Press "Enter" to skip to content

হারানো সুরে হলুদ ট্যাক্সি, আলোচনায় শহর কলকাতা….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪। কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্য হলুদ ট্যাক্সি। বহু বছরের এই আকর্ষণ আজ বিলুপ্তির পথে। পরিবেশের স্বাস্থ্য এবং নাগরিক আধুনিকীকরণের কথা মাথায় রেখে ১৫ বছরের বেশি পুরোনো প্রায় ২,৫০০ ট্যাক্সিকে রাস্তায় নামার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি তরফে। ফলত উদ্বেগের মুখে হলুদ ট্যাক্সি চালক, ইউনিয়ন এবং নাগরিকরাও। এতে কেবল আর্থিক সংকটই নয়, বরং সাংস্কৃতিক প্রতীক হারানোর সম্ভাবনা সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন সচেতন শহরবাসী।

এই প্রেক্ষাপটে সেই সমস্যার উপায় খুঁজতে আসরে নামেন গীতিকার, লেখক, কবি এবং আবৃত্তিকার ঝর্ণা ভট্টাচার্য। আই কমিউনিকেশনস-এর সহযোগিতায় ‘হারানো সুরে হলুদ ট্যাক্সি’ নামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন তিনি।

ঝর্ণা ভট্টাচার্যের পাশাপাশি এই আলোচনা সভায় অংশ নেন শান্তি দাস, আইপিএস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় রাজ্যপালের এডিসি (পি); জয়ন্ত নারায়ণ চ্যাটার্জি, সিনিয়র আইনজীবী, কলকাতা হাইকোর্ট; দেবপ্রতীম দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্র পরিচালক, লেখক ও অভিনেতা; শতরূপ ঘোষ, রাজনৈতিক কর্মী; সৌম্যজিৎ মহাপাত্র, অ্যাডভাইজার, আই কমিউনিকেশনস; সুজয় রুদ্র, অভিনেতা, পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও গায়ক; অনুভব মাইতি, সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়; এবং সদানন্দ মুখার্জি, অনারারি ফিনান্স সেক্রেটারি, ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব।

হলুদ ট্যাক্সির দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্য এবং সরকারের সিদ্ধান্তের আগামী প্রভাব নিয়ে বক্তারা তাঁদের মতামত ভাগ করে নেন। তাঁরা এই সাংস্কৃতিক প্রতীক সংরক্ষণের গুরুত্ব, ট্যাক্সি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের জীবিকা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা এবং আধুনিকীকরণের সঙ্গে ঐতিহ্য সংরক্ষণের ভারসাম্য রক্ষার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেন।

হলুদ ট্যাক্সি চালক এবং যাত্রীদের ব্যক্তিগত কিছু গল্প ও অভিজ্ঞতাগুলিও তুলে ধরা হয় এই অনুষ্ঠানে। উঠে আসে বহু পুরনো এই যানের সঙ্গে ঐতিহ্যের এক অন্তরঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি। এছাড়া আয়োজিত হয় কলকাতার হলুদ ট্যাক্সির যাত্রাপথ নিয়ে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও। তা অনুষ্ঠানে নস্টালজিয়ার ছোঁয়া যোগ করে, তুলে ধরে শহরের গৌরবময় ইতিহাসকে।

শান্তি দাস, আইপিএস, বলেন, ‘এই অনুষ্ঠান হলুদ ট্যাক্সির সাংস্কৃতিক গুরুত্ব এবং কলকাতার অনন্য ঐতিহ্য সংরক্ষণে এক দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেছে। সমাধান খোঁজার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তাঁদের এই প্রয়াস প্রশংসাযোগ্য।

পটভূমি:
• কলকাতার রাস্তায় প্রথম হলুদ ট্যাক্সি চলাচল শুরু হয় ১৯০৮ সালে, খরচ ছিল প্রতি মাইলে ৮ আনা (৫০ পয়সা)।
• ১৯৬২ সালে, কলকাতা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন অ্যাম্বাস্যাডরকে স্ট্যান্ডার্ড ট্যাক্সি মডেল হিসেবে গ্রহণ করে, ভারতের রাস্তার জন্য এর টেকসই প্রভাব উল্লেখ করে। হলুদ রঙটি যেহেতু রাতের বেলাও ভীষণভাবে দৃশ্যমান, সেই কারণেই এই রঙটি জন্য নির্বাচিত হয়।
• সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ছিলেন কলকাতার প্রথম হলুদ ট্যাক্সি চালক, যিনি ১৯৩২ সালে পারমিট পান।
• ২০০৯ সালে শেফালী রায় কলকাতার প্রথম নারী হলুদ ট্যাক্সি চালক হিসেবে পথে নামেন।
• গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যা ২০২০ সালে ১৮,০০০ থেকে বর্তমানে ৬,০০০ এ নেমে এসেছে, বিশেষত কোভিড পরিস্থিতির পর, সংখ্যা বহুলাংশে কমতে থাকে।

More from CultureMore posts in Culture »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.