সুদীপ্ত চন্দ : কলকাতা, ৬ অক্টোবর ২০২২।
গার্লফ্রেন্ড: এই আজ কখন মিট করছো?
বয় ফ্রেন্ড: (মনে মনে..আজ আবার!!!)। না, মানে আজ আমার শরীরটা একটু ঠিক লাগছে না। অনেক তো ঘুরলাম ঘূর্ণির মতো। আজ থাক।
গার্ল ফ্রেন্ড: ওমা, কাল তো পুজো শেষ। এই লাস্ট দিনটা একটু ঘুরব না?
বয় ফ্রেন্ড: তাহলে এবছরটা থাক। অনেক তো দেখলাম।সেই মহালয়ার আগে থেকে তো প্যান্ডেল হপিং শুরু করেছিলাম। এবার নয় থাক।
গার্ল ফ্রেন্ড: দিন, দিন তুমি ভীষণ ল্যাদ খোড় হয়ে যাচ্ছ !
বয় ফ্রেন্ড: বল কি!!! সেই মহালয়ার আগের থেকে প্যান্ডেলে, প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। তার আগে কুমোরটুলিতে। প্রায় প্রতিটা কুমোরের গোলায় দেখে এসেছ। সিংহের থাবার সাইজ, মহিষাসুরের দাঁতের সংখ্যা, সরস্বতীর বীণার তার কোন দোকানের কিছুই তো জানতে বাকি রাখোনি। রথের সময় কাঠামো বাঁধা, খুঁটি পুজো কিছুই বাদ দাওনি! আরো দেখতে হবে?
গার্ল ফ্রেন্ড: না, খুব বেশি দেখতাম না। এই শোনো না বলছিলাম, প্লুটো-টা কোথায় গো? শুনলাম ওখানে খুব বড় ঠাকুর হয়েছে।
বয়ফ্রেন্ড: (মনে,মনে… প্লুটো! সে তো অন্য গ্রহ। নিশ্চয়ই কেউ বদমাইশি করেছে।)
ও তো অনেক দূর। যেতে, যেতে পরের বছর পুজো চলে আসবে।
গার্লফ্রেন্ড: তুমি যাবেনা তাই এইসব বলছ। সৌরভ যে দিব্যাকে নিয়ে ঘুরে এল! ওরাই তো জানালো সেখানে নাকি খুব বড় ঠাকুর।
বয়ফ্রেন্ড:( মনে মনে- বুঝেছি সব সৌরভের কীর্তি। ট্রিট দিইনি বলে প্লুটোয় দুর্গা পুজো আমদানি করেছে।) কি মুশকিল আরে সে তো অন্য গ্রহ। সেখানে কি করে পুজো হবে।
গার্লফ্রেন্ড: ওমা, তাই নাকি! আমি তো ভাবলাম বারাসাতের দিকে হবে হয়তো। হচ্ছে ওর পুজোর পর!
যাক তাহলে কখন বেরোবে বলো?
বয়ফ্রেন্ড: (মনে মনে- উফ্ এতো দেখছি পশ্চিমবঙ্গের সব প্যান্ডেল ঘুরবে শপথ নিয়েছে। বিসর্জনের পর কৈলাশে না যেতে চায় আবার, মা ঠিক করে শিবের ঘরে ফিরলেন কিনা দেখার জন্য।)
গার্লফ্রেন্ড: কি গো কখন যাবে?এই শোনোনা সল্টলেকের দিকে আন্টার্টিকায় নাকি ঠাকুর অনেক প্রাইজ পেয়েছে।
বয়ফ্রেন্ড: এটাও কি সৌরভ বলেছে? সল্টলেকে আন্টার্টিকা?
গার্লফ্রেন্ড: কেন? এটাও গুল ?
বয়ফ্রেন্ড: তুমি কি পেঙ্গুইনদের সাথে ঠাকুর দেখার লাইনে দাঁড়াতে চাও? গিয়ে দেখো শীল মাছে পুজো করছে। সিন্ধু ঘোটক তোমায় শান্তির জল ছিটিয়ে দেবে।যত সব!!!
গার্লফ্রেন্ড: আর বলতে হবেনা। বুঝেছি। চলো তাহলে একটু খেয়ে আসি। আজই তো পুজো শেষ।
বয়ফ্রেন্ড: আবার কি খাবে? সেই শপিং করা থেকে খেয়েই চলেছি। উট পাখির ঘুগনি, বুড়ির মাথার পাকা চুল, বেদানার আচার, ওরাং ওটাং এর দুধের আইসক্রিম, ড্রাকুলার বাড়ির কেক ….কি বাকি আছে খাওয়ার। এরপর তো দেখছি অন্য গ্রহের খাওয়ার আনাতে হবে!
গার্লফ্রেন্ড: আচ্ছা, তাহলে আজকে থাক। তাহলে বরং কাল বেরোই।
বয়ফ্রেন্ড: অসম্ভব!( আৎকে উঠে)। কাল সকাল থেকে রাত আমার নতুন চাকরি জয়েনিং।
গার্লফ্রেন্ড: ওমা এটা তো আগে বলনি। কিসের চাকরি? তাও আবার দশমীতে জয়েনিং!
বয়ফ্রেন্ড: গঙ্গায় ঠাকুর ভাসানের কাঠামো তুলবো!!!
মরাল অফ দ্যা গল্প-
আলাদা করে কি বলতে লাগবে? গার্লফ্রেন্ড থাকলে আর বলতে লাগেনা।
Be First to Comment