Press "Enter" to skip to content

উনিশ শতকের নব জাগরণের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা মাইকেল মধুসূদন দত্ত…….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ মা ই কে ল ম ধু সূ দ ন দ ত্ত

বাবলু ভট্টাচার্য : উনিশ শতকের নব জাগরণের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তিনি ছিলেন বাংলা কবিতার প্রথম আধুনিক কবি-পুরুষ। নব্য বাংলার সাহিত্য পূর্ণরূপে আত্মপ্রকাশ করে তাঁরই হাত ধরে।

বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী মধুসূদনের জীবন চরণ ছিল ততোধিক বিস্ময়কর। ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান হয়েছিলেন, ইংরেজি সাহিত্য রচনা করেছিলেন, সমাধিক খ্যাতি ও যশ অর্জনের জন্য। অনন্য প্রতিভার অধিকারী তিনি ছিলেন সরস্বতীর বরপুত্র। তাঁর সাহিত্য বোধ ও ইতিহাস বোধের তুলনা হয় না।

মধুসূদনের পিতা ছিলেন মহামতি রাজ নারায়ণ দত্ত। মা রাড়ুলী কাঠিপাড়া গ্রামের গৌরীচরণ ঘোষের কন্যা জাহ্নবী দেবী। রাজনারায়ণ দত্তের কোন কন্যা সন্তান ছিল না। তিন পুত্র সন্তান ছিল যথাক্রমে মধুসূদন দত্ত, মহেন্দ্রনারায়ণ দত্ত, প্রসন্নকুমার দত্ত— তাঁরা অল্প বয়সেই মারা যায়।

মধুসূদন ছিলেন পিতা মাতার বড় সন্তান। পড়াশুনা করেন প্রথমে কলকাতা হিন্দু কলেজে এবং পরে ১৮৪৮ সাল থেকে পিতার অর্থ সাহায্য বন্ধ হলে ওই বছরই কবি মাদ্রাজে গমন করেন। মাদ্রাজ যাবার পরেই তিনি ইংরেজ রমণী রেবেকা ম্যাক্টাভিসকে বিবাহ করেন।

১৮৪৯ সালে রচনা করেন ইংরেজি কাব্য ‘The Captive Ladies’। ১৮৫৬ সালে তিনি রেবেকাকে ত্যাগ করে এক ফরাসি মহিলা হেনরিয়েটার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং তাঁর রচনার স্বর্ণকালের সূচনা হয়।

১৮৫৮ সালে রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক। ১৮৬০ সালে ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নামে দুটি প্রহসন লেখেন। এই বছরেই সর্বপ্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখেন ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’। এরপর ১৮৬১ সালে রচনা করেন তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’। বিপুলভাবে বন্দিত এবং তীব্রভাবে নিন্দিত এই মহাকাব্য বাংলা কবিতার ইতিহাসে স্মরণীয়তম রচনা।

এর পর লেখেন ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’— যা তাঁর রচনার মধ্যে অন্যতম। কলকাতায় এসে কাজ করেন পুলিস কোর্টে কেরাণী ও পরে দোভাষী হিসেবে।

১৮৬২ সালে বিলেত গমন ব্যারিস্টারি শিক্ষা গ্রহণের জন্য গ্রেজইন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৮৬৩ সালে তিনি ফ্রান্সে গিয়ে ভার্সাই নগরে সপরিবারে থাকতে শুরু করেন। এই সময় তাঁর তীব্র অর্থাভাব দেখা দেয় এবং ঋণের দায়ে জেলে যাবার উপক্রম হলে, তাঁর লেখা পত্র পেয়েই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় দেড় হাজার টাকা পাঠিয়ে এবং পরে আরও টাকা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে, কবিকে সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।

ভার্সাইতে থাকাকালীন ইতালিয় ভাষার সনেট বাংলায় প্রবর্তনের চেষ্টা করেন— যার ফল তাঁর চতুর্দশপদী কবিতাবলী (১৮৬৬)। ১৮৬৭ সাল থেকে আইন ব্যবসা শুরু। ১৮৭০ সালে সুপ্রিম কোর্টে চাকরী গ্রহণ করেন।

১৮৭৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে অনাহারে রোগশয্যা চিকিৎসাহীনতায় ভূগে একই সালের ২৯ জুন আলিপুর দাতব্য চিকিৎসালয় (কলকাতা) মৃত্যুবরণ করেন।

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালের আজকের দিন (২৫ জানুয়ারি) যশোর জেলার সাগরদাঁড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from BooksMore posts in Books »
More from InternationalMore posts in International »
More from Writer/ LiteratureMore posts in Writer/ Literature »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *