শ্রীজিৎ চট্টরাজ / গোপাল দেবনাথ : ২৪ মার্চ ২০২২। সুকুমার রায় বলেছিলেন, গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, গোঁফ দিয়ে যায় চেনা। দিন বদলেছে। এখন আপনার পরিচয় আপনার ব্যক্তিত্ব দিয়ে। আপনার ব্যক্তিত্বকে শুধু পোশাক বা ফ্যাশন নয়, আপনার গাড়িটি বলে দেবে আপনি মানুষটি কেমন? কিছুদিন আগে পর্যন্ত গাড়ির দামের ওপর আর মডেলের ওপর নির্ভর করত গাড়ির মালিকের পরিচয়। এখন দামী গাড়ি অনেকেরই সংগ্রহে আছে। কিন্তু গাড়ির ব্যক্তিত্ব বলেও তো একটা কথা আছে। সেটা নির্ভর করে নিয়মিত আপনি গাড়িটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন কিনা সেটার ওপর।
গাড়ি যে শুধু একটা চলমান যন্ত্র নয়, সেকথা তো চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক তাঁর অযান্ত্রিক ছবিতে আগেই বলে গেছেন। কিশোরকুমার বলে গেছেন, চলতি কা নাম গাড়ি। শৌখিন গাড়ির মালিকদের কাছে এক সুসংবাদ নিয়ে এসেছেন দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে নাটোর পার্কের পিকনিক গার্ডেনে একটি কার কেয়ার স্টুডিওর কর্ণধার সূর্য প্রতীম মিত্র। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ইন্টারন্যশনাল ডিটেলিং অ্যাসোসিয়েশন ইন্ডিয়ান চ্যাপ্টার ও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
আমেরিকার জনপ্রিয় টার্টল ওয়াক্স পণ্যটির উৎপাদক সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তিতে একটি পরিষেবা সংস্থা খুললেন । প্রতিষ্ঠানের নাম কার কেয়ার স্টুডিও। অর্থাৎ আপনার গাড়ির প্রসাধনী রূপচর্চায় গাড়ি কোনও কারখানায় নয়, নিয়ে আসুন কার কেয়ার স্টুডিওতে। যেখানে আপনার প্রাণের চেয়ে প্রিয় গাড়ির চেহারায় শুধু আকর্ষণ বাড়াতে নয়, গাড়ির জেল্লা বাড়াতে হাজির রীতিমত আধুনিক গাড়ি পরিচর্যায় বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত একদল পরিষেবাকারী হাজির। নতুন হোক বা পুরানো আপনার গাড়ি টার্টল ওয়াক্সের জাদুতে বানিয়ে তুলুন অন্য গাড়ি মালিকের চোখে ঈর্ষার বস্তু। বাঙালির সঙ্গে এদেশে গাড়ির এক পুরানো সম্পর্ক আছে । তিরিশের দশকে টিটাগড়ে নিজের কারখানায় গড়ে ছিলেন এদেশের প্রথম স্টিম ইঞ্জিনের গাড়ি। নাম তার গোকুল চন্দ্র। কয়েকবছর পর বঙ্গতনয় বিপিনবিহারি দাস বানিয়েছিলেন তেলের জ্বালানির প্রথম গাড়ি।
যে গাড়ির ক্রেতা ছিল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়। সে গাড়ির যাত্রী ছিলেন মতিলাল নেহেরু এবং মদনমোহন মালব্য। ২১শতাব্দীতে আবার এক বাঙালি সূর্য প্রতীম মিত্রের হাত ধরে কলকাতার গাড়িপ্রেমীরা পাচ্ছেন এক নতুন যুগের সন্ধান।
গত ২৩ মার্চ বুধবার সন্ধ্যায় কার কেয়ার স্টুডিওর উদ্বোধন করলেন মার্কিন টার্টল ওয়াক্স এর ভারতীয় সংস্থার এম ডি সজন মুরুলি পুরাভঙ্গারা। কার কেযার স্টুডিওর পক্ষে সূর্য প্রতীম মিত্র জানালেন, দীর্ঘ দু বছর ধরে ভারতীয় আবহাওয়া, দূষণ ও জলের সঙ্গে কতটা মানানসই এই টার্টল ওয়াক্স তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছি। ফলাফল ইতিবাচক হওয়াতেই বিপণন ও পরিষেবায় এই বিশেষ ব্র্যান্ডটি এনেছি।
কলকাতায় গাড়ি প্রসাধনীর ক্ষেত্রে কার কেয়ার এক বৈপ্লবিক যুগের সূচনা করল তা বলাই যায়।
Be First to Comment