স্মরণঃ অনিল চট্টোপাধ্যায়
বাবলু ভট্টাচার্য : ১৯৫২-য় ঋত্বিকের ‘নাগরিক’-এ প্রথম অভিনয়। সে ছবি মুক্তি পায়নি তখন। তাই ১৯৫৩ সালে মুক্তি-পাওয়া ‘যোগবিয়োগ’ ছবিতেই প্রথম অভিনয় বলা যেতে পারে অনিল চ্যাটার্জির।
অনিল চট্টোপাধ্যায় ১৯২৯ সালের ২৫ অক্টোবর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
নায়কের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘ময়লা কাগজ’ ছবিতে। তখন পরিচালক অর্ধেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রোডাকশন হাউসে তিনি সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। উৎপল দত্তের সঙ্গে কলেজে ইংরেজি নাটকে অংশগ্রহণ করেছেন। আকাশবাণীতে অডিশন দিয়েছেন সৌমিত্রর সঙ্গে।
অভিনয় জীবন শুরু নায়কের বন্ধু গোছের চরিত্র দিয়ে। তখন উত্তম-সুচিত্রা মধ্যগগনে। তারই মধ্যে ‘অগ্নিসংস্কার’ ছবিতে সাইকোপ্যাথ ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করে নজর কাড়লেন অনিল চট্টোপাধ্যায়। প্রেস শো দেখে উত্তমকুমার বলেছিলেন, ‘অনিল, তুই দেখিস, এ ছবিতে তোর খুব নাম হবে।’ তার পর বেশ কিছু ছবিতে নায়কের ভূমিকায় : ‘আহ্বান’, ‘উল্কা’, ‘বালুচরী’, ‘নতুন জীবন’, ‘সোনাবউদি’।
অসংখ্য ভাল ভাল চরিত্র জীবন্ত করে রেখে গেছেন সেলুলয়েডে। কে ভুলবে ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র দাদাকে। ‘আগুন’ ছবির পরোপকারী তিন বন্ধুর এক বন্ধু। ‘সাগিনা মাহাতো’র শ্রমিক লিডার, ‘কাচের স্বর্গ’-তে ডাক্তার, ‘বনপলাশির পদাবলী’তে এক পা খোঁড়া রগচটা ডাক্তার, ‘নির্জন সৈকতে’র যুবকটি, ‘আঁধার পেরিয়ে’-তে সাংবাদিক, ‘অমানুষ’-এ পুলিশ অফিসার, ‘মহানগর’-এর চাকরি চলে যাওয়া নায়ক, ‘পোস্টমাস্টার’ চরিত্র, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’য় প্লেবয়- কত বিভিন্ন এবং বিচিত্র চরিত্রকে তিনি ফুটিয়েছিলেন অনবদ্য অভিনয়ে।
উত্তমের সঙ্গে ‘অগ্নিসংস্কার’, ‘আমি সে ও সখা’, ‘জতুগৃহ’, ‘বনপলাশির পদাবলী’– এগুলো তো প্যারালাল রোল। ‘আতঙ্ক’, ‘এক যে ছিল দেশ’, ‘রাজা’, ‘আঁধার পেরিয়ে’, ‘সাগিনা মাহাতো’– তপন সিংহ কত ভাল ভাল চরিত্রে আমায় সুযোগ দিয়েছে ভাব। মানিকদার ‘দেবী’-তে ছোট্ট এক সিন সৌমিত্র’র বন্ধু হিসেবে। সেখান থেকে ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ হয়ে ‘মহানগর’-এ নায়ক।
অনিল চট্টোপাধ্যায় ১৯৯৬ সালের আজকের দিনে (১৭ মার্চ) কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
Be First to Comment