Press "Enter" to skip to content

উইল স্মিথ কে বলা হয় হলিউডের শেষ নির্ভরযোগ্য তারকার একজন, যার নামেই ছবি হিট হয়, ছবির টিকিট বিক্রি বেড়ে যায়…..।

Spread the love

শু ভ জ ন্ম দি ন উইল স্মিথ

বাবলু ভট্টাচার্য : তাকে বলা হয় হলিউডের শেষ নির্ভরযোগ্য তারকার একজন, যার নামেই ছবি হিট হয়, ছবির টিকিট বিক্রি বেড়ে যায়। তিনি দেখিয়েছেন ছবির সাফল্যে তারকার নামটির ভূমিকা থাকে।

তার সঙ্গীতপ্রতিভারও কমতি নেই, র‍্যাপশিল্পী হিসেবে ৪টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড পুরেছেন নিজের ঝুলিতে। সোজাসাপ্টা কথা বলা, সবসময় হাসিখুশি মানুষটি উইল স্মিথ।

তিনি যে একজন কিংবদন্তী অভিনেতা, সে বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। দমফাটানো কমেডি, জমজমাট অ্যাকশন থ্রিলার, কিংবা ‘দ্য পারস্যুইট অফ হ্যাপিনেস’ এর মতো অশ্রুসিক্ত করে দেওয়া ড্রামা; সর্বত্রই তার সাবলীল বিচরণ।

তার পুরো নাম উইলার্ড ক্যারল স্মিথ জুনিয়র। তবে গালভরা এই নাম বাদ দিয়ে ওভারব্রুক হাইস্কুলের শিক্ষকেরা তাকে ডাকতেন ‘প্রিন্স’ কিংবা ‘প্রিন্স চার্মিং’ বলে। কারণ মুখের কথা আর দুষ্টু হাসি দিয়ে ভুলিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষমতা ছিল তার।

কট্টর ক্যাথলিক পরিবারে বেড়ে উঠেও দারুণ সংস্কৃতিমনা ছিলেন তিনি। একই স্কুলে পড়া ডিজে জেফরি টাউনসের সাথে দারুণ বনে যায় তার, শুরু করেন হিপহপ গান গাওয়া।

নিজের র‍্যাপ পারসোনার নাম দেন ‘ফ্রেশ প্রিন্স’। ১৯৮৬ সালে বেরোয় তাদের প্রথম গান ‘গার্লস অ্যাইন’ট অ্যানিথিং বাট ট্রাবল’। তাদের প্রথম অ্যালবামের নাম ছিল ‘রক দ্য হাউজ’। সেটি বিলবোর্ড শীর্ষ ২০০-তে জায়গা করে নেবার ফলে উইল স্মিথ একজন মিলিয়নিয়ার বনে যান। সেসময় তার বয়স ছিল মাত্র আঠারো!

গান-বাজনার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও মন ছিল ভালোই, ফলে স্যাট পরীক্ষায় বেশ ভালো স্কোর করেন। ছেলেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার বানানোর আশায় তার মা ক্যারোলিন ব্রাইট তাকে ভর্তি করিয়ে দেন বোস্টনের এমআইটির একটি প্রি-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে।

কিন্তু নিজের ইচ্ছা না থাকলে কী আর করা! পরের বছরেই তার দল সাড়া ফেলে দেয় ১৯৮৮ সালের রেকর্ড ভেঙে দেয়া গান ‘প্যারেন্টস জাস্ট ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড’ দিয়ে। জিতে নেন গ্র্যামি পুরস্কার। সেবছরেই প্রথম র‍্যাপ গানের ক্ষেত্রে গ্র্যামি দেবার রীতি চালু হয়েছিল।

প্ল্যাটিনাম সার্টিফিকেট পাওয়া গানের সাথে কমেডি মিউজিক ভিডিও দিয়ে নজর কাড়েন সবার। এর পরের অ্যালবামটি হাফ মিলিয়ন কপি বিক্রি করলেও আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেনি।

সিটকমটি চলার সময়েই ‘হোয়্যার দ্য ডে টেকস ইউ’-এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন তিনি। প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সিক্স ডিগ্রিজ অব সেপারেশন’ মুভিতে। তবে তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া মাইকেল বে’র অ্যাকশন কমেডি ‘ব্যাড বয়েজ’। স্মিথ ভালোভাবেই প্রথম সারির তারকাদের মধ্যে জায়গা করে নেন।

১৯৯৭ সালে স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রযোজিত সায়েন্স ফিকশন কমেডি ‘মেন ইন ব্ল্যাক’ এ অভিনয় করে আরেকবার বক্স অফিসে সাড়া ফেলে দেন তিনি। খ্যাতনামা অভিনেতা টমি লি জোনসের অভিনীত গম্ভীর ‘এজেন্ট কে’ এর সাথে হাসিখুশি ‘এজেন্ট জে’ এর রসায়ন দারুণ উপভোগ করেন দর্শকেরা।

সেই বছরই বিয়ে করেন অভিনেত্রী জাডা পিংকেটকে। পরের বছর জন্ম নেয় তাদের ছেলে জ্যাডেন স্মিথ। দুই বছর বাদে জন্ম নেয় তাদের মেয়ে উইলো।

১৯৯৮ সালে জেন হ্যাকম্যানের সাথে থ্রিলার ‘এনিমি অফ দ্য স্টেট’ এ অভিনয় করে দর্শকদেরকে আরেকটি ব্লকবাস্টার উপহার দেন।

বেশ কয়েকটি ব্লকবাস্টার মুভিতে অভিনয় করলেও কিছু একটার অভাব বোধ করছিলেন যেন। সেই অভাব মেটানোর সুযোগ এসে গেলো ২০০১ সালে। স্মিথ পেয়ে গেলেন বিশ্বখ্যাত বক্সার মোহাম্মদ আলীর ভূমিকায় অভিনয়ের সুবর্ণ সুযোগ।

এই হেভিওয়েট বক্সারের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য বিশাল প্রস্তুতি নিলেন এক বছর ধরে। সনি লিস্টন, জো ফ্র্যাজিয়ারের মতো বিখ্যাত বক্সারদের কাছে ট্রেনিং নিলেন, ওজন বাড়ালেন ৩৫ পাউন্ড। তার জীবনের সেরা পারফরম্যান্সটি দেন ‘আলী’ মুভিতেই, পেয়ে যান প্রথম অস্কার মনোনয়ন।

এর আগে রহস্যময় ব্যাগার ভ্যান্সের ভূমিকায় অভিনয় করেন ‘দ্য লিজেন্ড অফ ব্যাগার ভ্যান্স’ মুভিতে। তার সাথে আরো ছিলেন ম্যাট ডেমন এবং চার্লিজ থেরন। ২০০৩ সালে অভিনয় করেন ব্যবসাসফল ‘ব্যাড বয়েজ’- এর সিক্যুয়েলে। এবারে দুই পুলিশ বন্ধুকে দেখা যায় মিয়ামিতে ড্রাগ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে।

আইজাক আসিমভের ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত সায়েন্স ফিকশন অ্যাকশন মুভি ‘আই, রোবট’ মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। সেখানে মানুষকে সহায়তাকারী রোবটদেরকে সন্দেহের চোখে দেখা এক গোয়েন্দা পুলিশের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।

অ্যাকশন মুভি থেকে বিরতি নিয়ে ২০০৫ সালে ইভা ম্যান্ডেসের সাথে অভিনয় করেন ‘হিচ’ মুভিতে। কমেডি ঘরানার এই মুভিতে স্মিথকে একজন ডেটিং বিশেষজ্ঞ হিসেবে দেখা যায়, যিনি ক্লায়েন্টদের নারীমন জয়ের বিভিন্ন উপায় শেখান।

‘আলী’র পর ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য পারস্যুইট অফ হ্যাপিনেস’ মুভিটির মাধ্যমে স্মিথ তার ভক্তদের আরেকটি সেরা পারফরম্যান্স উপহার দেন। জীবনে একের পর বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়া এক অসহায় বাবার ভূমিকায় অভিনয় করে পেয়ে যান দ্বিতীয় অস্কার মনোনয়ন। নিজের ছেলে জ্যাডেনের সাথে অভিনয় করে বাবা-ছেলের রসায়ন পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন অনায়াসে।

২০০৭ সালে মুক্তি পায় তার ক্যারিয়ারের আরেকটি সুপরিচিত মুভি ‘আই অ্যাম লিজেন্ড’। ক্যান্সারের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে গিয়ে হঠাৎই সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ানক ভাইরাস। তার প্রাদুর্ভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে অধিকাংশ মানুষ। আক্রান্তরা পরিণত হয়েছে ‘ডার্ক সিকার’ এ, রাতের আঁধারে শিকারের খোঁজে বের হয় তারা।

২০০২ এর ‘মেন ইন ব্ল্যাক টু’ থেকে শুরু করে ২০০৮ এর ‘হ্যানকক’ পর্যন্ত টানা ৮টি মুভিতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। একটানা এতগুলো একশো মিলিয়নের উপরে আয় করা মুভিতে কাজ করার রেকর্ড নেই আর কোনো অভিনেতার। বেশিরভাগ ব্লকবাস্টারই জুলাই মাসে মুক্তি পাওয়ার কারণে তার ডাক নাম হয়ে যায়, ’মিস্টার জুলাই’।

ফোর্বসের মতে, বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ২৫০ মিলিয়ন ডলার। এ পর্যন্ত তার একক অ্যালবাম চারটি, ডিজে জেফরির সাথে যৌথ অ্যালবাম পাঁচটি।

উইল স্মিথ ১৯৬৮ সালের আজকের দিনে (২৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *