স্মরণঃ ও স্তা দ আ ল্লা রা খা
বাবলু ভট্টাচার্য : সকলের কাছে তিনি আব্বাজী। কিন্তু পৃথিবীর মানুষ তাকে চেনে আল্লারাখা নামে। পুরো নাম আল্লারাখা কুরেশি খান।
মূলত পঞ্জাব ঘরানার শিল্পী ছিলেন তিনি। অ-ভারতীয় শ্রোতাদের কাছে তবলাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন ওস্তাদ আল্লারাখা। পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গে তার তবলার যুগলবন্দি পৃথিবী বিখ্যাত।
১৯১৫ সালের ২৯ এপ্রিল পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার রতনগড় গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
আল্লারাখার কৃষক বাবা ভেবেছিলেন তার ছেলেও তার মতো কৃষিকাজে মনোনিবেশ করবে। কিন্তু বস্তবে তা ঘটেনি। কৃষিকাজে আল্লারাখার কোনো আগ্রহ ছিল না। তার আগ্রহ ছিল সঙ্গীতে।
১২ বছর বয়সে তবলার প্রশিক্ষণের জন্য বাড়ি ছেড়ে যান আল্লারাখা।
তিনি তার জীবন শুরু করেন ১৯৪০ সালে লাহোরে, প্রধান শিল্পীর একজন সংগতকারী হিসাবে এবং তারপর বোম্বে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’-তে একজন কর্মচারি হিসাবে কাজ করেন। সেখানেই প্রথম একক তবলা বাজানো শুরু করেন তিনি।
বলা যায় আল্লারাখার অবদানেই বাদ্য জগৎ এবং সঙ্গীত জগতে তবলার অবস্থান উন্নীত হয়েছে। মানুষ বোঝে যে তবলার একটি পৃথক স্থান আছে।
বড়ে গুলাম আলী খান, আলাউদ্দিন খান, বিলায়ত খান, বসন্ত রাই, আলী আকবর খান এবং রবিশঙ্করের মতো অসাধারণ সব শিল্পীদের সাথে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সংগত করেছেন। এদের মধ্যে সংগতকারী হিসাবে রবিশঙ্করের সাথে তার যুগলবন্দী সব কিছুকে ছাপিয়ে যায়।
১৯৭১ সালে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ‘The Concert for বাংলাদেশ’- এ সেতারবাদক রবিশঙ্কর ও বিখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ আলী আকবর খানের যন্ত্রসংগীতের সাথে তবলায় ছিলেন ওস্তাদ আল্লারাখা খান।
১৯৭৭ সালে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হন ওস্তাদজি। ১৯৮২ সালে লাভ করেন সঙ্গীত-নাটক অ্যাকাডেমি সম্মান। ১৯৮৫ সালে মুম্বাইতে শুরু করেন আল্লারাখা ইন্সটিটিউট অফ মিউজিক।
তার তিন ছেলে জাকির হুসেন, ফজল কুরেশি ও তওফিক কুরেশি— সকলেই বিখ্যাত তবলাবাদক।
আল্লারাখা কুরেশি খান ২০০০ সালের আজকের দিনে ( ৩ ফেব্রুয়ারি) মুম্বইতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment