Press "Enter" to skip to content

আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্রক্ষেত্রে নানামুখী কাজ সম্পাদন করেছেন— কখনো সহকারী-সহযোগী পরিচালক, কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, কখনো পরিচালক- প্রযোজক হিসেবে….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ আ ম জা দ হো সে ন

বাবলু ভট্টাচার্য : কবিতা রচনা দিয়ে সাহিত্যজীবনের শুরু— ছাত্র থাকাকালেই ‘দেশ’ পত্রিকায় কবিতা ছাপা হয়। ছড়াও লিখেছেন। ‘৫০ দশকে ঢাকায় আসেন। বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেও জানা যায়। ঢাকায় এসে সাহিত্যচর্চার অংশ হিসেবে নাটক রচনা করেন। মঞ্চনাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করতে থাকেন।

গল্প-উপন্যাসও লিখেছেন— যার জন্য বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন। সাহিত্যকর্মের জন্য নানা পুরস্কারও পেয়েছেন; জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন নানা শাখায়। একুশে পদকও পেয়েছেন।

আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্রক্ষেত্রে নানামুখী কাজ সম্পাদন করেছেন— কখনো সহকারী-সহযোগী পরিচালক, কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, গীতিকার, অভিনয়শিল্পী, কখনো পরিচালক- প্রযোজক হিসেবে।

 

মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ (১৯৬১) চলচ্চিত্রে আমজাদ হোসেন প্রথম অভিনয় করেন। একই বছর মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’-এও অভিনয় করেন। তাঁর রচিত নাটক ‘ধারাপাত’ অবলম্বনে একই নামে ১৯৬৩ সালে সালাহউদ্দিন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যাতে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন।

এরপরেই জহির রায়হানের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে— জহির রায়হানের চলচ্চিত্রচর্চার সংগঠন ‘লিটল সিনে সার্কেল’-এর সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে নানাভাবে যুক্তও ছিলেন।

জহির রায়হান নির্মিত ‘আনোয়ারা’র (১৯৬৭) সংলাপ রচনা করেছেন আমজাদ হোসেন। কাজী জহিরের উর্দু চলচ্চিত্র ‘ভাইয়া’র (১৯৬৬) সহকারী পরিচালক ছিলেন। জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’য় (১৯৬৬) সংলাপ রচনা ও অভিনয় করেন। ‘জীবন থেকে নেওয়া’র (১৯৭০) সংলাপ রচনা করেন।

 

ফখরুল আলমের ‘মানুষ অমানুষ’ (১৯৭০)-এর ‘অমানুষ’ অংশটি আমজাদ হোসেনের গল্প অবলম্বনে নির্মিত। এতে তিনি অভিনয়ও করেন। জহির রায়হানের ‘লেট দেয়ার বি লাইট’-এ অভিনয় করেছেন।

নিজেও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। এককভাবে নির্মাণ করেন ‘জুলেখা’ (১৯৬৭)। নূরুল হকের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মাণ করেন ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৬৭)। এরপর তিনি এবং নূরুল হক, মুস্তাফিজ, মেহমুদ ও রহিম নেওয়াজ মিলে তৈরি করেন ‘দুই ভাই’ (১৯৬৮)।

আবার একক প্রচেষ্টায় নির্মাণ করেন ‘বাল্যবন্ধু’ (১৯৬৮)। একই বছর নূরুল হকের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মাণ করেন ‘সংসার’ (১৯৬৮)। দুই বছর পর এককভাবে তৈরি করেন ‘পিতাপুত্র’ (১৯৭০)।

তিনি নিজে যেমন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, তেমনি অন্যদের চলচ্চিত্র নির্মাণকর্মেও নানা শাখায় যুক্ত ছিলেন, অন্য নির্মাতাদের জন্য কাহিনি-সংলাপ লিখেছেন। খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’ (১৯৭৩) ও প্রমোদকার নির্মিত ‘সুজনসখী’র (১৯৭৫) কাহিনিকার তিনিই। মহম্মদ হান্নান নির্মিত ‘রাই বিনোদিনী’ (১৯৮৫) ছবিতে গীতিকার হিসেবে যুক্ত ছিলেন।

নিজে নির্মাণ করেছেন ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘আদরের সন্তান’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘কাল সকালে’।

‘গোলাপী এখন বিলেতে’– এটিই আমজাদ হোসেন নির্মিত শেষ চলচ্চিত্র।

উল্লিখিত চলচ্চিত্রগুলোতে তিনি কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা, গীতিকার, পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পে গীতিকার হিসেবে আমজাদ হোসেনের অবদানও কম নয়। তাঁর অনেক বিখ্যাত গান রয়েছে, যেমন—‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘বাবা বলে গেল আর কোনো দিন গান করো না’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘চুল ধইরো না খোঁপা খুলে যাবে’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ’, ‘আমি আছি থাকব/ভালোবেসে মরব’, ‘কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না’ ইত্যাদি।

২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর ৭৬ বছর বয়সে আমজাদ হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।

আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের আজকের দিনে (১৪ আগস্ট) জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন।

More from BooksMore posts in Books »
More from CinemaMore posts in Cinema »
More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.