হরিতকী ফল??
সুস্মিতা দাস : হরিতকী গাছ হল একটি ভেষজ উদ্ভিদ। আমারা অনেকেই এই ফল সম্পর্কে কমবেশি জানি। তবে হয়তো আমাদের উত্তরপুরুষরা এই ফল সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না। কারণ এই ফলটি এখন প্রায় লুপ্ত হতে বসেছে।
হরিতকী সম্পর্ক কিছু তথ্য ??
এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম টের্মিনেলিয়া চেবুলা(Terminalia Chebula)। হরিতকীর আদি জন্মস্থান ভারত ও বাংলাদেশে। এছাড়া ও নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ইত্যাদি স্থানে পাওয়া যায়। এটি একটি বৃক্ষ জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ। উচ্চতা প্রায় ৩০ মিটার হয়।
এই গাছে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে নতুন পাতা গজায়। পাতা লম্বা, চ্যাপ্টা ও ডিম্বাকৃতির হয়। ফুল সাদা হলদেটে এবং তিব্র অপ্রীতিকর গন্ধ রয়েছে। ফলটি শাঁসালো ও রসালো আঁটি যুক্ত, ফলের আবরণ খসখসে, কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হালকা হলুদ বা লালচে খয়েরী এবং ফলটি শুকিয়ে গেলে কালচে খয়েরী রঙের হয়। ফলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত লম্বা লম্বা পাঁচ – ছটা শিরা থাকে। ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। স্বাদে তিতকুটে। ফলের ভিতরে শক্ত একটি বীজ থাকে। এই ফল বছরের পর বছর ভালো থাকে।
উপকারিতা ??
হরিতকী ফলের উপকারিতা বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। যেমন ত্রিফলা, যা আমাদের শরীরের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। সেটা এই হরিতকী, বয়রা ও আমলকীর গুড়ো দিয়ে তৈরি।
এই গাছের পাতা, ফল, বীজ সব আমাদের কাজে লাগে। এই ফল বদহজম, কাশি, পেটফাঁপা, বাত, জন্ডিস, হৃদরোগ, আমাশয়, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ঘনঘন জল তেষ্টা, বমিভাব, অর্শরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যালার্জি, চুল ভালো রাখতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়তে, গলাব্যথা, দাঁতেব্যথা,কোলেস্টেরল কমাতে এবং লিভার কে সুস্থ রাখতে বিশেষ উপকারী। রন্ধন শিল্পে ও হরিতকী ব্যবহার হয়। এই গাছের কাঠ খুব মজবুত। এই কাঠকে আসবাব, ফ্রেম, খুটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
হরিতকী ফল ভারতে কোথায় পাওয়া যায় ??
পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চলে হরিতকী গাছ জন্মে থাকে।
ছবি ~ গুগল থেকে সংগ্রহ করা।
Be First to Comment