Press "Enter" to skip to content

হার্টের মারাত্মক সমস্যা- মাইট্রাল ভালভের ত্রুটির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা শুরু হল কলকাতায়….।

Spread the love

বিশেষ প্রতিনিধি : কলকাতা, ১১ এপ্রিল, ২০২৫। হার্টের মারাত্মক সমস্যা মাইট্রাল ভালভের ত্রুটির অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চিকিৎসা শুরু হল কলকাতায়। মাইট্রাল ভালভে ছিদ্র থাকলে শারীরিক সমস্যা বাড়তে বাড়তে রোগী ক্রমশ মৃত্যুর দিকে পা বাড়ান। হৃৎপিণ্ডের এই সমস্যার ডাক্তারি নাম মাইট্রাল রিগার্জিটেশন (MR), সম্প্রতি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাইট্রাক্লিপের সাহায্যে MTEER নামে বিশেষ ইন্টারভেনশনাল পদ্ধতিতে অত্যাধুনিক ডিভাইসের সাহায্যে ছিদ্র বন্ধ করে মরণাপন্ন রোগীকে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। এর আগে এই ধরণের রোগীর ওপেন হার্ট সার্জারি করা ছাড়া কোনও উপায় থাকত না, কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এই সার্জারি ছিল ঝুকিপূর্ণ। মাইট্রাক্লিপ MR এর রোগীদের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী চিকিৎসা যা সম্প্রতি কলকাতায় শুরু হয়েছে, এর জন্যে আর রোগীদের ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হবে না বলে জানালেন ডা শুভ্র বন্দ্যোপাধায়। হেলথ কেয়ার ফাউন্ডেশন নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে কলকাতার প্রেস ক্লাবে মাইট্রাল রিগার্জিটেশন এর অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাইট্রাক্লিপ এক্সপার্ট ডা সুমন্ত মুখোপাধ্যায় এবং MR এর ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসায় জীবনের আলোয় ফিরে আসা দুজন রোগী সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ডা. শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন যে আমাদের হার্টের মোট চারটি ভালভের মধ্যে অন্যতম মাইট্রাল ভালভ। হার্টের স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রাখতে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভালভ হল এমনই এক ব্যবস্থা যা কেবলমাত্র একদিকে খোলে। বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ের মাঝখানে থাকা মাইট্রাল ভালভ হার্টের দুটি প্রকোষ্ঠকে আলাদা করে রাখে। শুদ্ধ ও অশুদ্ধ রক্ত মিশে গেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। শরীরের পুরো সিস্টেমটাই গড়বড় হয়ে যায়। এই ব্যপারটাকে আটকায় মাইট্রাল ও অন্যান্য ভালভ। জন্মগত ত্রুটি বা পেশির সমস্যার জন্যে মাইট্রাল ভালভের লিফলেট বা ফ্ল্যাপ রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করতে পারে না। ফলে বাম নিলয় থেকে বাম অলিন্দে রক্ত চলে আসে। এই সমস্যার ডাক্তারি নাম মাইট্রাল রিগার্জিটেশন। আসলে আমাদের হার্টের অন্যান্য ভালভে তিনটি করে ফ্ল্যাপ থাকে। অন্যদিকে মাইট্রাল ভালভে থাকে মোটে দুটি ফ্ল্যাপ। তাই চট করে সমস্যা হয়। ডা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানালেন যে মাইট্রাল ভালভের সমস্যা হলে প্রাথমিক অবস্থায় হার্ট বিট বেড়ে যায়। MR থাকলে ফুসফুসে ও শরীরের অন্যান্য অংশে জল জমতে পারে। এছাড়া নিঃশ্বাসের কষ্ট হয়, সব সময় ক্লান্ত লাগে, ঘুম পায়, পা ফুলে ওঠে। এই অবস্থাতেও সঠিক চিকিৎসা না হলে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন অর্থাৎ হার্টের ছন্দ বিঘ্নিত হয়, লিভার ও কিডনির কর্মক্ষমতা কমতে থাকে এবং হার্ট ফেলিওর হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়। এই সমস্যার মোকাবিলায় ওপেনহার্ট সার্জারির সাহায্যে মাইট্রাল ভালভ মেরামত করা হত। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রে রোগীর শারীরিক অবস্থা এতোটাই খারাপ থাকে যে সার্জারি করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়। কেননা রোগীকে অ্যানেস্থেশিয়া করে বুকের হাড় কেটে সার্জারি করা রোগীর পক্ষে নিরাপদ নয়। অত্যাধুনিক ইন্টারভেনশনাল পদ্ধতিতে কুঁচকিতে ছোট্ট ছিদ্র করে সেখান দিয়ে ক্যথিটারের সাহায্যে মাইট্রাল ভালভের ছিদ্রের জায়গায় মাইট্রাক্লিপ বসিয়ে মেরামত করা হয়, জানালেন ডা. সুমন্ত মুখোপাধ্যায়। এই ইন্টারভেনশন পদ্ধতির ডাক্তারি নাম মাইট্রাল ট্র্যান্সক্যাথিটার এজ টু এজ রিপেয়ার (M TEER)। এই চিকিৎসার অঙ্গ হিসেবে রোগীকে ক্যাথল্যাবে নিয়ে গিয়ে অত্যাধুনিক পদ্ধতির ট্র্যান্স ইসোফেজিয়াল ইকো ( TOE )র সাহায্যে এক্স রে ও ইকোর ছবি দেখে সুনির্দিষ্ট ভাবে ভালভের ছিদ্রে মাইট্রা ক্লিপ আটকে মেরামত করা হয়। ১ – ২ দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। দুই বিশেষজ্ঞর মতে এই পদ্ধতিটি সব থেকে নিরাপদ ও ফলপ্রসু।

More from HealthMore posts in Health »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.