সম্প্রীতি মোল্লা, আউশগ্রাম, ৪ ডিসেম্বর ২০২২। অবশেষে টানটান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলায় রেনেসাঁ একাদশকে টসে পরাস্ত করে দুর্গাপুর জঙ্গলমহল একাদশ মরহুম হালিম-হালিমা স্মৃতি ফুটবল প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করে। ৪ ঠা ডিসেম্বর আউসগ্রামের গেঁড়াই ফুটবল মাঠে আয়োজিত ফাইনাল ম্যাচ নির্দিষ্ট সময়ে গোলশূন্য থাকে। টাইব্রেকার ও সাডেন ডেথেও ফয়সালা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত টসের মাধ্যমে খেলার নিষ্পত্তি হয়। দুই দলের অধিনায়কের উপস্থিতিতে সায়নী দেবী টস করেন। এইসঙ্গে একমাস ব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘটে। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়ার নির্বাচিত হন দুর্গাপুর জঙ্গলমহলের মনসা (১০ নং)।
গত সাত বছর ধরে চলছে এই প্রতিযোগিতা, এই বছর পঞ্চাশ-তম বছর, এলাকার মানুষের কাছে ‘দাতা’ নামে পরিচিত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লালন সেখ এবং স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডারের উদ্যোগে এই ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে। পরিচালনায় রয়েছে এসএমডি ও আউসগ্রাম বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেস।
এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে বর্ধমানের রেনেশাঁ ক্লাব ৪-৩ গোলে টাইগার বিনোদিনী রাইস মিলকে এবং দ্বিতীয় সেমিফাইনালে জাগুলিপাড়া যুব একাদশকে ১-০ গোলে দুর্গাপুর জঙ্গলমহল একাদশ পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে। প্রত্যন্ত জঙ্গলমহল এলাকায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভিড় ছিল প্রচুর। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
যদিও বিদেশী ফুটবলারদের আধিক্যের জন্য স্হানীয় ফুটবলের কতটা উন্নতি হবে সেটা নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেন। তাদের বক্তব্য – পেছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলের কাছে এই প্রতিযোগিতা অবশ্যই এক বড় আকর্ষণ। এত দর্শকের সামনে স্হানীয়রা বেশি করে খেলার সুযোগ পেলে হয়তো তারা বেশি উৎসাহ বোধ করত।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল রাজ্য যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারা, স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী, জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার, আউসগ্রাম থানার একাধিক পুলিশ আধিকারিক, আউসগ্রাম ২ নং ব্লকের ৭ টি অঞ্চলের দলীয় প্রধান সহ অন্যান্যরা।
এতবড় একটা টুর্নামেন্টের আয়োজন করার জন্য দাতা লালনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সায়নী দেবী বলেন – আগামী দিনে গোটা বাংলা জুড়ে খেলা হবে।
বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার বললেন – আমাদের লক্ষ্য যুব সম্প্রদায়কে মাঠমুখী করা। এর মাধ্যমে ফুটবলে বাংলা তার অতীত ঐতিহ্য ফিরে পাবে। তিনি আরও বললেন – আউসগ্রাম বিধানসভার প্রতিটি অঞ্চলে ‘বিধায়ক কাপ’ জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করার ইচ্ছে আছে। খুব শীঘ্রই প্রতিটি অঞ্চলের দলীয় পদাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। এতবড় একটা টুর্নামেন্টের আয়োজন করার জন্য তিনি দাতা লালনকে ধন্যবাদ জানান।
অন্যদিকে যার উদ্যোগে জঙ্গলমহল এলাকায় ফুটবলের এই রাজসূয় যজ্ঞ সেই ‘দাতা’ লালন বললেন – আমার লক্ষ্য মোবাইলে আসক্ত যুব সমাজকে খেলার মাঠে টেনে আনা। আশাকরা যায় আজকের এই উন্মাদনা দেখে আগামী দিনে তারা মাঠমুখী হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন – খেলোয়ারদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য আগামী দিনে কলকাতার কোনো বিখ্যাত কোচকে এনে এলাকার ছেলেদের জন্য কোচিংয়ের ব্যবস্হা করা হবে।
Be First to Comment