বিশেষ প্রতিনিধি : কলকাতা, ১৪ মার্চ ২০২২। ৪৫ তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রতিদিনই বিভিন্ন মঞ্চে নানা ধরনের বই উন্মোচন হয়েছে। গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় শঙ্খ ঘোষ মঞ্চে ‘কবিতা সীমান্ত’-র সৌজন্যে প্রকাশ হলো চারটে বই। ১) শঙ্করী দাস-এর ‘ঝুলি ভরা চাঁদ’ ২)সোমনাথ রায়-এর ‘পুনশ্চ সনেট,’ ৩) স্বরূপ মন্ডল-এর ‘শূন্য’ এবং চতুর্থ বই অশোক দে-র ‘হা হা স্রোতস্বিনী’।
আনুষ্ঠানিক ভাবে বইগুলোর মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট কবি ও প্রকাশক দীপেন রায়, নমিতা চৌধুরী, ইমানুল হক এবং সৈয়দ হাসমত জালাল। সূচনালগ্নে নমিতা চৌধুরী শঙ্করী চৌধুরীর জীবন সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তাঁর কবিতার মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। দ্বিতীয় বক্তা ইমানুল হক সোমনাথ রায়-এর ‘পুনশ্চ সনেট’ কবিতার বইটির প্রশংসা করেন। মাইকেল মধুসূদন-এর সনেট সম্পর্কে মুগ্ধতায় বরাবরই আচ্ছন্ন। অনস্বীকার্য, তিনি শিরোধার্য! এখন যৌনবিষয়ক অনেক কবিদের কবিতা পড়লে বিবমিষা জাগে বললেন ইমানুল। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অশোক মিত্র-র উদ্ধৃতি প্রয়োগ করেন। প্রতি উত্তরে হাসমত বলেন হাংরি জেনারেশন বা কৃত্তিবাস পত্রিকার কেউ কেউ কবিতায় যৌনাঙ্গের প্রয়োগ করলেও সকলেই একই দর্শনের নন। ব্যতিক্রমী এবং এখনও প্রাসঙ্গিক আলোক সরকার, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, মণিভূষণ ভট্টাচার্য এবং শঙ্খ ঘোষ। বরং হাসমতের বিবমিষা জাগে ধর্ম যেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে রাজনীতিতে তা দেখে। প্রতিদিন ধর্মান্ধতা বাড়ছে যেভাবে সেই পরিপ্রেক্ষিতে অশোক দে-র ‘নাস্তিক’ কবিতাটি তাঁর ভালো লেগেছে।
এবং ‘হা হা স্রোতস্বিনী’ গ্রন্থ থেকে কবিতাটিও পড়ে শোনালেন তিনি। সমর্পণ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া এখনকার প্রজন্ম সোশ্যাল মিডিয়া ওরিয়েন্টেড। এটা তিনি মেনে নিতে পারছেন না বলেই অহেতুক নতুন প্রতিভাদের সমালোচনা করলেন এবং একপ্রকার ভুলেই গেলেন অনুষ্ঠানের সময় সীমা। ফলত ৯০-এর কবি স্বরূপ মন্ডল-এর ‘শূন্য’ কবিতার কোনো আলোচনা করা সম্ভব হয়ে উঠলো না। এটা কাম্য ছিলো না! অতঃপর কবিতা পাঠে অংশ নেন শমিত সান্যাল, হরিসাধন চন্দ্র, ঋত্বিক ঠাকুর, শান্তিময় মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এই সন্ধ্যায় ‘কবিতা সীমান্ত’ ১০০টি বই উপহার দিয়ে বিশেষ সম্মান জানায় শঙ্করী দাসকে। শেষে জিতেন দাসের লেখা “রূপের পূজারী সকল মানুষ, গুণের পূজারী কে বা হয়” একটি মাত্র গান গেয়ে বাউল হারাধন দাস আসরকে পরিপূর্ণ করে তোলেন। সুচারুভাবে অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন রেখা রায়।
Be First to Comment