Last updated on September 23, 2021
সঙ্গীতা চৌধুরী : কলকাতা, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১। ২০০ বছরের ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটে ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট। এই দিন থেকে স্বাধীনতার নতুন সূর্যের আলোয় দূর হয়েছে আমাদের পরাধীনতার সব অন্ধকার। এখন আমরা সবাই পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত। কিন্তু তা কি সত্যিই ? বাস্তব সত্যের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে , সমাজের অর্ধেক অংশ নারী জাতি আজও অদৃশ্য শৃঙ্খলবদ্ধ । নারী নিজের পরিবার থেকেই প্রথম পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ হয়। পরবর্তীকালে বিয়ের পর অন্য পরিবারে গিয়েও সে সেই শিকলে আবদ্ধ থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। পরিস্থিতির কারনে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। আবার অনেক নারী প্রতিবাদী হয়ে উঠলে তাদের থামানোর চেষ্টা করা হয়। তার আপনজনদের কাছ থেকেই তাকে শুনতে হয় মানিয়ে নেওয়ার কথা ! তাই একজন নারীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায় ভালো ভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে নারীদের এই পরাধীনতার পেছনে শুধু পুরুষ সমাজই দায়ী নয়, বরং নারী ও পুরুষ সমানভাবে দায়ী।
আবার অন্যদিকে নারী স্বাধীনতার অর্থ স্বেচ্ছাচারিতা নয় । তাই মানসিকতা স্বচ্ছ করার প্রয়োজনীয়তা শুধু পুরুষের নয়, নারীরও। তবে নারীরা যদি নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে শেখে, নিজেদের জায়গাটা চিনে নিতে শেখে, তাহলে কারো সাধ্য নেই তাকে অবরুদ্ধ করার। একথা ভুললে চলবে না যে, নারীর প্রথম পরিচয় সে মানুষ। তাই অন্যদের মতো তাদের ও ইচ্ছা-অনিচ্ছা , ভালোলাগা-খারাপলাগা – এই স্বাভাবিক প্রবৃত্তিগুলি বিদ্যমান। তাই নারীকে তার নিজের মতোই বাঁচতে দেওয়া উচিত।
নারী স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সমাজের বিশেষ কয়েকজন নারীর মূল্যবান মতামত তুলে ধরা হলো বর্তমান প্রতিবেদনে ::—
লেখিকা, মহিলা পরিচালক ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় টলিউডে বহু জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়ালের স্রষ্টা। অনেক জনপ্রিয় নারী চরিত্র এখন তাঁর হাত ধরেই এগিয়ে চলেছে যেমন- ‘শ্রীময়ী’, ‘মোহর ‘, ‘খড়কুটো’ ইত্যাদি সিরিয়ালের চরিত্ররা। এছাড়া বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ” স্বাধীনতা কখনো কাউকে দেওয়া যায় না, সেটা অর্জন করতে হয়। এই অর্জন করার জন্য একটা সময় লাগে এবং শিক্ষা লাগে । অর্জন করার ইচ্ছেও থাকতে হয়। আমাদের মেয়েদের মূল সমস্যা হচ্ছে তাদের অনিচ্ছা। অনেক মহিলাই আছেন যারা স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থই জানেন না। এখনও অনেক মহিলা ভালো বিবাহ হলে গর্ব অনুভব করেন এবং স্বামীর শিক্ষা ও আর্থিক প্রতিপত্তিকেই বেশি গুরুত্ব দেন। তারা নিজেরা কি করেছেন বা কি করা উচিত সেটা ভাবেন না। প্রত্যেকেরই যে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া দরকার ,আর এটাই যে স্বাধীনতার একটা ধাপ এই ব্যাপারটা অনেকেই বোঝেন না। তবে কেউ কেউ তো নিশ্চয়ই বুঝেছেন , তাই বহু দিন আগেই বেগম রোকেয়া থেকে যদি ধরি তাহলে অনেক মহিলা আছেন যারা স্বাধীনতার জন্য আজীবন লড়াই করে গেছেন। এমন অনেক মহিলাকে আমি দেখেছি , তারা যতই আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হন বা ইংরেজী বুলি আওড়ান , তাদেরও কোথাও একটা নিজেদের কাজ করার প্রতি অনীহা লক্ষ্য করা যায়। তাই বিয়েটা এখনও যেন একটা অপশন। সে অর্থে স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বলবো স্বাধীনতা প্রত্যেককে অর্জন করতে হয়। এবং অনেক দাম দিয়ে স্বাধীনতা কিনতে হয়। আর সেই দামটা হলো নিজেকে ছোট থেকে তৈরি করা , মন দিয়ে লেখা পড়া করে সঠিক শিক্ষিত হওয়া । যাতে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায়। নিজেকে স্বাবলম্বী করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এটা একান্তই আমার বিশ্বাস।
মডেল – পুষ্পিতা লোধ।
তবে অনেকে স্বেচ্ছাচারিতা আর স্বাধীনতার মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না, আবার অনেকে পরে পরে মার খান। আমরা যদি মার খাওয়ার চিত্রগুলো দেখি সেখানে দেখবো যে তাদের শিক্ষার আলো পাওয়ার সুযোগ হয় নি। হয়তো অভাবের মধ্যে বড় হয়েছে তাই পড়াশোনা শেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু যারা পড়াশোনা করেও অবহেলা করেছে সেই শক্তিটাকে কাজে লাগায়নি সেক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হল, শিক্ষা একটা শক্তি তাকে যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করতে হবে।এই যে মেয়েদের মার খাওয়া তার কারনই হলো নিজেদের শক্তিকে ব্যবহার না করা। আবার এমনও হচ্ছে যে চাকরি করা মেয়েরাও মার খাচ্ছে , তারা লোকলজ্জার ভয়ে চুপ করে দিনের পর দিন সহ্য করছে। তারা মনে করে তাদের হেরে যাওয়াটা সবার সামনে প্রকাশ পাবে। আসলে মেনে নেওয়াটাই যে হেরে যাওয়া সেটা তাদের বুঝতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গির বদল দরকার। মেয়েদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। অনেক মেয়েই নিজেদের আইনি সুরক্ষাটাও জানে না ভালো করে। পৃথিবীর যে কোন দেশের সরকারই তাদের নিজেদের পলিসি অনুযায়ী মেয়েদের কিছু সুযোগ সুবিধা দেয়, তাই সে যেখানেই বাস করুক না কেন তার কি সুযোগ আছে, সেটা তাকে ভালো করে জেনে নিতে হবে।
বাচ্চা মেয়েদের উচ্ছৃংখল জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বলবো যে , সেক্ষেত্রে বাবা- মাকে অনেক বেশি যত্নবান হতে হবে। আজকাল নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিগুলোতে দেখা যায় বাবা- মা দুজনেই চাকরি করেন , দুজনেই খুব ব্যস্ত জীবন কাটান , সন্তানদের সময় দিতে পারেন না। সন্তানের তখন বাইরে মন চলে যায়, কেউ আবার নিঃসঙ্গতা থেকে সঙ্গী খোঁজে। আর সেটাই তাদের অভ্যেস হয়ে যায়। এই ভাবে বাবা- মায়ের হাতের বাইরে চলে গেলে ফিরিয়ে আনা খুবই মুস্কিল। তাছাড়া মায়েরা চাকরি করলে তাদের মধ্যে একটা অপরাধ বোধ কাজ করে। তারা মনে করেন যে তারা মেয়েকে ঠকিয়ে কাজ করতে যাচ্ছেন। তারজন্য তারা যা চায় তাই দিয়ে দেন, এই ভাবে তাদের অভ্যেসটা খারাপ হয়ে যায়। নিজেদের কাজটাকেই তারা সন্মান করতে পারেন না। কিন্তু ছোট থেকেই যদি তাকে বোঝানো হয় যে, মেয়েদের কাজ করাটা কোন অন্যায় নয়, ভবিষ্যতে তাকেও এই ভাবেই চলতে হবে। তাহলে তারা ছোটবেলা থেকেই নিজেদের লক্ষ্য স্থির করে নেবে। একটা বাচ্চা যে পরিবেশে বড় হয়, তার মধ্যে সেটারই প্রভাব পড়ে। তাই সঠিকভাবে পরিচালিত হলে বাচ্চারা কখনোই বিপথগামী হবে না। “কবি ,লেখিকা ও অধ্যাপিকা কৃষ্ণা বসু বলেন, “আমাদের পৃথিবীর অধিকাংশ সমাজ এখনও পুরুষ প্রধান সমাজ। সন্তানের পরিচয় মায়ের পরিচয় নয়, পিতার পরিচয়। এবং মেয়েদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখে দেওয়া হয়। এই সামন্ততান্ত্রিক ,পিতৃতান্ত্রিক পুরুষ প্রধান সমাজে মেয়েদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখে দেওয়ার এক গভীর চক্রান্ত আছে। ‘মনু’ যায় থেকে মানব শব্দের উৎপত্তি , তিনি তাঁর ‘ সংহিতা ‘ গ্রন্থে বলছেন স্ত্রী জাতির কোন স্বাধীনতা, আত্মমর্যাদা ও আত্মসন্মান কিছু নেই । মানবসমাজের আদি ব্যক্তি মনুই যদি মেয়েদের সম্পর্কে এ ধরনের মত প্রকাশ করেন, তাহলে সমাজটা কোথায় গভীরে মেয়েদের অপমান করার জন্য তৈরি হয়ে আছে তা বুঝতে পারা যায়। আমাদের অতীত দিনের দিকে তাকালে আমরা দেখি যে সীতাকে আগুনে পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। নাম দেওয়া হয়েছিল সীতার পাতাল প্রবেশ। দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে বিবাহ করলেন গর্ভে সন্তান এলো, তারপর শকুন্তলাকে চিনতেই পারলেন না। পরে তাকে আবার ফিরিয়ে আনলেন পু্ত্রের জন্য। এর থেকেও বোঝা যাচ্ছে মেয়েদের কোন স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদা কিছুই নেই। তাকে এই পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবহার করে গৃহশ্রমের জন্য এবং অপমান করে অবদমিত করে ছোট করে রাখার জন্য। তাই মেয়েদের লড়াই খুব কঠিন ।
এই লড়াই সারা পৃথিবীব্যাপী। পৃথিবীতে কি ঘটছে ? তালিবানদের সংস্কৃতি কি বলছে ? মেয়েদের ঘরে বন্দি করে রাখো ! অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দেবে না ,এমন কি তাদের গান শোনার অধিকারও নেই। কোন সরকারি- বেসরকারি কাজে যোগ দিতে পারবে না। তাহলে এই যে মেয়েদের স্বাধীনতাকে ছোট করা ,মেয়েদের বিকাশকে বিনষ্ট করা, মেয়েদের আত্মমর্যাদাকে হেয় করা – এগুলো পৃথিবীব্যাপী এক চক্রান্ত চলছে। এমনকি এতো আধুনিক দেশ আমেরিকা ,সেখানে কিন্তু এখনও অবধি কোন মহিলা প্রেসিডেন্ট হয় নি। গোটা পৃথিবী জুড়ে নারী জাতিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখার চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান , প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ চালাচ্ছি। এবং সঠিকভাবে আলোকপাতের চেষ্টা করছি। পৃথিবীতে যত ধরনের রাজনীতি আছে তারমধ্যে আদি রাজনীতি হলো লিঙ্গ রাজনীতি। যাতে মেয়েদের সন্মানকে অবদমিত করা হয়, তাদের গৃহবন্দি রাখা হয়, অর্থনৈতিক ভাবে দাঁড়াতে দেওয়া হয় না, তাদের আত্মপরিচয়েরও পরিচিত হতে দেওয়া হয় না।
(মডেল ও অভিনেত্রী – ওশনি দাস ও বৈশালী মজুমদার)
পৃথিবীতে নারী আর পুরুষের যে পরিসংখ্যান প্রকৃতির নিয়মে পঞ্চাশ -পঞ্চাশ হওয়া উচিত ,কিন্তু দেখা যাচ্ছে মেয়েদের পরিসংখ্যান চল্লিশ – একচল্লিশে দাঁড়িয়েছে। তার কারন এখনও কন্যা ভ্রন হত্যা , শিশু কন্যা হত্যা এবং পণের জন্য বধূ হত্যা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ । ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হচ্ছেও বহু মেয়েকে। আমরা বলি ” বন্দে মাতরম্ ” আবার ” ইয়া দেবী সর্ব ভুতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা “- অথচ সেই মাতৃ জাতিকেই আমরা প্রতি মুহূর্তে হেয় করি , হেনস্থা করি।
মডেল – প্রিয়াঙ্কা মুখার্জী।
তবে অনেক সময় দেখা যায় কিছু মেয়ে নারী স্বাধীনতার নাম করে উৎশৃঙ্খল জীবনযাপনে মেতে ওঠে, সেটা তাদের মূল্যবোধের অভাব। তাই ছোটবেলা থেকেই ছেলে বা মেয়েদের পড়াশোনা শিখিয়ে যেমন শিক্ষিত করতে হবে তেমন মূল্যবোধও শেখাতে হবে। পাঠক্রমের মধ্যে সেই মূল্যবোধ আনতে হবে। এই মূল্যবোধ দ্বারা যখন মানুষ চালিত হয় তখন ভুল করে না বা অমানবিক কাজ করে না। তখন সে নিজে থেকেই অনুধাবন করতে পারে কোনটা উচিত আর কোনটা অনুচিত। শেষে একথাই বলবো এই সমাজ পরিবর্তিত হয়ে নারী যেন পূর্ণ মর্যাদায় এই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। নারী আর পুরুষ সমান মর্যাদার অধিকারী হতে পারে।”
মনোবিদ গার্গী দাসগুপ্তের মতে , ” আমি এই বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতেই বলছি , শেষ প্রায় দেড় বছরের ওপর অতিমারি চলছে , তাতে দুবার করে লকডাউন হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে একটা বড় সংখ্যক মানুষের কাজ চলে গেছে। তার মধ্যেও লক্ষ্য করা যায়, বহু শিক্ষিত ও শহুরে মহিলা যারা কাজের জগতে ছিলেন , তারা কিন্তু অনেকেই সেই জায়গাটা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। আর সেটা কিন্তু কোথাও একটা নারী – পুরুষের বৈষম্যের প্রতিফলন।
বাড়িতে থেকে কাজ করার সময় মহিলারা খুবই সমস্যার মধ্যে পড়ছেন। কারন সেখানে অফিসের কাজের পাশাপাশি তাকে বাড়ির প্রতিটি কাজও সমানে ভাবে করতে হয়। যেমন – সন্তানের প্রতিটি ব্যাপার তদারকি করা, বাড়ির বয়স্কদের দেখাশোনা করা , এছাড়া লকডাউনের সময় গৃহসহায়িকার অনুপস্থিতিতে সংসারের অন্য কাজও তাকেই একা হাতে সামলাতে হয়েছে। এই অতিরিক্ত চাপে তারা হাঁপিয়ে ওঠে । এই ভাবে লড়াই করতে করতে তাদের কোন একটা দিক ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসে। আমি যে কাজ করছি তাতে দেখতে পাচ্ছি , আধুনিক মহিলাদের এটা সবথেকে বড় নারী স্বাধীনতার ক্ষেত্রে অসুবিধার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাকে বলা হচ্ছে যে তুমি চাকরি করবে না কেন ? বাইরে যাবে না কেন ? তুমি সব করবে । আবার অন্য দিকে বাকি সব দায়- দায়িত্ব ও তার ওপরই থাকছে। এতে সে মহিলাকে অনেক চাপের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। তাই এই অতিমারি সময়ে অনেক শিক্ষিত শহুরে মহিলা তাদের কাজের জগত ও সংসার জগতের সঙ্গে ব্যালান্স করতে না পেরে কাজের ক্ষেত্র থেকেই বিদায় নিয়েছেন। আসলে আমরা মহিলারা তো স্বামীদের বলতে পারি না যে, তুমি কাজটা ছেড়ে দেও ,আমি কাজটা করি। তাই মেয়েদেরকেই ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আমাদের কাছে এরকম বহু মহিলা কাউন্সিলিং- এর জন্য আসেন। আমরা তাদের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করি।
মডেল – সুকন্যা শীল।
স্বাধীনতা মানেই উৎশৃঙ্খলতা নয় , এটা ছোট বয়স থেকেই সন্তানদের বোঝাতে হবে। স্বাধীনতা দেওয়া মানে পুরো স্বাধীনতা দিয়ে দিলাম ,বাবা-মায়ের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকলো না এরকম কিন্তু নয়। এটা একটা সুন্দর ব্যালান্স , যেটা আমাদের সবাইকে করতে হয়। স্বাধীনতাটা তখনই প্রযোজ্য যখন স্বাধীনতার মূল্য তাকে বোঝানো যাবে। তাই ছোট বেলা থেকেই অল্প অল্প করে স্বাধীনতা দিলে ছেলে-মেয়েরা স্বাধীনতার সঠিক মূল্যায়ন করতে শেখে।
আবার অন্যদিকে আমার মতে, নারী স্বাধীনতা পেলেই যে বিপথগামী হবে এই ব্যাপারটাকে এরকম ভাবে না দেখে ,পুরুষও তো স্বাধীন ! তাহলে পুরুষও যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছে ! তাই এখানে নারী-পুরুষ বলে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। স্বাধীনতা দিলেই যে কিছু মানুষ বিপথে যাবে এবং স্বাধীনতা বন্ধ করে দিলে তারা বিপথে যেতে পারবে না , এই ধারনায় আমি বিশ্বাসী নই। এটা ব্যক্তি বিশেষের ওপর নির্ভর করে । যে যেরকম মূল্যবোধ নিয়ে বড় হবে , ভবিষ্যত জীবনে তারই প্রতিফলন ঘটবে। তাই স্বাধীনতার সঙ্গে তা কোন ভাবেই সম্পর্কিত নয়।”
পরিশেষে একথাই বলবো , আগামীদিনে মেয়েরা এই পরাধীনতার গ্লানি থেকে বেরিয়ে প্রকৃত অর্থে বেঁচে থাকার স্বাধীনতা নিয়ে মহিমান্বিত হবেন। নারী তুমি এগিয়ে চলো শত বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে।
কভার ফটো মডেল ও অভিনেত্রী : ওশনি দাস ও বৈশালী মজুমদার।
খুব ভালো একটা দিকে আলোকপাত করেছেন লেখিকা। লিঙ্গ রাজনীতি…..সত্যিই সারা পৃথিবী জুড়ে দেশ কাল নির্বিশেষে এই নীতি চলে আসছে।
জৈবিক কারণ ছাড়া আর কোনো ব্যাপারে লিঙ্গ ভেদের কোনো রকম প্রয়োজন এই পৃথিবীতে নেই।
যেকোন কাজ – ছেলে বা মেয়ে – বিভেদ বোঝে না।
তাই বৈষম্যের প্রয়োজন কিসের জন্য?
মানুষের অধিকার চাই, প্রাণের অধিকার চাই।
আমি নারী , নাকি পুরুষ, নাকি মধ্যবর্তী কোন লিঙ্গের
সেটা নিয়ে সামাজের কোনো মাথা ব্যথার কারণ নেই।