Press "Enter" to skip to content

১৪ বছর বয়সি নতুন আশা খুঁজে পেয়েছে মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ে নিয়ে এসেছে POEM-এর সঙ্গে বহু রোগীর জন্য স্বস্তি….।

Spread the love

বিশেষ প্রতিনিধি : কলকাতা, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫। দৈনন্দিন জীবনে অধিকাংশ মানুষেরই সবচেয়ে সহজ ক্রিয়াকলাপ খাওয়া, অম্লান মজুমদার ও রূপা নায়েকের মতো রোগীদের ক্ষেত্রে, যারা ভুগছিল খাদ্যনালীর বিরল বিশৃঙ্খলা অ্যাকালেসিয়ায়, এটা খুবই যন্ত্রণাদায়ক এবং হতাশাজনক লড়াই। এই অবস্থা ক্রমশ রোগীদের জন্য গলাধঃকরণ ও পাকস্থলীতে খাবার পৌঁছনো কঠিন করে তোলে। উভয়েই কয়েকমাস ধরে মারাত্মক গলাধঃকরণের সমস্যায় ভুগছিল, মুখ ও নাক থেকে বমি না করে তাদের পক্ষে গলাধঃকরণ করা কঠিন, যা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এটা শুধুমাত্র একটি শারীরিক চ্যালেঞ্জ নয়, এটা তাদের আশাহীনতা ও বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি দিত, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়েতে আধুনিক পেরোরাল এন্ডোস্কোপিক মায়োটমি (POEM) প্রণালির সাহায্যে উভয় রোগীই তাঁদের জীবন ফিরে পেয়েছে। সর্বাধুনিক এই প্রণালি তাদের দিয়েছে নতুন শুরু – মুক্ত জীবন কাটানোর দ্বিতীয় সুযোগ, সর্বদা-উপস্থিত চোকিংহীন, শারীরিক কোনো অস্বাচ্ছন্দ্য বহন করার মানসিক বোঝা মুক্ত এক জীবন। উল্লেখযোগ্য, অ্যাকালেসিয়ার জন্য অন্যান্য আরও চিকিৎসা লভ্য যেগুলি সাধারণভাবে করা হয়। যদিও তত কার্যকরী নয়, রোগীদের জন্য সেসব ওষুধও দেওয়া হয় কখনো কখনো, সেসব রোগীদের জন্য যাঁরা আরও ভেদ্য চিকিৎসার জন্য অক্ষম। এরকম একটি বিকল্প চিকিৎসা হল নিউম্যাটিক ডিলেশন। এতে একটি স্ফীত বেলুন জড়িত যা লোয়ার এসোফাজিয়েল স্পিংটারকে বিস্তৃত করে, রিং-সদৃশ পেশি যা এসোফাগাস ও পাকস্থলীকে পৃথক কের। যদিও এই নন-সার্জিক্যাল বিকল্প উপশন দিতে সাহায্য করে, নির্দিষ্টভাবে এর দরকার পুনরাবৃত্তি, যার ফলে এই প্রণালির এক বছর রোগীকে হাসপাতালে ফিরে আসতে হয়। অন্যদিকে, POEM কাজ করে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান রূপে এবং অত্যন্ত দ্রুত রোগীর জীবনযাপনের মান উন্নত করে অ্যাকালেসিয়ার মূল কারণ চিহ্নিত করে। প্রণালি চলাকালীন, লোয়ার এসোফাগাসের পেশি কেটে ফেলা হয় স্বাভাবিক গলাধঃকরণ ক্রিয়াকলাপ ফিরিয়ে আনতে।
৩৩ বর্ষীয় অম্লান মজুমদার, যাঁর উপসর্গ স্থায়ী ছিল ১৮ মাসেরও বেশি, বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি সঠিকভাবে খেতে ও ঘুমোতে লড়াই করতাম। যতবার আমি চেষ্টা করতাম, খাবার আমার নাক-মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসত। এটা এমন ছিল যেন আমার নিজের শরীরের ভেতরে আমি ফাঁদে পড়েছি। ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ POEM অস্ত্রোপচার করার পরই আমি খেয়াল করলাম নাটকীয় পরিবর্তন। উপসর্গ সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গেল এবং অবশেষে আমি সঠিকভাবে খেতে ও পান করতে পারলাম। আমাকে জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য মনিপালের ডাক্তার ও গোটা দলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
অম্লানের লড়াইয়ের প্রতিধ্বিনি রূপা নায়েকের কাহিনিতে। তাঁর মা, রিম্পা নায়েক, নিরুপায় হয়ে দেখছিলেন তাঁর ১৪ বছর বয়সি মেয়ে যন্ত্রণা ভোগ করছে, বমি না করে কোনো কিছু খেতে বা পান করতে পারছে না। এর উত্তর পাওয়ার তাঁরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে গেছেন, কিন্তু কিছুই কাজ করেনি। এরপর তাঁকে নিয়ে আসা হয় মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়েতে। ড. সুজিৎ চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনার পর রূপার একটি এন্ডোস্কোপি করা হয়। এন্ডোস্কোপিতে দেখা যায় এই কিশোরী অ্যাকালেসিয়ায় ভুগছে। মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়েতে তাঁর POEM সার্জারি হয় এবং সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে। ‘আমি কখনো কল্পনাও করিনি যে আবার ভয় ও উদ্বেগ ছাড়া খেতে সক্ষম হব। এই অস্ত্রোপচার সত্যিই আমাকে জীবনের নতুন ইজারা দিয়েছে। এখন কোনো উদ্বেগ ছাড়া আমার প্রিয় খাবার খেতে পারি আমি,’ হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেছে রূপা।
ড. সুজিৎ চৌধুরী, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট, মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ে বলেছেন, ‘POEM একটি আধুনিক ও ন্যূনতম ভেদ্য প্রণালি যা অ্যাকালেসিয়ায় ভোগা রোগীদের জন্য আশার আলো। এই অবস্থা রোগীর আবেগ ও শারীরিক পরিস্থিতি উভয়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। POEM ন্যূনতম ভেদ্য সমাধান অফার করে যা রোগীকে কয়েকদিনের মধ্যে স্বাভাবিক জীবন যাপন ফিরে পেতে দেয়। আমার মতে, এটা জীবন বদলানোর চেয়ে কম কিছু নয়। রোগীর সফলভাবে ফিরে আসা আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমরা কেন করেছি, কী করেছি। তাদের রিকভারি যাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেকে আশীর্বাদধন্য মনে করি।’
ড. সুদীপ্ত ঘোষ, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট, মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ে বলেছেন, ‘অ্যাকালেসিয়া বিরল বিশৃঙ্খলা খাবার ও তরলের তাদের পাকস্থলীতে যাওয়া কঠিন করে তোলে। অ্যাকালেসিয়া সাধারণত হয় খাদ্যনালীতে (অসোফাগাস) স্নায়ুর ক্ষতির ফলে, খাবার চিপে পাকস্থলীতে যাওয়া থেকে খাদ্যনালীকে বাধা দেয়। এটা হতে পারে অস্বাভাবিক ইমিউন সিস্টেম প্রতিক্রিয়া দ্বারা। এর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে গলা দিয়ে খাবার বেরিয়ে আসা (উদগার), বুকে ব্যথা এমনকি ওজন হ্রাস। যদিও বিরল, এই অবস্থা সামলানো যায় ন্যূনতম ভেদ্য (এন্ডোস্কোপিক) থেরাপি বা অস্ত্রোপচার ও ওষুধের মাধ্যমে।’
উভয় রোগী তিন দিন থাকার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে ২১ জানুয়ারি। তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহ অর্ধ-তরল আহার গ্রহণ করতে। তারপর তারা তাদের স্বাভাবিক আহারে ফিরে যেতে পারবে এবং মুক্ত হবে অ্যাকালেসিয়ার বোঝা থেকে। মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ের POEM অস্ত্রোপচারে উৎকর্ষ এই রোগীদের নতুন আশার আলো জুগিয়েছে। আজ, অম্লান ও রূপা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে যেখানে তারা জীবনের সহজ আনন্দ উপভোগ করতে পারবে – এই লড়াই ছাড়া।

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.