Press "Enter" to skip to content

ইন্দিরা গান্ধী স্বাধীন ভারতে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী, যিনি বাংলা জানতেন এবং বাঙালির প্রতি তাঁর প্রবল টান ছিল……।

Spread the love

স্মরণঃ শ্রী ম তী ই ন্দি রা গা ন্ধী

বাবলু ভট্টাচার্য : ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। ৩৯ বছর আগে আজকের দিনে নিজের দেহরক্ষী সৎবন্ত সিং এবং বিয়ন্ত সিং-এর গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।

১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর এলাহাবাদে তাঁর জন্ম। পিতা জওহরলাল নেহরু ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। একটি স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারে জন্ম হয়েছিল ইন্দিরার। উচ্চবিত্ত পরিবারের অনেকেই ছিলেন আইনজীবী। পরিবারে শিক্ষার একটি সংস্কৃতি ছিল।

ইন্দিরার প্রাথমিক শিক্ষা কনভেন্ট স্কুলে হলেও অবশেষে রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে তাঁর কলেজ শিক্ষার প্রাথমিক ভাগ শেষ হয়।

তিনিই স্বাধীন ভারতে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী, যিনি বাংলা জানতেন এবং বাঙালির প্রতি তাঁর প্রবল টান ছিল। ৪০-এর দশকে তিনিও জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা সংগ্রামে। বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন এবং ব্রিটিশ জেলে থাকার সময় তাঁর টিবির প্রাথমিক রোগ ধরা পড়ে। তাঁকে সুস্থ করতে নেহরু বিদেশের হাসপাতালে পাঠান। ফিরে এসে ফের রাজনীতিতে যোগ দেন।

নেহরুর মৃত্যুর পর ইন্দিরাকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসেন এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের দায়িত্ব দেন। ওই সময় রেডিও এবং সংবাদপত্রের প্রবল উন্নতি হয়।

১৯৬৬ তে ভারত-পাক যুদ্ধের পর লালবাহাদুর শান্তি চুক্তি করতে রাশিয়ার তাসখন্দে গেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে ছিলেন আরেক স্বাধীনতা সংগ্রামী মোরারজি দেশাই। কিন্তু কংগ্রেসের কোর কমিটি দলের অভ্যন্তরে ভোটাভুটির আয়োজন করে সেখানে ইন্দিরা ভোট জিতে প্রধানমন্ত্রী হন। এর পরই কংগ্রেসে ভাঙন শুরু হয়।

১৯৬৯ এ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন নিলাম সঞ্জীব রেড্ডি। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে ইন্দিরা বামপন্থী ভিভি গিরি’কে দাঁড় করিয়ে জিতিয়ে আনেন। কংগ্রেস ভেঙে যায়। ইন্দিরা টিকে যান সিপি আই-এর সমর্থনে। এরপর ১৯৭১ এ ভোট ডেকে ইন্দিরা বিশাল ভোটে জিতে আসেন।

এরমধ্যে ১৯৭১এর গোড়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেন বাংলাদেশকে।

বিরোধী নেতা বাজপেয়ি পর্যন্ত বলেছিলেন, ইন্দিরা আজ দেবী দুর্গা। ১৯৭৫ এ ইন্দিরার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে, তিনি ভোটের সময় একটি সংস্থার জিপগাড়ি ব্যবহার করেছিলেন। এলাহাবাদ কোর্টে ইন্দিরা পরাজিত হন। এরপর তিনি জীবনের সবচেয়ে ভুল কাজ করেন; পদত্যাগ না করে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন। এর প্রতিবাদ করলে তিনি দেশের সমস্ত বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠান।

ওই সময় পাঞ্জাবের একটি উগ্রপন্থী দল ধীরে ধীরে উঠে বিরোধী শক্তিকে দুরমুশ করতে থাকে। ১৯৭৭ এ ভোট হলে সদলে ইন্দিরার কংগ্রেস পরাজিত হয়। দেশের প্রধানমন্ত্রী হন জনতা পার্টির মোরারজি দেশাই। কিন্তু ওই দলটি অন্তর্কলহে শেষ হয় যায়।

ফের ভোট আসে ১৯৮০তে। তখন ইন্দিরা নতুন দল করেছেন কংগ্রেস (আই)। ফের বিশাল ভোটে জিতে আসেন তিনি। কিন্তু ধীরে ধীরে পাঞ্জাবের ওই উগ্র দল মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এরই মধ্যে প্লেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর।

পাঞ্জাবকে ঠান্ডা করতে ইন্দিরা আদেশ দেন, অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির, যেখানে উগ্রবাদীরা আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে গুলি চালাতে। নির্মমভাবে সুবিশাল শিখ নিধন হয়।

শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৮৪ সালের আজকের দিনে (৩১ অক্টোবর) দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন।

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.