Press "Enter" to skip to content

১৯৬০ সালের ৫ মার্চ ‘চে’গুয়েভারা -র এই ছবিটি তোলেন আলোকচিত্রী আলবের্তো কোর্দা……….

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ আলবের্তো কোর্দা

‘‘Forget the camera, forget the lens, forget all of that. With any four-dollar camera, you can capture the best picture.’’ ------- আলবের্তো কোর্দা

বাবলু ভট্টাচার্য : ঠোঁটের ওপর হালকা গোঁফ, মুখে দাড়ি, চোখে বিষন্নতা, অবিন্যস্ত লম্বা চুলের ওপর চ্যাপ্টা গোল টুপি। একনজরেই বলে দেওয়া যায়, এ ছবি আর দশটা ছবির চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। অন্যায়, নিপীড়ন আর শোষণবিরোধী সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠে এই ছবি; ভেঙে দেয় দেশকালের সীমা। ৪৪বছর আগে আততায়ীর গুলিতে খুন হয়েছেন ছবির মানুষটি, কিন্তু তাঁর সেই ছবি আজও বিশ্বমানবের হৃদয়পটে অম্লান। বুঝতেই পারছেন, আমি চে-র বিখ্যাত সেই ছবির কথা বলছি। ১৯৬০ সালের ৫ মার্চ চে-র এই ছবিটি তোলেন আলোকচিত্রী আলবের্তো কোর্দা। ঠিক তার এক দিন আগেই হাভানা বন্দরে বোমা ও বিস্ফোরক বোঝাই একটি ফরাসি মালবাহী জাহাজ বিস্ফোরিত হয়ে মারা যায় ৮০ জন কিউবান। তাদের গণ- শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে সেদিন সেখানে গিয়েছিলেন চে। আর তখনই জ্বলে ওঠে কোর্দার ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। ফ্রেমবন্দী হয় পৃথিবীর সর্বকালের সেরা এক আলোকচিত্র।

ম্যারাডোনা হাতে “চে” এর উল্কি।

তারপর অনেক দিন ছবিটি কোথাও প্রকাশিত হয়নি। কোর্দার স্টুডিওতে যারা আসা-যাওয়া করতেন, তাদের চোখেই শুধু পড়েছে দেয়ালে ঝুলে থাকা ক্রুদ্ধ, বিষণ্ন এক বিপ্লবীর মুখ। সাত বছর পর চে-র ছবিটি দেখে আকৃষ্ট হন ইতালীয় বামপন্থী প্রকাশক ও বুদ্ধিজীবী গিয়াংগিয়াকোমো ফেলত্রিনেল্লি। ইতালিতে ছবিটি নিয়ে যান তিনি। তার মাধ্যমেই প্রথম পোস্টার আকারে ইউরোপে ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে। ইউরোপের কয়েকটি দেশে ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ছাপা হওয়ার পর ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। চিত্রবিশ্লেষক ত্রিশা জিফ বলেন— ‘লোকে শোষণ ও বৈষম্যের অবসান চায়, চায় পরিবর্তন। সেই পরিবর্তনের প্রতীক হয়ে ওঠে চে-র এই ছবিটি।’ আলবের্তো কোর্দা কখনই এ ছবিটির বিনিময়ে কোন টাকা নেননি। কোন প্রতিষ্ঠান এই ছবিটি ব্যবহার করতো, তখন আলবের্তো কোর্দাকে রয়ালেটির টাকা দিতে চাইলে তিনি ফিরিয়ে দিতেন।

আলবের্তো কোর্দা মামলা করেন ছবি যখন স্মিয়ার্টওফ নামের একটা ভদকার বোতলে ব্যবহার করা হয়। এ জন্য মামলায় তিনি জয়লাভ করেন এবং ক্ষতিপূরণ পান ৫০,০০০ ডলার। টাকাটি তিনি পুরোটাই কিউবান হেলথ কেয়ার একটি সংস্থাকে দান করে দেন। তিনি টাকাটি দান করার ব্যাপারে বলেন, চে যদি বেঁচে থাকতো, সেও একই কাজ করত। আর এখন টি-শার্ট, দেয়াল, আইসক্রিমের মোড়ক, সিগারেট থেকে শুরু করে কোথায় নেই এই ছবি! এমনকি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও মুষ্টিযোদ্ধা মাইক টাইসনের শরীরে পর্যন্ত উল্কির আকারে জায়গা করে নিয়েছে এই ছবি। ‘চে গুয়েভারা’ নিজেই এখন একটা ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডের লোগো হচ্ছে চে-র সেই বিখ্যাত ছবি— যার অর্থ পরিবর্তন। ছবিটি যুদ্ধ ও বিশ্বায়নবিরোধী তথা পরিবেশবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে’— বললেন ত্রিশা জিফ।

মুষ্টিযোদ্ধা মাইক টাইসন।

আলবের্তো কোর্দা (Alberto Korda) ১৯২৮ সালের আজকের দিনে (১৪ সেপ্টেম্বর) কিউবাতে জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.