Press "Enter" to skip to content

“আজ ভূতচতুর্দশী” গৃহস্থ বাড়িতে চোদ্দ প্রদীপের মধ্যে সাতটি যমরাজকে উদ্দেশ্য করে জ্বালান হয়……।

Spread the love

মধুমিতা শাস্ত্রী ১৩, নভেম্বর, ২০২০। অতি প্রাচীন কাল থেকে ভূতচতুর্দশীর দিন সনাতন হিন্দু ধর্মের প্রায় প্রতিটি ঘরে চোদ্দ শাক ভাজা খাওয়া এবং সন্ধ্যা বেলায় চোদ্দটি প্রদীপ জ্বালানোর রীতি আছে। পাশ্চাত্য দেশে এই রূপ একটি রীতি হ্যালোইন নাইট পালিত হয়। পাশ্চাত্যে মূলত খ্রিস্টান দেশ গুলিতে প্রতিবছর ৩১ সেপ্টেম্বর পালিত হয় হ্যালোইন ডে। সেখানে এই দিনটিতে মানুষ ভূত বা আত্মার মতো নিজেদের সাজিয়ে তোলেন। ধারণা করা হয় ভূত এবং মানব জাতীর বিভেদ ঘোচাতে এমন করা হয়।

এটি ভারতে হিন্দু ধর্মাম্বলীদের হ্যালোইন নাইটস বলা যেতে পারে। তবে হিন্দু ধর্মে এই রীতিটা একটু আলাদা। ভারতীয় সনাতন সম্প্রদায়ে এদিন চোদ্দ রকম শাক ভাজা খাওয়ার প্রচলন আছে। সংস্কৃত মন্ত্রে এই চোদ্দ শাকের নামোল্লেখ আছে। এই চোদ্দ শাকের বাংলা নাম হল- (১) বেতো, (২) ওল, (৩) হিলঞ্চ, (৪) সৌলফ, (৫) জয়ন্তী, (৬) সুসনিশাক, (৭) গুলঞ্চ, (৮) ভাটপাতা, (৯) পলতা, (১০) শাঞ্চে, (১১) নিম (১২) সরিষা, (১৩) কেঁউ ও (১৩) কালকাসুনদে।

প্রচলিত আছে বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ। ভূতচতুর্দশীর দিন চোদ্দ শাক ভাজা খাওয়া তেমনি একটি পার্বণ। প্রচলিত ধারণা আছে চোদ্দ শাক ভাজা খেয়ে শুদ্ধ মনে পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করে তাদের সন্মান জানানো হয়। যদিও এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। বৈজ্ঞানিক মতে এই চোদ্দ শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকে। এগুলি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে এই সিজন চেঞ্জের সময় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রভূত সাহায্য করে। তাই এই ধর্মীয় বচারের তাৎপর্য আছে।

ভারতের সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা কালীপূজার আগের দিনটিকে ভূতচতুর্দশী হিসেবে পালন করে আসছেন অতি প্রাচীন কাল থেকে। এর পেছনে একটি কাল্পনিক কাহিনি আছে। ধারণা করা হয় এই দিনটিতে মৃত ব্যক্তির আত্মা পৃথিবীতে নেমে আসে। এবং তারা খুশি হলে সুখ -শান্তিতে থাকার আর্শিবাদ প্রদান করেন। গৃহস্থ বাড়িতে চোদ্দ প্রদীপের মধ্যে সাতটি যমরাজকে উদ্দেশ্য করে জ্বালান হয়। যাতে যমরাজ খুশি হয়ে পূর্ব পুরুষদের আত্মার মুক্তি দেন।

যদিও পুরাণে অন্য গল্প কাহিনী আছে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী নরকাসুর রূপী রাজা বলি কালীপূজার আগের দিন অর্থাৎ ভূতচতুর্দশী তিথিতে মর্ত্যে আসেন পূজা নিতে। সঙ্গে থেকে অসংখ্য অনুচর ভূতপ্রেত। যেহেতু অমাবস্যার আগের দিন চারিদিকে তমসাচ্ছন্ন। তাই এই অন্ধকার কাটাতে এবং ভূতপ্রেতদের দূরে রাখতে গৃহস্থে প্রদীপ জ্বালানো হয়। তিথিটি চতুর্দশী বলে চোদ্দটা প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রদীপ গুলি জ্বলানো হয় স্বর্গত পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায়।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.