ষেত্রে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এমন কি শুয়ে বা বসে থাকলেও ব্যথা অনুভূত হয়, তখনই প্রয়োজন পড়ে হাঁটু প্রতিস্থাপনের। এখন এই অপারেশনের সাফল্যও অনেক বেশি মাত্রায়। চিকিৎসকদের পরিসংখ্যানে সেই সাফল্য নাইনটি ফাইভ পার্সেন্টের বেশি।
শুধুমাত্র পঞ্চান্নর উর্ধেই নয়, এই মুহূর্তে চল্লিশের কোঠায়ও হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে। তবে সংখ্যাটা খুবই কম। একজন বিশেষজ্ঞ অর্থোপেডিক এবং জয়েন্ট রিপলেসমেন্ট সার্জন বুদ্ধদেব চ্যাটার্জীর মতে, ” হাঁটুর ব্যথা মানুষের বহু দিন আগে থেকেই ছিল কিন্তু তখন সেটাকে বেশি বয়সের একটা সমস্যা হিসেবে ধরে নেওয়া হত। কারন তাদের কাছে কোন বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি বয়স্ক-বয়স্কাদের ব্যথা মুক্ত একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন উপহার দিচ্ছে। তবে শুধু বেশি বয়সীরাই নয়, বর্তমানে বহু অল্প বয়সীদেরও হাঁটুর সমস্যায় ভুগতে দেখা যায়। তাই প্রয়োজনে পঞ্চাশের নীচেও আজকাল হাঁটু প্রতিস্থাপন করতে হয়। তবে এই সংখ্যাটা ১০ পার্সেন্টের কম। রিউম্যাটয়েড আর রিউম্যাটয়েড ভ্যারিয়েন্ট এগুলো সাধারণত অল্প বয়সেই হয়, এসব ক্ষেত্রে একটু অল্প বয়সে অপারেশন করে দিতে হয় । কিন্তু অস্টিওআর্থারাইটিস যেটা বয়সকালে হয়, আজকাল অল্প বয়সীদের মধ্যেও এই আর্থারাইটিস হওয়ার একটা প্রবনতা দেখা দিয়েছে। এটা কোন জেনেটিক পরিবর্তন হচ্ছে না কি আমাদের লাইফস্টাইলের একটা অবদান সেটা বলা মুস্কিল। তবে একটা ব্যাপার বলতেই হয় যে অল্প বয়সীদের হাঁটু প্রতিস্থাপন এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে তার কারন প্রথমতঃ এখন হাঁটুর যে কোয়ালিটি আর ডিজাইন তা অনেকটাই উন্নত এরফলে তার স্থায়িত্ব বেড়ে গেছে এবং অ্যাক্টিভিটি অ্যাবজরভ্ করার ক্ষমতাও অনেক বেশি মাত্রায়। দ্বিতীয়তঃ এই হাঁটু এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে তাতে ২০-২৫ বছর ঠিক থাকবে আশা করা যায়, সেক্ষেত্রে পরবর্তীকালেও পুনরায় সহজেই হাঁটু প্রতিস্থাপন সম্ভবপর হচ্ছে নতুন প্রযুক্তির ফলে। যেটা কিছু বছর আগেও খুব একটা সহজসাধ্য ছিল না। “
এই প্রতিবেদক ও খুব কম বয়সেই অস্টিওআর্থারাইটিসের শিকার হয়, ব্যথাজর্জরিত অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে সুস্থ হওয়ার সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে হাঁটু প্রতিস্থাপনের পথই বেছে নেয়। হাঁটু এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত ছিল যে চল্লিশের কোঠাতে দুটো হাঁটুই প্রতিস্থাপন হয়। গত এক বছর পূর্বের এই পদক্ষেপের জন্য এই প্রতিবেদক একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন উপহার পেয়েছে । তাই যারা এই মুহূর্তে হাঁটুর সমস্যার মধ্যে রয়েছেন তাদেরও সুস্থ জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য প্রায় দশ হাজারের অধিক হাঁটু প্রতিস্থাপনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসক ডাঃ বুদ্ধদেব চ্যাটার্জীর মূল্যবান মতামত জানানো হল।
(১) প্রশ্ন: কবে থেকে আপনি হাঁটু প্রতিস্থাপন করছেন ?
উত্তর: বিদেশে বিভিন্ন জায়গাতে এই অপারেশন করেছি, ভারতে ১৯৯৮সাল থেকে শুরু করেছিলাম কিন্তু মাঝে কিছুদিনের জন্য আবার বিদেশে চলে যাই। তারপর ২০০৪ সাল থেকে পাকাপাকি ভাবে কলকাতাতেই কাজ শুরু করি। বর্তমানে বছরে প্রায় এক হাজার হাঁটু প্রতিস্থাপন করছি।
(২) প্রশ্ন: এই অপারেশনের সাফল্য কেমন?
উত্তর: বিশেষ সমীক্ষায় দেখা গেছে সারা বিশ্বে এই অপারেশনের সাফল্য প্রায় ৯৫- ৯৮ পার্সেন্টের মতো। তাতে আরও জানা যায় হাঁটু প্রতিস্থাপন এই শতাব্দীর একটা বিশেষ সফল অপারেশন। গোটা বিশ্বে এই অপারেশনের সাফল্যকে আরও বাড়ানোর জন্য গবেষণা চলছে। তার কারন হাঁটু একটি অতি জটিল অস্থিসন্ধি, একে নতুন করে বানানোটা খুবই কঠিন কাজ।
(৩) প্রশ্ন: হাঁটু প্রতিস্থাপনের সঠিক বয়স কি?
উত্তর: ষাট থেকে আশি বছরের আগে করে নিতে পারলেই ভাল। কারন অপারেশনের পরের ধাপই হল ফিজিওথেরাপি। এই ফিজিওথেরাপি যত ভাল হবে তত তাড়াতাড়ি সুস্থতা ফিরে পাওয়া যায়। কিন্তু বেশি বয়সে শরীরের চলন শক্তি কমে যায় , তাই ফিজিওথেরাপি ঠিক মত হয় না। আবার বেশি বয়সে পারকিনসন , নার্ভের সমস্যা বা অন্য নানা ধরনের সমস্যা থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে রেজাল্ট কম্প্রোমাইজ করতে হয়। তবে আরেকটা ব্যাপার হল হাঁটু অপারেশন করার একটা সময় আছে, ঠিক সেই সময়ের মধ্যে না হলে মাসেল কমজোর হয়ে যায় ,তখন অপারেশন করেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। তাছাড়া হাঁটু বেশি বিকৃত হয়ে গেলে তাকে সোজা করতে অনেক বেশি কাটা ছেঁড়ার প্রয়োজন হয়। তাই এই অপারেশনের ক্ষেত্রে বয়স এবং সময় দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
(8) প্রশ্ন : আজকাল তো পঞ্চাশের নীচেও কিছু অপারেশন হচ্ছে , তাহলে তাদের ভবিষ্যত কি ?
উত্তর: এই প্রসঙ্গটা একটু জটিল তাই এই বিষয়টি আমাকে একটু বোঝাতে হবে, দেখুন, এধরনের অপারেশন কিছুটা বয়স্ক অবস্থাতে করাই ভাল কারন এই যে প্রযুক্তিটা এর একটা আয়ু আছে। অনন্ত কাল ধরে চলে না। আজকের দিনে মোটামুটি পঁচিশ বছর ঠিক থাকে। তাই পঞ্চান্নর পরে এই অপারেশন করলে সাধারণত দ্বিতীয়বার আর প্রয়োজন পড়ে না। তবে খুব কম বয়সে এই অপারেশন হলে, রিভিশনের একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়। এক্ষেত্রে তাই গোটা বিষয়টি একটা ব্যালেন্স করতে হবে । মানুষের ব্যথা মুক্ত কর্মশীল সুস্থ জীবনে থাকাটা খুব প্রয়োজন। তাই বয়স বাড়াবার জন্য পাঁচ বছর শয্যাশায়ী থাকার কোন অর্থ হয় না। কারো চল্লিশ বছরেই হাঁটুর প্রবল সমস্যায় সে যদি দৈনন্দিন কাজ কিছুই করতে না পারে , সব কিছুতেই অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে তার অপারেশন করিয়ে নেওয়াই ভাল। তবে তাকে মানসিক ভাবে তৈরি থাকতে হবে যে পঁচিশ বছর পর আরেকবার অপারেশন করতে হবে। এই দ্বিতীয়বার অপারেশন আগে খুব একটা সহজ ব্যাপার ছিল না, কিন্তু বর্তমানে উন্নত মানের প্রযুক্তির ফলে রিভিশন অপারেশন এখন একাধিকবার করা সম্ভব। রিভিশন শুধু এক্ষেত্রেই নয়, প্রতিস্থাপিত হাঁটুর ইনফেকশন বা ফ্যাকচারের ক্ষেত্রেও রিভিশনের প্রয়োজন পড়ে।
(৫) প্রশ্ন: আগে অনেকেই হাঁটু প্রতিস্থাপনের জন্য বাইরে চলে যেতেন কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতাতেই হাঁটু প্রতিস্থাপনের সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এটার কারন কি ?
উত্তর: যে কোন অপারেশনের জন্য একটা উপযুক্ত ট্রেনিং – এর প্রয়োজন, আমাদের সময় ভারতে সেভাবে ট্রেনিং- এর ব্যবস্থা ছিল না তাই আমাদের বিদেশে যেতে হয়েছিল ট্রেনিং নিতে। কিন্তু এখন এই ট্রেনিং এ দেশেই নেওয়া যাচ্ছে। আমার কাছেই এখন ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে স্টুডেন্টরা ট্রেনিং নিতে আসে, পরবর্তীকালে তারাই এই অপারেশন করছে। ট্রেনিং এখন এদেশে সহজলভ্য তাই অপারেশনের পরিমানও বেশি। তাছাড়া প্লান্ট উন্নত মানের হয়ে গেছে , অপারেটিং কন্ডিশনস্ বেটার হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে, ইনফেকশন যাতে না হয় তারজন্যও যথার্থ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাই রেজাল্ট দেখে মানুষ ও এই অপারেশন করতে উৎসাহিত হচ্ছেন।
(৬) প্রশ্ন: যাদের দুটো হাঁটুই প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন আছে তাদের একটা হাঁটু প্রতিস্থাপনের পর আরেকটি হাঁটু প্রতিস্থাপনের জন্য কতদিনের ব্যবধান দরকার, না কি একসঙ্গে করলেও কোন অসুবিধা নেই ?
উত্তর: এর সেরকম কোন নিয়ম বা নির্দেশ নেই। এটা সব পেশেন্টদের জন্য এক হয় না। যাদের বয়স তুলনামূলক ভাবে কম , দুটো হাঁটুতেই সমান ভাবে কষ্ট আছে, যারা মেডিকেলি সম্পূর্ণ ফিট তারা এক সাথে দুটো হাঁটু করতে পারেন। কিন্তু যেহেতু পাঁচ- ছয় ঘন্টা এক টানা অ্যানাসথেসিয়া করতে হয়, তাই অনেকে পাঁচ – ছয় দিনের একটা গ্যাপ নিয়ে করে। তবে যাদের বয়স বেশি এবং অন্য শারীরিক সমস্যা আছে তাদের দেড় মাস বা তিন মাসের একটা গ্যাপ নিয়ে করাই ভাল। কিন্তু যে পেশেন্টের হাঁটুর খুব বিকৃতি থাকে সেক্ষেত্রে একসঙ্গেই অপারেশন করতে হয় । কারো যদি ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গলে বেঁকে থাকে তাহলে একটা হাঁটু অপারেশন করে সোজা করে দিলে সে হাঁটতে পারবে না।
(৭) প্রশ্ন: অপারেশনের কতদিন পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে ?
উত্তর: এটা পুরোপুরিই পেশেন্টের ফিটনেসের ওপর নির্ভর করে। তবে অপারেশনের দেড় মাস পর থেকে ধীরে ধীরে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা যায়। তিন সপ্তাহের পরই সিঁড়িও ভাঙা যায়।
(৮) প্রশ্ন: এই অপারেশনের পর কি কি বিধিনিষেধ মানতে হবে ?
উত্তর: লাফানোর সঙ্গে জড়িত অ্যাক্টিভিটিগুলো এই অপারেশনের পর ক্ষতিকারক, সেগুলো একেবারেই করা যাবে না। যেমন- জগিং। অনবরত যে অ্যাক্টিভিটি, সেগুলো করা যাবে। যেমন – সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, জোড়ে হাঁটা, ট্রেকিং, ডবল টেনিস খেলা ইত্যাদি। তবে এই অপারেশনের পর নীচু জায়গায় বসা ঠিক নয়, তাতে হাঁটুতে চাপ সৃষ্টি হয়ে হাঁটুর মেয়াদ কমে যায়।
(৯) প্রশ্ন: নতুন হাঁটু দীর্ঘদিন ভাল রাখার উপায় কি ?
উত্তর: নিয়মিত হাঁটুর ব্যায়াম করা।
হাঁটু প্রতিস্থাপনের পর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ফিজিওথেরাপি, অপারেশনের দ্বিতীয় দিন থেকেই তাই এই ফিজিওথেরাপি চালু হয়। সঠিক ভাবে ফিজিওথেরাপি না করলে হাঁটুর স্বাভাবিক কার্যকলাপ সম্ভব নয়, তাই ফিজিওথেরাপি একজন পেশেন্টকে কি ভাবে সুস্থ করে তোলে সে ব্যাপারে অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্ট কমল শাহ জানালেন, ” হাঁটু প্রতিস্থাপনের দুটো দিক আছে একটা হল গঠনমূলক দিক, আরেকটি হল কার্যকরী দিক।
অস্টিওআর্থারাইটিসের ক্ষেত্রে গঠন মূলক দিকটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাই চিকিৎসকরা সেটিকে বাদ দিয়ে নতুন হাঁটু প্রতিস্থাপন করেন। এরপর কার্যকরী দিকটি পুরোপুরি ফিজিওথেরাপিস্টের গাইডেন্সের ওপর নির্ভর করে। হাঁটুকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রথমতঃ মাসলগুলোর শক্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। দ্বিতীয়তঃ হাঁটুর জয়েন্ট রেঞ্জ অফ মোশন ইম্প্রুভ করা, মানে হাঁটুটা যাতে মোড়া যায় সেই চেষ্টা করা। তৃতীয়ত হল, যে কটা টাইট স্ট্রাকচারস ওখানে আছে যেমন- মাসল , লিগামেন্ট, টেন্ডেন, এমণ কি নার্ভ – সেগুলোকে স্ট্রেচ করে করে নতুন যে জয়েন্ট লাগানো হয়েছে তার সঙ্গে তাকে অ্যাডজাস্ট করানো। এই তিনটে প্রাথমিক কার্যকরী কাজ ফিজিওথেরাপিস্ট করেন। এছাড়াও একটা বিশেষ ব্যাপার মানতে হবে যে মোটামুটি মাসখানেক অবধি হাঁটুটাকে একটু প্রটেক্ট করে রাখতে হয়। যাতে জয়েন্টে কোথাও চোট না লাগে। কোন রকম আঘাত, ঝটকা – এগুলোর থেকে রক্ষা করতে হবে। শেষে আরেকটি বিষয় বলব যে হাঁটু অপারেশনের পর যে ব্যায়ামগুলো করতে হয় সেগুলোর একটা মাপ আছে, যেহেতু এত বড় একটা অপারেশন, তাই কাটা জায়গাতে যেমন তেমন করে ব্যায়াম করলে হবে না।
যেমন- কতটা তুলতে হবে, কোন ব্যায়ামটা কতবার করার দরকার আছে, দিনে কতবার করবে ইত্যাদি, এর জন্য একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের সঠিক গাইডেন্সের প্রয়োজন। ”
শেষে একথাই বলবো যে উপরোক্ত পথনির্দেশ অনুসরণ করলে এই প্রতিবেদকের মতো যে কেউই একটা সুস্থ জীবন ফিরে পেতে পারেন।
Be First to Comment