শু ভ জ ন্ম দি ন আ শা ভোঁ স লে
বাবলু ভট্টাচার্য : আশা ভোঁসলে৷ সঙ্গীতপ্রেমী মানুষের কাছে এই নামটির পরিচয় দেবার প্রয়োজন পড়ে না৷ মূলত পপ সঙ্গীতের জন্যই পরিচিত আশা৷ কিন্তু গজল যখন গেয়েছেন, তখনও তিনি এক আদ্যন্ত বিস্ময়৷
সাতাশি বছরে এসেও কন্ঠের তারুণ্য আর লাবণ্যে আজও তিনি শ্রোতাদের বিমুগ্ধ করে রেখেছেন। পন্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকরের দ্বিতীয় কন্যা তিনি৷ বড়ো দিদির নাম লতা মঙ্গেশকর৷ ছোট্টবেলা থেকেই গান গাওয়া শুরু৷
মাত্র নয় বছরে পিতৃহারা আশা পরিবারের সঙ্গে প্রথমে পুণে হয়ে মুম্বইতে এলেন অল্পবয়সেই৷ পরিবারের প্রয়োজনে প্রায় শৈশব থেকে গান আর অভিনয়ের দুনিয়ায় পা দেওয়া৷ ১৯৪৩ সালে একটি মারাঠি ছবিতে প্লেব্যাক দিয়ে পেশাদারী জগতে পদার্পণ৷
কিন্তু সহজ পথে দিদি লতার মত থেকে গেলেন না আশা৷ মাত্র ১৬ বছর বয়সে দিদি লতার সেক্রেটারি ৩১ বছর বয়সী গণপতরাও ভোঁসলের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে৷ সুখের সংসার হল না৷ শ্বশুরবাড়িতে অসুবিধা, সমস্যা৷ কয়েক বছরের মধ্যে দুই সন্তানের হাত ধরে গর্ভবতী আশা ফিরে এলেন বাপের বাড়িতে৷ আবার গান গাওয়া শুরু হল বটে তবে ভালো জায়গাটা পেতে অনেকটা সময় লেগে গেল৷
পাঁচের দশকে প্রথম ব্রেক ও পি নায়ারের “সিআইডি” ছবিতে৷ ছয়ের দশকের মাঝামাঝি ‘তিসরি মন্জিল’ ছবিতে রাহুলদেব বর্মণের পরিচালনায় গান গাইতে এলেন আশা৷ তৈরি হল এক ইতিহাসের যাত্রা৷
হিন্দি ছবি, হিন্দি গান, বাংলা গান ইত্যাদির ভুবনে সে এক অসামান্য সময়৷ রাহুল-আশার যুগলবন্দীতে একের পর এক মনভরানো গান শুনে আমর্ম আনন্দিত হল মানুষ৷ সাতের দশকেই এই দুই শিল্পীর পরিণয়৷ আর ডি’র মৃত্যু পর্যন্ত যে দাম্পত্য অক্ষুন্ন ছিল৷
রান্না করা প্রিয় হবি শিল্পী আশা ভোঁসলের৷ পছন্দের রঙ শাদা৷ মঞ্চে তাঁকে শাদা পোষাকেই সর্বদা দেখা গেছে৷ উপমহাদেশে তো বটেই, প্রায় গোটা বিশ্বের সর্বত্রই জনপ্রিয় এই শিল্পীর গ্রহণযোগ্যতা বিশাল৷
সঙ্গীত জীবনে তিনি ১০০০টি চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন। অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত আশা ভোঁসলে ২০০১ সালে ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়াও সংগীতে অবদানের জন্য ২০০৮ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে। ২০১১ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাঁকে সর্বাধিক সংখ্যক গান রেকর্ডকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আশা ভোঁসলে ১৯৩৩ সালের আজকের দিনে (৮ সেপ্টেম্বর) মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেন।
Be First to Comment